Tuesday , September 17 2024
Breaking News
Home / Countrywide / টাকা দিয়ে আ.লীগের কমিটিতে পদ পাচ্ছেন বিএনপি নেতারা

টাকা দিয়ে আ.লীগের কমিটিতে পদ পাচ্ছেন বিএনপি নেতারা

রাজধানীর আশুলিয়ার ইয়ারপুর ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড কমিটি গঠন করা হচ্ছে কিন্তু ঐ কমিটি আওয়ামী লীগের হলেও তাতে পদ দেওয়া হচ্ছে বিএনপির সক্রিয় নেতাদেরকে। এমনই অভিযোগ উঠেছে আওয়ামী লীগের বেশ কয়েকজন নেতার বিরুদ্ধে যারা কোটি কোটি টাকানিচ্ছেন ঐ সকল বিএনপি নেতাদের কাছ থেকে এবং দিচ্ছেন পদ। নেতাদের এই ধরনের বাণিজ্যের মাধ্যমে কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার বিষয়টি সামনে এসেছে। গঠনতন্ত্র না মেনে নতুন গঠন হতে যাওয়া কমিটিতে বিএনপির সক্রিয় নেতাদের নিয়োগ দেওয়ার বিষয়ে প্রতিবাদ করে বি’ক্ষু’/ব্ধ নেতাকর্মীরা।

এ ঘটনায় সাভারের যারা স্থানীয় আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতা রয়েছেন তারা বলছেন, এতে দলের ভাবমূর্তি এবং শৃঙ্খলা বিন’ষ্ট হওয়ার সাথে সাথে তৃণমূল পর্যায়ে আওয়ামী লীগের যে অবস্থান এবং আস্থা সেটাতে অপূরণীয় ক্ষতি সাধিত হবে।

স্থানীয় নেতাদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, গত ১৯ অক্টোবর আশুলিয়ার ইয়ারপুর ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডে সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সম্মেলনে ইয়ারপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি অধ্যক্ষ আব্দুল কাদির দেওয়ানকে বাদ দিয়েই আশুলিয়া থানা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক ফারুক হাসান তুহিন ও ইয়ারপুর ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মজিবুর রহমান শাহেদ নতুন ওয়ার্ড কমিটি গঠন সম্পন্ন করেছেন।

স্থানীয় নেতাদের অভিযোগ, নিয়ম অনুযায়ী প্রতিটি ওয়ার্ডে সম্মেলনের মাধ্যমে কমিটি গঠন করার কথা। কিন্তু দলের গঠনতন্ত্র অমান্য করে একটি ওয়ার্ডে সম্মেলনের আয়োজন করেই ৮টি ওয়ার্ডের কমিটি গঠন করা হয়েছে। ওই সম্মেলন থেকে ৮টি ওয়ার্ড কমিটির সভাপতি ও সম্পাদকের নাম ঘোষণা করা হয়। যাদের অনেকেই এক সময় বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে সক্রিয় ছিল এবং এদের অধিকাংশের নামে গাড়ি পো’/ড়ানো মা’মলাসহ বিভিন্ন মা’মলা চলমান রয়েছে। মূলত পদ বাণিজ্য এবং নানা সুবিধা গ্রহণের উদ্দেশ্যে এসব বিতর্কিত লোকদের কমিটিতে নেওয়া হয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, নবগঠিত ইয়ারপুর ইউনিয়নের ওয়ার্ড কমিটির ২নং ওয়ার্ডের সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছে সোহরাব সরকারকে। তিনি এক সময় শ্রমিক দলের আশুলিয়া থা’/না কমিটির যুব বিষয়ক সম্পাদক ছিলেন। ৩নং ওয়ার্ডে সভাপতি করা হয়েছে ইউনুছ পালোয়ান নামের একজনকে। তিনি এই ওয়ার্ডে এক সময় বিএনপির সহ সভাপতি এন্তাজ পালোয়ানের ছেলে। আর ৯নং ওয়ার্ডে সভাপতি করা হয়েছে ওয়ার্ড বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক গিয়াস উদ্দিন মোল্লাকে। এছাড়া অন্যান্য পদেও স্থানীয় বিএনপির সক্রিয় সদস্যদের স্থান দেওয়া হয়েছে।

