বিশ্ব জুড়েই প্রযুক্তির ব্যবহার ব্যপক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। বাংলাদেশেও এই হার বৃদ্ধি পেয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় এখন মানুষ ঘরে বসেই নানা ধরনের পন্য ক্রয়-বিক্রয় করতে পারছে। তবে সম্প্রতি বাংলাদেশে কিছু ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান নিজেদের স্বার্থ হাছিলের লক্ষ্যে নানা কৌশলে গ্রাহকদের কাছে থেকে বিপুল পরিমানের অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে। এই সকল অনিয়মকারী ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছে সরকার। এরও লক্ষ্যে এই ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান প্রসঙ্গে বেশ কিছু কথা তুলে ধরলেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম জানিয়েছেন, দেশে ই-কমার্সের সঙ্গে যুক্ত সবাইকে নিবন্ধনের আওতায় এনে মনিটরিং করা হবে। ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানে কেনাবেচার ক্ষেত্রে নিবন্ধিত গেটওয়ের মাধ্যমে লেনদেন করতে হবে। মঙ্গলবার মন্ত্রিপরিষদ সভা শেষে প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি বলেন, ‘ই-কমার্স বন্ধ করা যাবে না। সুতরাং এ ধরনের প্রতিষ্ঠানকে নিবন্ধন ও মনিটরিংয়ের আওতায় আনার ব্যবস্থা করছি। আশা করছি, দেড়-দুই মাসের মধ্যে ভালো একটা অগ্রগতি হবে।’ ব্রিফিংয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব উল্লেখ করেন, বৈঠকে আলোচ্যসূচির বাইরে ই-কমার্স নিয়ে আলোচনা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘ই-কমার্সের সঙ্গে যুক্ত সবাইকে নিবন্ধিত করে তাদের মনিটরিং করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এর প্রক্রিয়া ও কীভাবে তা করা হবে সেসব নিয়ে মোটামুটি আলোচনা হয়েছে।’ জনগণকে সচেতন হওয়ার আহ্বান জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিবের বক্তব্য, ‘পাঁচ লাখ টাকার মোটরবাইক আড়াই লাখ টাকায় দেওয়ার প্রস্তাব পেয়েই ঝাঁপিয়ে পড়বো এবং আড়াই লাখ টাকা জমা দিয়ে দেবো? আমার নিজেরও তো একটা বিচার-বিবেচনা থাকা দরকার যে, পাঁচ লাখ টাকার জিনিস কীভাবে আমাকে আড়াই লাখ টাকায় দেবে? সুতরাং জনগণকে সচেতন হতে হবে।’
খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম জানান, ই-কমার্স সংক্রান্ত যেসব বিষয় রয়েছে সেগুলো নিয়ে সম্প্রতি মন্ত্রিপরিষদের পক্ষ থেকে কয়েকদিন আগে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামালের সভাপতিত্বে বৈঠক হয়েছে। এতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিবকে সভাপতির দায়িত্ব দিয়ে একটি কমিটি করে দেওয়া হয়েছে। তারা একমাস সময় পেয়েছেন। আগামী ২০ দিনের মধ্যে তাদের প্রতিবেদন দেওয়ার কথা। আজকের সভায় বাণিজ্যমন্ত্রী ও সচিব উভয়ে এ বিষয়ে অগ্রগতি হওয়ার কথা জানিয়েছেন। মন্ত্রিপরিষদ সচিবের কথায়, ‘এ বিষয়ে সব ইন্টেলিজেন্স, এফআইউ, বাংলাদেশ ব্যাংক, এনটিএমএসি সবাইকে নিয়ে বিস্তারিত আলাপ-আলোচনা করেছি। দুই-আড়াই মাস কিন্তু একটা নিয়ন্ত্রণের মধ্যে রয়েছে।’ মন্ত্রিসভা বৈঠকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে গণভবন থেকে সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সচিবালয়ের মন্ত্রিপরিষদ সভাকক্ষ থেকে এতে যুক্ত হন সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রীরা।
দেশে এখন পর্যন্ত অনলাইনভিত্তিক ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান পরিচালনায় সরকারী ভাবে কোন নীতিমালা না থাকায় সম্প্রতি গড়ে উঠা অধিকাংশ ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান বিভিন্ন ধরনের অনিয়মের কর্মকান্ড পরিচালান করছে। অবশ্যে এই সকল অনিয়মের অভিযোগ প্রকাশ্যে আসতে সরকার কঠোর অবস্থানে রয়েছে। এমনকি ইতিমধ্যে বেশ কিছু নিয়ম-নীতি প্রনয়ন করেছে ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান পরিচালনায়।