শান্তিতে নোবেল পুরস্কার নোবেল কমিটি দেয় না, আমেরিকা দেয়। ইউনূস আমেরিকার সুপারিশে টাকা দিয়ে এই পুরস্কার পেয়েছেন বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ। এই পদক পাওয়ার পর তিনি কি আইনের ঊর্ধ্বে চলে গেছেন? – সেও প্রশ্ন করল।
শনিবার (৯ সেপ্টেম্বর) দুপুরে প্রেসক্লাবের সামনে জাতীয় শ্রমিক লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির উদ্যোগে আয়োজিত সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
হানিফ আরও বলেন, খোদ আমেরিকায় নোবেল পেয়েও অনেককে আইনের মুখোমুখি হতে হয়েছে। বেনারসের একজন নোবেল বিজয়ীকেও ১০ বছরের জেল হয়েছে। এ ছাড়া বিশ্বের বিভিন্ন দেশের নোবেল বিজয়ীদের বিরুদ্ধেও তাদের নেতিবাচক কর্মকাণ্ডের জন্য বিচার হয়েছে। তখন এমন বক্তব্য কেউ দেয়নি। এখন কেন দিচ্ছে? যারা জ্ঞান ও গবেষণায় নোবেল পেয়েছেন তাদের কর্মের বিচার করলে, টাকা দিয়ে নোবেল পাওয়ার পর ডঃ ইউনূস কেমন হয়েছিলেন, তা বিচার করা যাবে না। কে দিয়েছে এই বিধান?
তিনি বলেন, ড. ইউনূসকে বাদ দিয়ে সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের চেষ্টা করছেন, এটা তাদের জাতি ভালো করেই জানে। এরাই বিএনপি-জামায়াতসহ একাত্তরের পরাজিত শক্তি এবং এদেশের বিরোধিতাকারী পশ্চিমা শক্তি। তারাই শেখ হাসিনার সরকারকে পতন ঘটাতে চায় এবং এদেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রাকে বাধাগ্রস্ত করতে চায়। তবে আমি স্পষ্ট করে বলতে চাই শেখ হাসিনা সরকার এদেশের জনগণের সরকার। এখনো দেশের ৭০% জনসমর্থন শেখ হাসিনার পক্ষে। যতদিন শেখ হাসিনার প্রতি এদেশের মানুষের আস্থা, আস্থা ও সমর্থন থাকবে, ততদিন এ সরকারকে কেউ হটাতে পারবে না। কোনো ষড়যন্ত্র করে কারো বিচার বন্ধ করা যাবে না। অপরাধ যেই করুক তাকে শাস্তি পেতে হবে। আইন চলবে তার নিজস্ব গতিতে। তাই সাফাই গেয়ে ইউনূসের কোনো লাভ নেই ড.
দেশের জন্য ড. ইউনূসের কোনো অবদান নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, এ দেশের সবচেয়ে সুদখোর ব্যবসায়ী ড. ইউনুস। এই দেশের জন্য, দেশের মানুষের জন্য তার কী অবদান? কোনো সংকটে তিনি সাধারণ মানুষের পাশে ছিলেন না। এদেশের স্মৃতিসৌধ, শহীদ মিনারসহ কোনো জাতীয় অনুষ্ঠানে তিনি যান না। মনে মনে সে পাকিস্তানি ভূত। তার পিতাও একজন সুদখোর ছিলেন। আর সুদগ্রহীতার ছেলে সুদখোর হবে, এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু আজ তাকে জারি করে দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের চেষ্টা চলছে।
তিনি আরও বলেন, আজকে আমি পত্রিকা খুললে দেখতে পাই, দেশের কয়েকজন বিশিষ্ট ব্যক্তি বিবৃতিতে বলছেন, ডাঃ ইউনূস এত জনপ্রিয় অথচ দেশে তাকে অসম্মান করা হচ্ছে।
প্রশ্ন করে হানিফ বলেন, যারা ইউনূসের জন্য গান গাইছে তারা কেন এদেশের মানুষ বুঝতে পারছে না। ইউনূসের বিরুদ্ধে অবস্থান নিচ্ছেন? তিনি শান্তিতে পুরস্কার গ্রহণ করেন। তিনি কি বাংলাদেশে শান্তি প্রতিষ্ঠা করেছেন? তিনি ক্ষুদ্রঋণের সুদের ব্যবসা করেন। সেখান থেকে কোন শান্তি প্রতিষ্ঠা করেছেন? বরং অন্তত ১০ হাজার মানুষ বাড়িঘর ও জমি হারিয়ে গ্রামীণ ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে রিকশা চালাতে ঢাকা শহরে এসেছে। ডাঃ ইউনূস ঋণ দেওয়ার নামে গ্রামের মানুষকে শোষণ করেন। কিস্তি দিতে গিয়ে মানুষ অসহায় হয়ে পড়েছে। কিস্তি দিতে না পারলে লোকজনের বাড়ি থেকে খাট, চাল ও গরু নিয়ে যায়। গ্রামীণ ব্যাংকের ঋণ পরিশোধ করতে না পেরে লজ্জা, দুঃখ ও কষ্টে আত্মহত্যা করতে বাধ্য হয়েছেন ৩৬ জন।
দেশের টাকা লুটপাট করা ড. ইউনূসকে পাচার করা হয়েছে উল্লেখ করে হানিফ বলেন, তিনি আমেরিকায় গ্রামীণ ব্যাংকের আদলে ক্ষুদ্রঋণ চালু করেছেন। প্রায় 2 বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ। আমেরিকান সরকার বলছে সে বিনিয়োগ করে মানুষকে সাহায্য করছে। তিনি কার টাকা নিয়েছেন? তিনি গ্রামীণ ব্যাংকের এমডি হিসেবে কর্মরত। তিনি কত টাকা বেতন পান? তিনি 22 হাজার কোটি টাকা কোথায় পেলেন? এই টাকার উৎস কী? কিভাবে বাংলাদেশ থেকে টাকা নিলেন তিনি?
তিনি বলেন, বৈধ উপায়ে ২ বিলিয়ন ডলার নেওয়ার সুযোগ নেই, তাহলে তারা নিশ্চয়ই অবৈধ অর্থ পাচারের মাধ্যমে টাকা নিয়েছে। আমি মনে করি এসব বিষয়ের তদন্ত হওয়া উচিত এবং তার বিরুদ্ধে অর্থ পাচারের অভিযোগ আনা উচিত। পাচার করা টাকা ফেরত আনতে হবে। দাতব্য আমাদের দেশের টাকা দিয়ে আপনাকে সেখানে নিয়ে যাবে এবং আপনি তার জন্য গান করবেন। তুমি গাইতে পার. তোমাকে টাকা দিচ্ছি। আপনি তার পক্ষে কথা বলবেন এটাই স্বাভাবিক।
বাংলাদেশ জাতীয় শ্রমিক লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক মেহেদী হাসান মেহেদীর পরিচালনায় মানববন্ধনে বাংলাদেশ জাতীয় শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক কে এম আজম খসরু, ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ শ্রমিক লীগের নেতৃবৃন্দসহ বিভিন্ন স্তরের নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।