কাতারে আয়োজিত বিশ্বকাপ ফুটবলে অনেক নাটকীয়তা ঘটেছিল, যেটার হিসাব অনেক বিশ্লেষকেরাও মেলাতে পারেননি। দোহার লুসাইল স্টেডিয়াম হয়ে গেল অনেক ঘটনা এবং অপ্রত্যাশিত ঘটনার সাক্ষি। আলবিসেলেস্তে লুসেলে তাদের ৩৬ বছরের শিরোপা খরার সমাপ্তি ঘটিয়েছে বেশ নাটকীয়তার মাধ্যমে, যে দলটি সৌদি আরবের কাছে প্রথম ম্যাচেই হেরে গিয়েছিল অবিশ্বাস্যভাবে। তবে পাওলো দিবালা শোনালেন ভিন্ন সুর। মাঠে নামার সময়ই তিনি জানতেন যে তাকে টাইব্রেকারে শুটআউটে যেতে হবে। ঠিক তখনই তিনি এমিলিয়ানো মার্টিনেজের কথা শুনে গোল করেন।
আর্জেন্টাইন গোলবারের নিচে এমিলিয়ানো মার্টিনেজ একটি বিশ্বস্ত নাম। ওপেন প্লে’র সাথে টাইব্রেকার- দুই জায়গাতেই দলের আশার নাম এমিলিয়ানো। তবে পরের ক্ষেত্রে গোলরক্ষকের পারফরম্যান্স অবিশ্বাস্য। আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপ জয়ের অন্যতম নায়ক রুদ্ধশ্বাস ফাইনালেও স্পট কিকের সময় ছড়ি ঘুরিয়েছেন। গোল্ডেন গ্লাভস জয়ী এই গোলরক্ষক তার সতীর্থ পাওলো দিবালাকে টাইব্রেকারের সময় কৌশল শিখিয়ে দিয়েছিলেন।
সম্প্রতি এক বার্তায় পাওলো দিবালা বলেন, আমি যখন মাঠে নামলাম, তখন জানতাম টাইব্রেকারে পেনাল্টি নিতে হবে। আমি ঠিক করেছিলাম যে কোনো এক পাশে মারব। কিন্তু অ্যামি মার্টিনেজ আমাকে বলেছিলেন যে লরিস (ফ্রান্স গোলরক্ষক) এক দিক বা অন্য দিকে ঝাপ দেয়, তাই যেন মাঝে মারি। ভাগ্যিস, ওর কথা শুনেছিলাম।
এর আগে ৩-৩ গোলে ড্র হওয়ায় ম্যাচটি টাইব্রেকারে যায়। এমবাপ্পে প্রথম শটে দলকে এগিয়ে নিয়ে গেলেও, কোয়েমান এবং জুমেনি পরের দুটি শটে দলকে হতাশ করেন। গোল্ডেন গ্লাভস বিজয়ী এমিলিয়ানো মার্টিনেজ দারুণ শুট ঠেকিয়ে দলের জয় নিশ্চিত করেন।
আর্জেন্টিনার হয়ে মেসি, দিবালা, পেরেদেস এবং মন্টিয়েল ৪-২ গোল করে বিশ্বকাপ জেতান। ফুটবল জাদুকর, এলিয়েন ফুটবল যাই বলুন না কেন, বিশ্বকাপ শোভা পেলো শ্রেষ্ঠ ফুটবলারের হাতে। মেসির ক্যারিয়ার সম্পূর্ণ হলো।
অনেক অঘটন পেরিয়ে আর্জেন্টিনা শেষ পর্যন্ত বিশ্বকাপ ফুটবলে চ্যাম্পিয়ন ট্রফি ঘরে তুলে নিল। সৌদি আরবের সাথে প্রথম ম্যাচে হেরে গিয়ে অনেকটা হতাশ হয়ে পড়েছিল দলটি এবং দলের সমর্থকেরা। তবে মেসি বারবার আশার বার্তা জানিয়েছিল তাদের ভক্তদের জন্য এবং নিরাশ না হওয়ার জন্যও বলেছিলেন। শেষ পর্যন্ত তিনি কথা রাখলেন।