ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের সাম্প্রতিক টানাপড়েনের মধ্যেই আগামী সপ্তাহে ঢাকায় আসছেন ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিসরি। ৫ আগস্টের পর এটাই হবে ভারত থেকে কোনো উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধির প্রথম বাংলাদেশ সফর। সফরকালে তিনি পররাষ্ট্র সচিব মো. জসীম উদ্দিনের সঙ্গে একান্ত বৈঠক করবেন এবং দুই দেশের প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে “ফরেন অফিস কনসালটেশন” (এফওসি) বৈঠকে অংশ নেবেন।
এছাড়া প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস এবং পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন তিনি। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমস-এর মতে, শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকে দুই দেশের সম্পর্কের টানাপড়েন চলমান। এই পরিস্থিতিতে এই সফর বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। যদিও উভয় পক্ষ এখনো আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেয়নি, ঢাকার পররাষ্ট্র উপদেষ্টা নিশ্চিত করেছেন যে বিক্রম মিসরি আসছেন। এফওসি বৈঠকটি ১০ ডিসেম্বর হওয়ার কথা থাকলেও এক দিন আগেই হতে পারে বলে জানা গেছে।
সফরের প্রেক্ষাপট:
সম্প্রতি নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের বৈঠকের ফাঁকে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন এবং ভারতীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের বৈঠকে এই সফরের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছিল। তবে সেই সময় নির্দিষ্ট তারিখ চূড়ান্ত হয়নি।
ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের টানাপড়েন নিয়ে আলোচনা এখন তুঙ্গে। শেখ হাসিনার পতনের পর অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন এবং ড. ইউনূসের নেতৃত্বে নতুন সরকারের কাজ শুরু হওয়ার প্রেক্ষাপটে উভয় দেশের মধ্যে উত্তেজনা বেড়েছে। বিশেষ করে বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতনের অভিযোগ এবং জাতীয় পতাকা অবমাননার ঘটনা নিয়ে ভারতীয় গণমাধ্যমে অতিরঞ্জিত খবর প্রচারের পরিপ্রেক্ষিতে দুই দেশের সম্পর্কে এ অস্থিরতা সৃষ্টি হয়েছে।
সাম্প্রতিক উত্তেজনা:
সম্প্রতি আগরতলায় বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশন কার্যালয়ে একটি হিন্দুত্ববাদী সংগঠনের হামলা পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত করেছে। বাংলাদেশ এই হামলাকে পূর্বপরিকল্পিত হিসেবে উল্লেখ করে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। বর্বরোচিত এই ঘটনার পর দেশে প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ শুরু হয়েছে।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন বলেছেন, “আমরা সবসময়ই ভালো সম্পর্ক চাই। তবে সেটা উভয় পক্ষ থেকে আন্তরিকতার ভিত্তিতে হতে হবে।” বিক্রম মিসরির এই সফর উত্তপ্ত পরিস্থিতি নিরসনে কতটা কার্যকর হবে, তা নিয়ে এখন সবার নজর।