বাজেটে নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্তরা উপেক্ষিত হয়েছে বলে মন্তব্য করেন বিভিন্ন মহল। কারন বিশ্বব্যপি ছড়িয়ে পড়া রোগের কারনে মানুষের আয় উপার্জন কমেছে। তবে সে হিসেবে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যসহ বিভিন্ন জিনিসের দাম কমেনি ববং দ্বিগুন বেড়েছে। এতে করে নিম্ন ও মধ্যবিত্তদের জীবন ধারন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বে। এবার বাজেট নিয়ে যা বললেন বিএনপি সাংসদ রুমিন ফারহানা।
বিএনপির সংরক্ষিত মহিলা আসনের সাংসদ রুমিন ফারহানা ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের সমালোচনা করে বলেন, গালভরা নাম দেওয়া বাজেটটি আওয়ামী লীগের বাইরে সাধারণ মানুষের জীবন-জীবিকার কতটা সংস্থান করেছে, সেটা টিসিবির ট্রাকের পেছনে লাইনের দৈর্ঘ্য দেখলেই বোঝা যায়।
রোববার জাতীয় সংসদে ২০২১-২২ অর্থবছরের সম্পূরক বাজেটের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে রুমিন ফারহানা এ মন্তব্য করেন।
রুমিন ফারহানা বলেন, ২০২১-২২ অর্থবছরে ৬ লাখ ৩ হাজার ৬৮১ কোটি টাকার বাজেট প্রণীত হলেও বছর শেষে ১০ হাজার ১৮১ কোটি টাকা কমে দাঁড়িয়েছে ৫ লাখ ৯৩ হাজার ৫০০ কোটি টাকায়। করোনাকালে দেওয়া এই বাজেটের শিরোনাম ছিল ‘জীবন-জীবিকার প্রাধান্য ও আগামীর বাংলাদেশ।
তিনি বলেন, ২৭টি মন্ত্রণালয়ে বরাদ্দ বাড়লেও চলতি অর্থবছরের প্রথম ১১ মাসে মাত্র ৫৮ শতাংশ এডিপি বাস্তবায়িত হয়েছে। অর্থবছরের প্রথম ১১ মাসে বরাদ্দের মাত্র ৪১ শতাংশ ব্যয় করতে পেরেছে স্বাস্থ্য বিভাগ। যে মন্ত্রণালয় বিশ্বব্যপি ছড়িয়ে পড়া রোগের মতো জরুরি পরিস্থিতিতে বরাদ্দ ব্যয়ে চরমভাবে ব্যর্থ হয়েছে তাকে আওতায় আনা হয়নি।
সংরক্ষিত মহিলা আসনের বিএনপি সাংসদ বলেন, গত কয়েক মাসে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য বিশেষ করে ভোজ্য তেলের দাম আকাশচুম্বী হয়েছে। আন্তর্জাতিক বাজারে পণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় সরকারের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কিছু বড় ব্যবসায়ী ও তেল মিল মালিকদের সিন্ডিকেটের কারণে সাধারণ ক্রেতাদের অনেক বেশি মূল্য দিতে হচ্ছে। সরকারি প্রতিষ্ঠান ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর বেশ কিছুদিন আগে হিসাব দিয়ে জানিয়েছিল মাত্র ১৫ দিনে বাজার থেকে এক হাজার কোটি টাকা তুলে নিয়েছেন মিলমালিক এবং কিছু বড় তেল ব্যবসায়ী। এই টাকার ভাগ কতদূর গেল সে বিষয়ে আমি একটি প্রশ্ন রেখে গেলাম।
“তিনি আরও বলেন, খাবারের কষ্ট এমন জিনিস যা ছোট শিশু থেকে ৮০ বছর বয়সী এমনকি ক্যান্সার রোগীদেরও টিসিবি লাইনে দাঁড়াতে বাধ্য করেছে।” টিসিবির ট্রাকের পেছনে প্রথম শ্রেণির একটি ছোট মেয়ে দাঁড়িয়ে থাকলেও প্রথম আলোয় ছাপা ছবিতে দেখেছি, শিশুটির হাত ট্রাকের পণ্যের কাছে পৌঁছায়নি।
তিনি বলেন, একবারে টিসিবির পণ্য কিনতে পারলে একজনের প্রায় আড়াইশ টাকা সাশ্রয় হয়। এই ২৫০ টাকা বর্তমান বাংলাদেশের লক্ষ লক্ষ পরিবারের কাছে এতটাই অমূল্য হয়ে উঠেছে যে তা বাঁচাতে তারা ঘণ্টার পর ঘণ্টা কড়া রোদে দাঁড়িয়ে টিসিবি পণ্যের ট্রাকের পিছনে লাইন দেয়। বৃষ্টিও সেই লাইনকে ছত্রভঙ্গ করতে পারে না, লাইনে ঠায় দাঁড়িয়ে থাকেন মানুষ।
প্রসঙ্গত, বাজেটে নিম্ন আয়ের মানুষের বিষয়টি চিন্তায় করা হয়নি। সরকার দেশের ব্যবসায়ী ও চাকুরিজীবিদের সুবিধার দেওয়া জন্য বাজেট করেছে বলে মন্তব্য করেন বিএনটি সাংসদ রুমিন ফারহানা।