বঙ্গবন্ধু সেতু পার হয়ে যাওয়ার পর ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাওয়া একটি নৈশ কোচে ডাকাতির ঘটনা ঘটে এবং গণভাবে নারীদের সাথে খারাপ কাজ করার ঘটনা ঘটেছে। জানা গেছে ১০-১২ জন ডাকাত সদস্য ঐ বাসে ওঠার পর এই ঘটনা ঘটিয়েছে। ঘটনার পর আজ বৃহস্পতিবার একজনকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয় ডিবি পুলিশ। এই ঘটনায় দেশ জুড়ে পরিবহন কর্তৃপক্ষের যেখান সেখান থেকে যাত্রী ওঠানোর বিষয়টি সমালোচনার জন্ম দেয়।
বৃহস্পতিবার (৪ আগস্ট) সকালে তাকে আটক করা হয়। গ্রেফতারকৃত ডাকা’ত সদস্যের নাম রাজা মিয়া (৩২)।
পুলিশ জানায়, গ্রেফতারকৃত রাজা মিয়া পেশায় একজন চালক। সে কালিহাতী উপজেলার প্রয়াত হারুন অর রশিদের ছেলে। রাজা দীর্ঘদিন ধরে টাঙ্গাইল থেকে চন্দ্রমুখী পর্যন্ত ঝটিকা নামক পরিবহনের চালক হিসেবে কাজ করছেন। পুলিশ আরো জানায়, রাজাই ছিলেন ডাকাতির মূল পরিকল্পনাকারী।
জানা গেছে, মঙ্গলবার (২ আগস্ট) রাতে কুষ্টিয়া থেকে ঈগল পরিবহনের একটি বাস ২৪-২৫ যাত্রী নিয়ে ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যায়। গভীর রাতে সিরাজগঞ্জে পৌঁছালে ১০-১২ জন ডাকাত যাত্রী বেশে বাসে ওঠে। বাসটি বঙ্গবন্ধু সেতু পার হওয়ার পর তা নিয়ন্ত্রণে নেয় ডাকাতরা। তারা বাসের সব যাত্রীর হাত-পা ও চোখ বেঁধে মা”রধর ও লু”টপাট করে। এ সময় বাসের ভেতরে এক নারী যাত্রীকে খারাপ কাজ করে ডাকাত দলের লোকেরা। পরে বুধবার টাঙ্গাইলের মধুপুর উপজেলার রক্তিপাড়া জামে মসজিদের পাশে বাসটি বালুর ডিবির মধ্যে উল্টিয়ে রেখে পালিয়ে যায় ডা’কাতদল।
মধুপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মাজহারুল আমিন (বিপিএম) যাত্রীদের বরাত দিয়ে জানান, সিরাজগঞ্জের কাছে দিবারাত্রি হোটেলে রাতের খাবারের জন্য বাসটি থামে। দেড়টার দিকে আবার যাত্রা শুরু। পথে ১০-১্২ জন তরুণ যাত্রী কাঁধে ব্যাগ নিয়ে বাসে ওঠে। বাসটি বঙ্গবন্ধু সেতু পার হওয়ার পর গাড়িতে থাকা যুবক দল একে একে সব যাত্রীকে অ”স্ত্রের মুখে বেঁধে ফেলে। কিছুক্ষণের মধ্যেই সব যাত্রীর কাছ থেকে মোবাইল ফোন, নগদ টাকা, স্বর্ণালঙ্কার লু”ট করে নিয়ে যায়। এরপর তারা এক নারী যাত্রীর সাথে খারাপ কাজ করে। তারা বিভিন্ন স্থানে ঘুরিয়ে তিন ঘণ্টা বাস নিয়ন্ত্রণে রাখে। পরে রুট পরিবর্তন করে টাঙ্গাইল-ময়মনসিংহ সড়কের মধুপুর উপজেলার রক্তপাড়া জামে মসজিদ সংলগ্ন বালির পাহাড়ে বাসটি উল্টে ডা”কাতেরা পা”লিয়ে যায়।
ওসি আরও জানান, এ ঘটনায় বাসের এক যাত্রী বাদী হয়ে অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসা”মি করে মামলা করেছেন। খারাপ কাজের শিকার হওয়া ঐ নারীকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য তাকে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হবে। বিষয়টিকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, এই ধরনের ঘটনার জন্য বাসের ড্রাইভার এবং কন্ডাকটরকে দায়ী করেছেন সবাই। এদিকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা বাকি ডা’কাত দলের সদস্যদের গ্রেফতারের জন্য মাঠে নেমে পড়েছেন। তারা আশা করছেন খুব শীঘ্রই বাকি সদস্যদের গ্রেফতার করে করতে পারবেন।