বিয়ে প্রত্যেক মানুষের জীবনে একটি গুরুত্বপূর্ন সময় ও মুহূর্ত। আর এই গুরুত্বপূর্ন মুহুর্তকে যেন স্বরনীয় করে রাখা যায় সেই লক্ষ্যে অনেকেই অনেক নতুনত্ব কিছু করার চেষ্টা করে থাকে। যাতে বিবাহিত জীবনে বিয়ের প্রথম মূহুর্তটা দাম্পত্য জীবনে স্বরনীয় হয়ে থাকে। সেই রকমেরই এক ইচ্ছা নিয়ে নিজের বিয়েতে ভিন্নতা আনতে এবং সবাইকে অবাক করে দিতে এক ঝালাই শ্রমিক নিজের বিয়ের বাসর ঘর তৈরি করেছেন পানির উপরে, যা এলাকাবাসীর সবাইকে অনেকটাই অবাক করে দিয়েছেন।
শেরপুরে পুকুরের পানির ওপরে বাসর রাত কাটিয়ে নজর কেড়েছেন হালিম মিয়া (২৫) নামে এক ঝালাই শ্রমিক। শুক্রবার (২২ জুলাই) শেরপুর সদর উপজেলার চরশেরপুর ইউনিয়নের সাতানীপাড়া এলাকায় এমন ব্যতিক্রমী আয়োজন করেন তিনি। এ ঘটনার পর বিকেল থেকে পুকুরের পানিতে গড়া বাসর ঘরটি দেখতে ভিড় করেন আশপাশের লোকজন। জানা যায়, সাতানীপাড়ার আব্দুল হামিদের নয় ছেলে-মেয়ের মধ্যে সবার ছোট হালিম মিয়া। তিনি ঝালাই শ্রমিক হিসেবে কাজ করেন। তার ইচ্ছা ছিল, নিজের বিয়েতে নতুন কিছু করে চমক দেখানোর। সেই ইচ্ছা থেকে এমন ভিন্ন আয়োজনের কথা মাথায় আসে তার। শুক্রবার (২১ জুলাই) হালিম মিয়া বলেন, আমার বিয়ের কথা পাকা হওয়ার পর থেকে আমার ইচ্ছা হয়, ব্যতিক্রম কিছু করার। সেই ব্যতিক্রমী ইচ্ছা থেকে আমার নানা ও চাচা মিলে উদ্যোগ নিই পানিতে বাসর ঘর তৈরি করার। পরে চার/পাঁচদিন ধরে আমার নানা ও চাচা মিলে আমাদের বাড়ির পাশের পুকুরে খুব কষ্ট করে একটি ঘর তৈরি করেছেন। বিয়ে করে আজ বউ বাড়িতে নিয়ে এসেছি। পুকুরে বানানো ঘরটিতে আজ আমাদের বাসর হবে।
লোকজন বাসর ঘরটি দেখতে আসছেন, এতে আমার খুব ভালো লাগছে, আমি অনেক উৎসাহ পাচ্ছি। চাচা রোকন সরকার বলেন, আমার ভাতিজার খুব ইচ্ছা ব্যতিক্রমভাবে বিয়ে করবে। পরে বিয়ে ঠিক হলে আমরা পারিবারিকভাবে কয়েকবার বসে কি করা যায়, সে ব্যাপারে আলোচনা করি। একপর্যায়ে সিদ্ধান্ত হয় পানির ওপরে বাসর ঘর করার। পরে বাড়ির পাশের পুকুরের মাঝখানে বাসর ঘর বানানো হয়। যদিও বানানোর সময় অনেকে নানা নেতিবাচক মন্তব্য করেছেন, তবে ঘর বানানোর পর সেটি দেখতে মানুষ ভিড় করছেন। টাংগারপাড়া থেকে বাসর ঘর দেখতে আসা সোয়াইব রহমান বলেন, এর আগে এমন বাসর ঘর দেখিনি। এক বন্ধুর মাধ্যমে জানতে পেরে দেখতে এসেছি, আসলেই ব্যতিক্রম কাজ এটি। তালুকপাড়া থেকে আসা খাইরুল ইসলাম বলেন, পানির মধ্যে বাসর ঘর সত্যিই খুব ভালো হয়েছে। তার চমৎকার একটি আইডিয়া। খুব ভালো লেগেছে দেখে। চরশেরপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান সেলিম রেজা বলেন, আমার ইউনিয়নে এমন বিয়ে হওয়ায় মানুষের মধ্যে হৈচৈ শুরু হয়েছে। পানিতে এমন বাসর ঘর এর আগে দেখিনি। বিভিন্ন এলাকা থেকে মানুষ দেখতে আসছেন।
উল্লেখ্য, বিয়ের পরে বাসর ঘর বিয়ের একটি প্রধান অংশবিশেষ। এই প্রধান অংশের মাধ্যমে বিয়েকে স্বরনীয় করে রাখতে সম্প্রতি এক ঝালাই মিস্ত্রী তার বাসঘর নির্মান করেছেন অভিনব কায়দায়। যার কথা শুনে রীতিমত কৌতুহলী হয়ে নিজ এলাকার পাশাপাশি পার্শ্ববর্তী এলাকা থেকেও অনেক মানুষ ভির জমাচ্ছে এই অভিনব বাসর দেখতে। পানির ওপরে নির্মান করেছেন এই আলোচিত ঝালাই শ্রমিক তার বিয়ের অভিনব বাসর ঘর।