ঢাকার গোপীবাগে ৫ জানুয়ারি রাতে বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় নিখোঁজ এলিনা ইয়াসমিন (৪০), আবু তালহা (২৮) ও চন্দ্রিমা চৌধুরী সৌমির (২৮) ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে শনাক্ত করা হয়েছে। তাদের সব বাড়ি রাজবাড়ীতে।
বৃহস্পতিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) তাদের মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করবে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ডিএমসি) কর্তৃপক্ষ।
আজ সকালে তাদের স্বজনরা সাংবাদিকদের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
রাজবাড়ী শহরের নুরপুর গ্রামের সাইদুর রহমান বাবুর মেয়ে ও সাজ্জাদ হোসেনের স্ত্রী এলিনা, কালুখালী উপজেলার মিরগী ইউনিয়নের বড়ইছড়া গ্রামের আব্দুল হক মন্ডলের ছেলে আবু তালহা ও খানগঞ্জের রঘুনাথপুর গ্রামের চিত্তরঞ্জন প্রামাণিকের মেয়ে চন্দ্রিমা চৌধুরী সৌমি রাজবাড়ী। সদর উপজেলার ইউনিয়ন। আবু তালহা সৈয়দপুরের বাংলাদেশ সেনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র ছিলেন। ঢাকার একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ফার্মেসি পড়তেন চন্দ্রিমা।
এলিনা ইয়াসমিনের চাচা নজরুল ইসলাম বলেন, “গত ৫ জানুয়ারি রাতে বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনে অগ্নিকাণ্ডে নিহত আমার ভাতিজির মরদেহ ডিএনএ টেস্টের মাধ্যমে ঢামেকে শনাক্ত করা হয়েছে। কর্তৃপক্ষ ফোনে আমাদের জানায়। তার লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। আজই আমাদের কাছে হস্তান্তর করা হতে পারে।মৃতদেহ পাওয়া গেলে জানাজার সময় ও স্থান পরে জানানো হবে।
তিনি আরও বলেন, ‘‘এলিনা তার বাবার কুলখানি শেষ করে ছয় মাসের শিশুসন্তান, বোন ডেইজি আক্তার রত্না, বোন জামাই ইকবাল বাহার ও তাদের দুই সন্তানসহ বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনের ‘চ’ বগিতে ঢাকায় যাচ্ছিলেন। রাজবাড়ী রেলস্টেশন থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেন ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যায়। মাঝে একবার ট্রেনের মধ্যে থেকেও তাদের সঙ্গে কথা হয়েছিল। কিন্তু রাত সাড়ে ৯টার দিকে গোপীবাগ এলাকায় ট্রেনে আগুন লাগার ঘটনা ঘটলে তারপর থেকেই নিখোঁজ ছিল এলিনা।’’
আবু তালহার বাবা আব্দুল হক বলেন, আবু তালহা গত ৫ জানুয়ারি ফরিদপুর স্টেশন থেকে ঢাকার উদ্দেশে বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনে ওঠেন। কিন্তু কমলাপুর রেলস্টেশনে ঢোকার আগে গোপীবাগে ট্রেনে আগুন লাগার পর থেকে আমরা তার কোনো হদিস পাইনি। প্রায় ১ মাস ৯ দিন পর ডিএনএ টেস্টের মাধ্যমে তার লাশ শনাক্ত করা হয়।ডিএমকে আমাকে ফোন করে আবু তালহার লাশ শনাক্ত করার কথা জানায়।কিছু আইনি জটিলতার পর কর্তৃপক্ষ আজ লাশ আমাদের কাছে হস্তান্তর করবে।আমরা মৃতদেহ নিয়ে আসব। রাজবাড়ীর কালুখালী উপজেলার মিরগী ইউনিয়নের গ্রামের বাড়িতে লাশ।সেখানে দাফন ও দাফন করা হবে।
তিনি আরও বলেন, “সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া ট্রেনের জানালা থেকে হাত আটকে থাকা ছবিটা আমার ছেলে আবু তালহার। আগুনে পুড়ে মারা গেল একটি নিরীহ ছেলে। আমার কী দোষ ছিল?”
চন্দ্রিমা চৌধুরী সৌমির মামা অতনু বলেন, “গত রাতে ঢাকা মেডিকেল আমাদের ফোন করে বলেছে যে ডিএনএ টেস্ট করে সৌমির লাশ শনাক্ত করা হয়েছে। আজ আমরা পরিবারের সদস্যরা গিয়ে ঢাকা মেডিকেল থেকে সৌমির লাশ নিয়ে আসব।