দক্ষিণ কোরিয়ার ব্যান্ড বিটিএসের টানে ঘর ছাড়া রাজধানীর মেরাদিয়া এলাকার ষষ্ঠ শ্রেণির তিন কিশোরীকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) রাত পৌনে ১০টায় তাদেরকে টঙ্গী পশ্চিম থানা এলাকা থেকে উদ্ধার করে পুলিশ।
মেয়েরা হলো- ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী রিজওয়ানা রিজু, জান্নাতুল আক্তার বর্ষা ও রুবিনা আক্তার মিম। গত ২৯ জানুয়ারি বিকেলে পালিয়ে যাওয়ার পর ওই তিন তরুণীর পরিবার খিলগাঁও থানায় একটি সাধারণ অভিযোগ দায়ের করে। এক মেয়ে চিঠি লিখেছে। যেখানে তিনি বলেছেন যে তিনি তার পিতামাতার অবহেলা সত্ত্বেও বিটিএসের সদস্য জাংকুককে বিয়ে করতে বদ্ধপরিকর।
পুলিশ জানায়, বিটিএসের স্টাইলে নিজেদের তৈরি করতে মেয়েরা বাড়ি ছেড়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছিল। বাড়ি থেকে পালিয়ে যাওয়ার তিন দিন আগে তারা গার্মেন্টসে কাজ করে টাকা বাঁচানোর সিদ্ধান্ত নেয় এবং সেই টাকা দিয়ে বিদেশে চলে যায়।
জানা গেছে, তিন কিশোরই বাবা-মায়ের একমাত্র সন্তান। তারা রাজধানীর মেরাদিয়ায় থাকতেন। সাধারণ ডায়েরি তদন্তের পর পুলিশ সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে বিভিন্ন থানায় এই নিখোঁজ তথ্য প্রচার করে।
পুলিশ আরও জানায়, পালিয়ে যাওয়ার পর তারা গাজীপুরের টঙ্গীতে একটি বাসায় ভাড়া ছিল। বৃহস্পতিবার বিকেলে গাজীপুরের টঙ্গীতে একটি বাড়ির মালিক মেয়েদের খোঁজ করেন। ওই বাড়ির মালিক জানান, টিভিতে তাদের নিখোঁজ হওয়ার খবর দেখে তিনি পুলিশকে খবর দেন। পরে পুলিশ গিয়ে তাদের উদ্ধার করলে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যায়।
ডিএমপির মতিঝিল বিভাগের ডিসি হায়াতুল ইসলাম খান জানান, তারা টেলিভিশন কনসার্টের মাধ্যমে বিটিএসের গান দেখেছেন। তখন থেকেই তারা এই ব্যান্ডের প্রতি আকৃষ্ট। একপর্যায়ে তিন মেয়ে ভাবতে থাকে তারা ব্যান্ডের সাথে যোগাযোগ করবে। তারা খুব সহজ সরল চিন্তাভাবনা নিয়ে বাড়ি থেকে বের হয়।
পুলিশ জানায়, তিন তরুণী টঙ্গীর আউচপাড়ার মেরাদিয়া থেকে ভাড়া নিয়ে বসবাস শুরু করে। প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কিনুন। তারা নিজেদের বিটিএসের মতো করে তুলতে জিমনেসিয়ামে যোগ দেয়। এছাড়া গার্মেন্টসে কাজ করে কোরিয়া যাওয়ার প্রয়োজনীয় অর্থ সঞ্চয় করার কথা ভাবছিলেন তারা। এ ছাড়া তাদের কাছ থেকে বিটিএসের মতো বিভিন্ন সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়েছে।
ডিসি হায়াতুল ইসলাম খান জানান, তারা ফ্যান, চুলা, খাট, হাঁড়ি-পাতিল থেকে শুরু করে জীবনযাপনের জন্য প্রয়োজনীয় সবকিছু কিনেছেন। একই সঙ্গে গার্মেন্টসে চাকরিরও চেষ্টা করেন তারা।
তিনি আরও বলেন, এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কোনো অপরাধী চক্রের সংযোগ পাওয়া যায়নি। তবে এ ঘটনার সঙ্গে কারা জড়িত, অন্য কেউ জড়িত আছে কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এছাড়া এসব মেয়ের সঙ্গে অন্য কারো যোগাযোগ আছে কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।