সম্প্রতি বাংলাদেশে হঠাৎ করেই বৃদ্ধি পেয়েছে জ্বালানী তেলের দাম। আর এ নিয়ে এখনো সারা দেশে হচ্ছে আলোচনা সমালোচনা। এ দিকে সম্প্রতি ঢাবিতে ঘটেছে নতুন একটি ঘটনা।
জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধি নিয়ে ফেসবুকে পোস্ট দেওয়ায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রীকে হল থেকে বের করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ছাত্রলীগের হাজী মোহাম্মদ মহসীন হল শাখার কয়েকজন নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে।
ভুক্তভোগী, দর্শন বিভাগের শেষ বর্ষের ছাত্র কাজী সাকিব মিয়া সোমবার গণমাধ্যমকে জানান, ১৫ আগস্ট মধ্যরাতে তাকে হল ত্যাগ করতে বাধ্য করা হয়।
তিনি বলেন, ‘গত ৬ আগস্ট একটি ফেসবুক গ্রুপে জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধি নিয়ে ব্যঙ্গাত্মক পোস্ট করেছিলাম। পরে আমার টাইমলাইনে শেয়ার করি।’
পোস্ট করার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশ্ব ধর্ম ও সংস্কৃতি বিভাগের 2017-18 সালের ছাত্র আবু হাসান রনি তাকে ফোন করে হলে (হাজী মোহাম্মদ মহসিন হল) যেতে বলেন।
তিনি হলে এলে হলের আরেক ছাত্র আবু হাসান ও মশিউর রহমান শান্ত তাকে পোস্ট দেওয়ার কারণ জানতে চাইলে পোস্টটি মুছে দিতে বাধ্য করেন বলে সাকিব জানান। তবে টাইমলাইন থেকে পোস্টটি মুছে দেননি তিনি।
সাকিব বলেন, তখন দুজন তাকে বলেন, হলে থাকতে চাইলে ফেসবুকে ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে লিখতে পারবেন না এবং ছাত্রলীগের সমালোচনা বন্ধ না করলে তাকে হল ছাড়তে হবে।
‘আপনার পদের জন্য আমরা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সিনিয়রদের কথা শুনতে পারব না। আপনি ছাত্রলীগের আশ্রয়ে তাদের এজেন্ডার বিরুদ্ধে যায় এমন কিছু লিখতে পারবেন না,” শান্তকে উদ্ধৃত করে সাকিব বলেন।
পরে শান্ত ও হাসান তাকে বলেন, ‘ছাত্রলীগ নিয়ে লেখালেখি বন্ধ করে ১১২ নম্বর কক্ষ ছেড়ে টিনশেড ভবনের ১০২২ নম্বর কক্ষে চলে যান, নয়তো হল ছেড়ে যান।’
তিনি কোনো শর্ত মানতে রাজি না হওয়ায় ১৫ আগস্ট রাতে শান্ত ও হাসানসহ কয়েকজন ছাত্রলীগ নেতা তাকে আবার ফোন করে এক মাসের মধ্যে হল ত্যাগ করতে বলে, তাই তাকে হল ত্যাগ করতে বাধ্য করা হয়।
হল কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ করেছে কি না জানতে চাইলে সাকিব বলেন, এ ধরনের বিষয়ে কর্তৃপক্ষ কদাচিৎ ব্যবস্থা নেয় তা তিনি বলেননি।
এদিকে অভিযোগ অস্বীকার করে হাসান বলেন, ‘আমরা তাকে হল ছাড়তে বাধ্য করিনি। পরিবর্তে, আমি তাকে অন্য ঘরে যেতে বললাম।’
ইতিমধ্যে এই ঘটনা নিয়ে ঢাবিতে তৈরী হয়েছে নানা আলোচনা সমালোচনা আর উত্তেজনা। আর এই ঘটনার সত্যতা এবং প্রতিকার নিয়ে জানতে চাইলে প্রভোস্ট অধ্যাপক মাসুদুর রহমান বলেন, ‘এ ঘটনায় কেউ কোনো অভিযোগ দেয়নি। কোনো অভিযোগ পেলে আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখব।’