ইয়ারপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি অধ্যক্ষ আব্দুল কাদির দেওয়ান অভিযোগ করে বলেন, আশুলিয়া থা’/না আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক ফারুক হাসান তুহিন ও ইয়ারপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মজিরব রহমান শাহেদের যৌথ সিদ্ধান্তে এসব কমিটি গঠন করেন। তৃণমূলের নেতাকর্মীদের মতামত উপেক্ষা করে এ ওয়ার্ড কমিটি গঠন করা হয়েছে। আমাকে বাদ দিয়েই কমিটি গঠনের সব কার্যক্রম করা হয়েছে।

দলের ত্যাগী নেতাদের বাদ দিয়ে বিতর্কিত ব্যক্তি ও বিএনপির লোকদের কমিটিতে নেয়ার প্রসঙ্গে আব্দুল কাদির দেওয়ান বলেন, সার্চ কমিটির বিভিন্ন সদস্যদের মাধ্যমে আশুলিয়া আওয়ামী লীগের আহবায়ক ফারুক হাসান তুহিন পদ বাণিজ্য করেন। অর্থের লোভে এমন কমিটি গঠন করায় স্থানীয় আওয়ামী লীগকে সাংগঠনিকভাবে দুর্বল করার স্পষ্ট ষ’ড়য’ন্ত্র।

ইয়ারপুর ইউনিয়নের স্থানীয় ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের নেতা সাদেকুর রহমান, সাইফুল ও হাসিবসহ একাধিক কর্মীরা অভিযোগ করে বলেন, দলে অনেক যোগ্য ব্যক্তি থাকার পরও তাদের মূল্যায়ন করা হয়নি। মূলত মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে ফারুক হাসান তুহিন এ কমিটিতে বিএনপির নেতাকর্মীদের স্থান দিয়েছেন। এ কমিটি বিলুপ্ত করা না হলে ভবিষ্যতে দলের শৃঙ্খলা নষ্ট হবে।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে ইয়ারপুর ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মজিবর রহমান শাহেদ বলেন, ওয়ার্ড কমিটি গঠনের সময় আশুলিয়া থানা কমিটির সিনিয়র নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। তাদের নির্দেশেই কমিটি গঠন করা হয়েছে।

তিনি পদ নিয়ে বাণিজ্য করার অভিযোগের বিষয়টি স্বীকার করেননি এবং এ বিষয়ে বলেন, ভুল করে যদি কোনও বিএনপি নেতার নাম কমিটিতে এসে থাকে তাহলে যাচাই-বাছাই করার মাধ্যমে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ফারুক হাসান তুহিন যিনি আশুলিয়া থানা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক হিসেবে রয়েছেন তিনি দেশের অন্যতম একটি সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, যেদিন কমিটি গঠন করা হয় সেদিন আমি ও সদস্য সচিব সাইফুল ইসলাম দুজনের কেউই উপস্থিত ছিলাম না। তাই আমার বিরুদ্ধে যে পদ বানিজ্যের অভিযোগ আনা হয়েছে সেটা মিথ্যা ও ভিত্তিহীন।

সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদক যে কোনো কমিটির গুরুত্বপূর্ণ পদ সেখানে যদি টাকা নিয়ে বিএনপির কোনো নেতাকে দায়িত্ব দেওয়া হয় তাহলে সেটা যাচাই করা হবে এবং যদি সত্যতা পাওয়া যায় তাহলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে নাম প্রকাশ করতে মানা করে আওয়ামী লীগের একজন নেতা সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, কমিটি যেদিন গঠিত হয় সেদিন আহ্বায়ক উপস্থিত না ছিল না কিন্তু পরে আনন্দ মিছিলে যোগ দেওয়া ও গলায় মালা পরার ছবি দেখা গেছে।
খবর যুগান্তরের।

About

Check Also

হাসিনার ভাগ্য নির্ধারণের আর পাঁচ দিন, বিপাকে ভারত

আগামী ২০ সেপ্টেম্বর শেষ হতে চলেছে বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভিসার মেয়াদ। বর্তমানে, কূটনৈতিক …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *