বাংলাদেশের রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প এবং সংশ্লিষ্ট দুর্নীতির অভিযোগে চাপে পড়েছেন যুক্তরাজ্যের লেবার পার্টির এমপি ও অর্থ ও নগর বিষয়ক মন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিক। এই ঘটনার জেরে ব্রিটেনের ক্ষমতাসীন লেবার পার্টির একটি অংশ টিউলিপকে মন্ত্রিসভা থেকে অপসারণের দাবি তুলেছে।
লেবার পার্টির অভ্যন্তরীণ আইনি মুখপাত্র ম্যাট ভিকার্স রোববার ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ডেইলি মেইলকে জানান, “টিউলিপের আর্থিক লেনদেন এবং ব্যক্তিগত সম্পৃক্ততা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। প্রধানমন্ত্রী কেয়ার স্টারমারকে এখনই নিশ্চিত করতে হবে যে টিউলিপ সমস্ত নিষেধাজ্ঞা ও দুর্নীতিবিরোধী নীতিগত দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি পেয়েছেন।”
টিউলিপের বিরুদ্ধে অভিযোগের সূত্রপাত হয় তার খালা শেখ হাসিনার সরকারের সময়। শেখ হাসিনা, যিনি টানা ১৫ বছর ক্ষমতায় ছিলেন এবং ৫ আগস্ট বাংলাদেশ ছেড়ে ভারতে পাড়ি জমান, তার শাসনামলে রূপপুর প্রকল্পে বিপুল অঙ্কের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে।
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) তদন্ত অনুযায়ী, রূপপুর প্রকল্পে ১২.৬৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের অতিরিক্ত ব্যয়ের মাধ্যমে শেখ হাসিনা, তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় এবং টিউলিপ সিদ্দিক প্রায় ৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার আত্মসাৎ করেছেন। এই অর্থ মালয়েশিয়ার অফশোর ব্যাংক অ্যাকাউন্টে পাচার করা হয়েছে বলে অভিযোগ।
আরেকটি বিতর্কিত ইস্যু হলো রুশ কোম্পানি রোসাটমের সঙ্গে টিউলিপের সম্পর্ক। ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযানকে কেন্দ্র করে ব্রিটেনের সরকার রোসাটমের বিরুদ্ধে কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। লেবার পার্টির একটি অংশ মনে করছে, টিউলিপের রোসাটমের সঙ্গে সম্পর্ক লেবার পার্টির জন্য অস্বস্তিকর।
২০১৩ সালে রাশিয়ার সঙ্গে রূপপুর চুক্তি সম্পাদনের সময় মধ্যস্থতাকারী হিসেবে টিউলিপ চার বছর কাজ করেছিলেন। বাজারদরের চেয়ে বেশি ব্যয়ে সম্পন্ন হওয়া এই চুক্তির কারণেই তার পরিবারের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ ওঠে। চুক্তির সময় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবং শেখ হাসিনা।
লেবার পার্টির দাবি, টিউলিপের সঙ্গে এই বিতর্কিত সম্পর্ক ব্রিটেনে ক্ষমতাসীন দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করছে। এ পরিস্থিতিতে তার পদত্যাগ বা অপসারণের দাবি জোরালো হচ্ছে।