আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ফরিদপুরের মানুষকে টাকা দিয়ে কেউ কিনতে পারবে না, কখনোই পারবে না।
মঙ্গলবার বিকেলে ফরিদপুরের সরকারি রাজেন্দ্র কলেজ মাঠে জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত ফরিদপুর-৩ আসনের দলীয় প্রার্থী শামীম হকের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, “আমরা ব্যবসা-বাণিজ্যের সুযোগ-সুবিধা দিয়েছি। অনেককে নর্দমা থেকে বের করে আনা হয়েছে। আমি তাদের টাকা কামানোর, ব্যবসা করার, মিডিয়া চালানোর সুযোগ দিয়েছি। এখন তারা টাকা ছড়ায়। ভাবি টাকা দিয়ে সব কেনা যায়।খুব ভালো কথা, যে টাকা বানানো সব মানুষের কাছে যাবে।কিন্তু একটা কথা মনে রাখতে চাই টাকা দিয়ে মানুষ কেনা যায় না।ফরিদপুরের মানুষকে টাকা দিয়ে কেউ কিনতে পারে না।এই মাটি। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের মাটি, এই মাটি খাঁটি।একটি নৌকা।নৌকা মার্কার দিবে সমাধান।সবাইকে মনে রাখতে হবে।
আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘নৌকা ব্র্যান্ডের ভোট পেলেই সরকারে আসতে পারব।’
গণভবনে তিনি কৃষিকাজ শুরু করেছেন জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আজ সারা বিশ্বে যখন খাদ্য সংকট, অর্থনৈতিক সংকট, তখন আমি তোমাকে ডাকব, সবজি, ফল, ফসল, যা পারো, জলাভূমি থাকলেই উৎপাদন করব। বা পুকুরে মাছ উৎপাদন করে।” সে যা পারে তা চাষ করে। আপনিও উপকৃত হবেন, দেশেরও উপকার হবে। আমি আমার কাজ শুরু করলাম। গণভবনে চাষ শুরু করেছি। আমরা নিজেদের চাহিদা মেটাব, প্রয়োজনে যে দেশে অভাব আছে সেখানে পাঠাব।’
আওয়ামী লীগ সভানেত্রী বলেন, আমরা নিজেদের টাকায় পদ্মা সেতু করেছি। আজ মাত্র ২ ঘণ্টায় ফরিদপুরে আসতে পেরেছি। শুধু ফরিদপুর নয়, দক্ষিণাঞ্চলের সব জায়গায় আমরা রাস্তাঘাট করেছি। যোগাযোগ ব্যবস্থা।আমি আরো উন্নয়ন করছি।আরো কাজ বাকি আছে।তাই আমাদের নিজেদেরকে উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে হবে।এই দেশকে গড়তে কাদের প্রয়োজন?উন্নয়নশীল বাংলাদেশ হিসেবে ক্ষমতায় কারা থাকবে?একমাত্র নৌকার ব্র্যান্ড।আমি সক্ষম হবো। নৌকা ব্র্যান্ডকে ভোট দিলেই সরকারে আসবো।বাংলাদেশকে উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে পারবো।বাংলাদেশ কখনো পিছিয়ে যাবে না।
দেশের উন্নয়ন প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, এই নৌকা নূহ (আ.)-এর নৌকা, যে নৌকা মানবজাতিকে রক্ষা করেছিল। নৌকা দেশের স্বাধীনতা এনেছে। তাই নৌকা ব্র্যান্ড ক্ষমতায় এলে দেশের উন্নয়ন হয়। বাংলাদেশের মানুষ গরীব হবে না, কেউ ভিক্ষা করবে না। ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ হবে স্মার্ট বাংলাদেশ। আমরা নিজেদেরকে দক্ষ জনশক্তি হিসেবে গড়ে তুলব।
ফরিদপুর, মাগুরা ও রাজবাড়ী আসনের চারটি আসনে নৌকার প্রার্থীদের পরিচয় করিয়ে দেন শেখ হাসিনা। ছবি: ফোকাস বাংলা
ফরিদপুর, মাগুরা ও রাজবাড়ী আসনের চারটি আসনে নৌকার প্রার্থীদের পরিচয় করিয়ে দেন শেখ হাসিনা। ছবি: ফোকাস বাংলা
আওয়ামী লীগ সরকার সাক্ষরতার হার বাড়িয়েছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, “খালেদা জিয়া ২০০১ সালে এসে সাক্ষরতার হার কমিয়ে দিয়েছিলেন। পরে আবার উদ্যোগ নিই। আজ সাক্ষরতার হার ৭৬ দশমিক ৮ শতাংশ। শিশুরা আজ স্কুলে যাচ্ছে। মেয়েরা শিক্ষক হিসেবে সর্বোচ্চ চাকরি পাচ্ছে।আমরা সব বিষয়ে সুবিধা করেছি।কারণ, শিক্ষিত জাতি ছাড়া দারিদ্রমুক্ত বাংলাদেশ গড়ে উঠতে পারে না।জাতির পিতা বলেছিলেন,শিক্ষায় বিনিয়োগ ব্যয়বহুল নয়।সব বিবেচনায় আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। তাই আমাদের লক্ষ্য দেশের উন্নয়ন।আমরা উন্নয়নের জন্য কাজ করছি।
শেখ হাসিনা বলেন, দ্রব্যমূল্য যাতে না বাড়ে সেজন্য আমরা ভিজিডি, ভিজিএফ, ভিডব্লিউবি, টিআর, কাবিখার মতো জনবান্ধব কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছি। কারণ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের বাংলায় কোনো মানুষ ক্ষুধার্ত থাকবে না, থাকবে না। কষ্টে, গৃহহীন হব না, ভূমিহীন হব না, ইনশাআল্লাহ, যারা ভূমিহীন তাদের জন্য আমরা ঘর করব, প্রতিটি মানুষ একটি বাড়ি পাবে এবং ভালভাবে বসবাস করবে তা নিশ্চিত করব। আমরা দুর্নীতি করতে আসিনি, আমরা এসেছি। মানুষের ভাগ্য বদলাতে।আমি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের কন্যা।আমি কখনো মাথা নত করি না।
বক্তব্য শেষে ফরিদপুর, মাগুরা ও রাজবাড়ী আসনের চারটি আসনের প্রার্থীদের পরিচয় করিয়ে দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এসময় বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল, দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, জাতীয় শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক কে এম আজম খসরু, প্রেসিডিয়াম সদস্য আবদুর রহমান, ফরিদপুর-১ আসনের প্রার্থী শামীম হক, মাগুরা-১ আসনের প্রার্থী সাকিব আল হাসান প্রমুখ।