একটা সময়ে পদ্মাসেতুকে কেন্দ্র করে অনেক কটুকথা শুনতে হয়েছে বর্তমান ক্ষতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারকে। তবে এরপরও আত্মবিশ্বাস না হারিয়ে বরং মনোবল নিয়ে রীতিমতো কাজ করে গেছে এ সরকার। আর সেই ধারাবাহিকতার মধ্যদিয়ে নানা বাধা-প্রতিবন্ধকতা পেরিয়ে অবশেষে নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মাসেতু নির্মাণ করে দেখিয়ছে এ সরকার।
তবে এ বিষয়টি রীতিমতো এটাকে অপমানের প্রতিশোধ হিসেবে দেখছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, পদ্মা সেতু আমাদের আত্মবিশ্বাস তৈরি করেছে। পদ্মা সেতু ক্ষমতা ও আত্মবিশ্বাস এবং অপমানের প্রতিশোধের প্রতীক। এই সেতুটি শুধু একটি সেতু নয়, এটি প্রকৌশল জগতের এক বিস্ময়।
বুধবার (৮ জুন) রাতে সংসদে তিনি এ মন্তব্য করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এটা একটা সিদ্ধান্ত। আমরা যখন সেতু নির্মাণ শুরু করি, তখন সবার দৃষ্টি সরে যায়। সবাই সম্মান করতে শুরু করে যে বাংলাদেশ পারেনি। এ দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। এগিয়ে যাবে।
শেখ হাসিনা বলেন, আমি বলেছি যেদিন নিজের টাকায় করতে পারব সেদিনই করব। কিন্তু আমাকে টাকা দিয়ে দেশকে অপমান করতে হবে! আমাকে ভয় দেখানো হয়েছে, যদি এটা না হয় আপনাদের নির্বাচনের কী হবে? আমার কথা, জনগণ ভোট দেবে না, আমি ক্ষমতায় আসব না। ২০০১ সালে আমাকে আসতে দেওয়া হয়নি।
তার পরিবারের ওপর চাপের কথা তুলে ধরে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, আমার পরিবারে একটা মানসিক যন্ত্রণা রয়েছে। আমার মেয়ে, আমার ছেলে, আমার বোন। তাদের ওপর যে চাপ! জয় সম্পর্কে স্টেট ডিপার্টমেন্ট বলছে- তোমার মাকে বল, না হলে তোমার বিরুদ্ধে অডিট হবে। জয় বলেছিল, হ্যাঁ করো, আমি আমার মাকে বলতে পারব না, আমার বিরুদ্ধে যত তদন্তই আছে, আমি এখানে কোনো অন্যায় করিনি, সবই বৈধ, আমি কোনো ভয় পাই না।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তারা কার ওপর চাপ সৃষ্টি করেছেন। শুধু আমার উপর? সর্বোপরি. এমন পরিস্থিতিতে আমি হাল ছাড়িনি। সততাই আমার শক্তি। আমার শক্তি বাংলাদেশের মানুষ। আমি কি এই লোকদের অপমান করার জন্য কিছু করব? এটা না.
বঙ্গবন্ধু কন্যা বলেন, পদ্মা সেতুতে অর্থায়নের শর্তে বিশ্বব্যাংক ও যুক্তরাষ্ট্রের ‘প্রচণ্ড চাপ’ রয়েছে। এত চাপ! এই মামলা, যে সমস্ত খেলা। মিথ্যা অভিযোগে হয়রানি। এটা একটা অপমান! এই যে অপমান! স্টেট ডিপার্টমেন্ট দুই দুই বার আমার ছেলেকে সজীব ওয়াজেদ জয়কে ডেকে নিয়ে থ্রেট করেছে যে তোমার মাকে বলো-এমডির পদ থেকে ইউনূসকে সরানো যাবে না।
তিনি বলেন, গ্রামীণ ব্যাংকের এমডি মো. ইউনূস অবৈধভাবে ৭১ বছর এমডি পদে ছিলেন। তাকে অপমান করা হয়নি তবে তাকে ব্যাংকের উপদেষ্টা ইমেরিটাস হওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তাকে এমডির পদ থেকে সরানো যাবেনা।
“এটা তখন আমাদের নজরে আসে। আমরা বিশ্বব্যাংককে দোষারোপ করছি না। তবে এই বিশ্বব্যাংককে দিয়েই করা হয়েছে। বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট তার শেষ কর্মদিবসে টাকা খরচ করা বন্ধ করে দিয়েছেন।
এদিকে পদ্মাসেতু উদ্বোধনের অপেক্ষায় রয়েছে যেন গোটা বাঙালি। জানানো হয়েছে, চলতি জুন মাসের আগামী ২৫ তারিখ পদ্মাসেতু উদ্বোধন করবেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সভাপতি ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এদিন সেখানে উপস্থিত থাকবেন দলীয় অনেক নেতাকর্মীরা।