বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া দীর্ঘ দিন ধরে নানা ধরনের শারীরিক জটিলতায় ভুগছেন। এবং রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তবে সম্প্রতি লিভারের রক্তক্ষরণ নিয়ে বেশি সংকটে ভুগছেন। বর্তমান সময়ে এই রক্তক্ষরন বন্ধ হয়েছে। তবে তিনি স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে ভুগছেন। এই বিষয়ে তার চিকিৎসকরা জানালেন বেশ কিছু।
রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার লিভারের রক্তক্ষরণ বন্ধ হলেও তিনি ঝুঁকিমুক্ত নন বলে জানিয়েছেন তার চিকিৎসকরা। সোমবার (১০ জানুয়ারি) খালেদা জিয়ার চিকিৎসক দলের সদস্য ও তার ঘনিষ্ঠদের সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য জানা গেছে। সূত্র জানায়, খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার তেমন উন্নতি হয়নি। সাময়িকভাবে লিভারে রক্তক্ষরণ বন্ধ রয়েছে। তবে এখনো ঝুঁকিতে আছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তার একজন চিকিৎসক গণমাধ্যমকে জানান, রক্তক্ষরণ জনিত গুরুতর সমস্যাসহ গত ১৩ নভেম্বর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিলো খালেদা জিয়াকে। হাসপাতালে নেওয়ার পর তার লিভার সিরোসিস শনাক্ত হয়। এরপর তার রক্তক্ষরণ শুরু হয়। ওই রক্তক্ষরণ কোনোক্রমেই পুরোপুরি বন্ধ করা যাচ্ছিলো না। বাইরে থেকে রক্ত ও অন্যান্য খনিজ দিয়ে তার চিকিৎসা চলছিলো। পরে চিকিৎসকদের সিদ্ধান্তে বিদেশ থেকে ক্যাপসুল এনে তার ক্যাপসুল এন্ডোস্কপি করা হয়। এতে রক্তক্ষরণের উৎস হিসেবে তার ক্ষুদ্রান্ত্রের নিচে একটি ক্ষত শনাক্ত করা সম্ভব হয়। তিনি জানান, চিকিৎসকদের চেষ্টায় দীর্ঘ সময় ধরে এন্ডোস্কপির মাধ্যমে ব্যান্ড লাইগেশন করে সে ক্ষতটি বন্ধ করা হয়। এতে করে আপাতত রক্তক্ষরণ বন্ধ রয়েছে। তবে এতেই তিনি ঝুঁকিমুক্ত হননি।
রোববার (৯ জানুয়ারি) রাতে খালেদা জিয়াকে সিসিইউ (ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিট) থেকে কেবিনে স্থানান্তর করা হয়েছে। ওইদিন রাত সাড়ে ৮টায় বিএনপি চেয়ারপারসনকে তার মেডিক্যাল বোর্ডের সুপারিশে কেবিনে নিয়ে আসা হয়। এভার কেয়ার হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে ১০ সদস্যের একটি মেডিক্যাল বোর্ড সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার এই দুরারোগ্য ব্যাধির চিকিৎসা কাজে নিয়োজিত আছেন। মেডিক্যাল বোর্ড ইতোমধ্যে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশ পাঠাতে সুপারিশ করেছেন। সে অনুযায়ী পরিবারের পক্ষ থেকে খালেদা জিয়ার ছোট ভাই শামীম এস্কান্দার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাছে পঞ্চম দফা আবেদন করেন। কিন্তু সরকার সেই আবেদন নাকচ করে দিয়েছে। ফলে আপাতত তাকে বিদেশে নেওয়ার সুযোগ নেই।
গত ১৩ নভেম্বর এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তির পরদিনই লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত খালেদা জিয়ার অবস্থার অবণতি হলে দ্রুতই তাকে সিসিইউতে নিয়ে যাওয়া হয়। প্রায় ৫৭দিন পর তাকে আবার কেবিনে নিয়ে আসা হয়। এর আগে গত বছর এপ্রিল মাসে ক/রো/না/য় আ/ক্রা/ন্ত হন খালেদা জিয়া। সে সময় পর পর দুদফা এভার কেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসা নেন তিনি। করোনা থেকে সুস্থ হওয়ার পর জুলাই ও আগস্ট মাসে দুই ডো/জ ক/রো/না/র টি/কা নেন সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী।
সম্প্রতি সময়ে জিয়া অরর্ফানেজ ট্রাষ্ট দূর্নীতি মামলায় ৭ বছরের সাজা ভোগ করছে বেগম জিয়া। তবে বর্তমান সময়ে তিনি আদালতের দেওয়া শর্তের মধ্যে দিয়ে জামিনে রয়েছেন। এদিকে তিনি অসুস্থ হওয়ায় তাকে দ্রুত সময়ে বিদেশে নেওয়ার জন্য বিএনপি দলের নেতাকর্মীরা এবং তার পরিবারের সদস্যেরা সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছে। এমনকি এই লক্ষ্যে দেশ জুড়ে নানা ধরনের কর্মসূচি পালন করছেন দলটি।