Friday , September 20 2024
Breaking News
Home / Countrywide / জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের অজানা বিষয়টি এবার প্রকাশ্যে আনলেন ফখরুল

জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের অজানা বিষয়টি এবার প্রকাশ্যে আনলেন ফখরুল

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর হলেন বাংলাদেশের সাবেক ক্ষমতাসীন দল বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব। তিনি দীর্ঘদিন ধরে এই পদে বহাল রয়েছেন। এই সম্মানীয় পদে বহাল থেকে সততা ও নিষ্ঠার সহিত তার দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন। সম্প্রতি তিনি তার এক বক্তব্যে বলেছেন যুক্তরাষ্ট্রে তেলের দাম ৭৮ শতাংশ কমেছে।

আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের দাম বাড়লেও অভ্যন্তরীণ বাজারে কেন জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানো হলো- এমন প্রশ্ন তুলেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি জানতে পেরেছেন, যুক্তরাষ্ট্রে জ্বালানি তেলের দাম ৮০ শতাংশ কমেছে।

বিএনপি মহাসচিব আরও বলেন, তেলের দাম বাড়ায় চালসহ সব নিত্যপণ্যের দাম বাড়বে। এতে নিম্ন আয়ের মানুষের জীবন অনিশ্চিত হয়ে পড়বে।

রোববার নয়াপল্টনে বিএনপি কার্যালয়ের সামনে জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধি ও ভোলায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে ছাত্রদল নেতা নূরে আলম ও স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা আব্দুর রহিম নিহত হওয়ার প্রতিবাদে তিনি এ কথা বলেন।
সমাবেশ চলাকালে নেতাকর্মীরা কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনের সড়কে অবস্থান নিলে সেখানে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এতে তীব্র গরমে ব্যাপক যানজটের সৃষ্টি হয়।

শুক্রবার মধ্যরাত থেকে ডিজেলের দাম প্রতি লিটারে ৩৪ টাকা এবং অকটেনের দাম ৪৬ টাকা বাড়ানো হয়েছে। দেশের ইতিহাসে এর আগে একদিনে এত দাম বাড়েনি। আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম বাড়ার কারণে নিরুপায় দাম বাড়ার খবর পাওয়া গেছে।

এই দাম বাড়ার পরও প্রতি লিটার ডিজেলের দাম ৮ টাকার বেশি হবে বলে জানিয়েছে জ্বালানি মন্ত্রণালয়। তবে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন বা বিপিসি এখন অকটেন ও পেট্রোলে মুনাফা করবে।

সরকার মিথ্যা তথ্য দিয়ে জনগণকে বিভ্রান্ত করছে বলে দাবি করছেন ফখরুল। তথ্যমন্ত্রীর বক্তব্যের উদ্ধৃতি দিয়ে তিনি বলেন, আমাদের হাসান মাহমুদ সাহেব বলেছেন, পৃথিবীর সব দেশে তেলের দাম এর চেয়ে বেশি। কিন্তু আমেরিকায় তেলের দাম কমার সাথে সাথে তা ১৪ ডলারে গিয়ে দাঁড়ায় ৩ ডলারে।

অর্থাৎ মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের তথ্য অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রে জ্বালানি তেলের দাম ৭৮ শতাংশ কমেছে।

বিএনপি নেতা বলেন, “আন্তর্জাতিক বাজারে যখন তেলের দাম কমছে, তখন দেশও তা কমিয়েছে। আর আমাদের দেশে আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম বেড়েছে। কারণ সরকার লুটপাট, চুরি, দুর্নীতি ও হাতিয়ে নেয়। হালাল করার জন্য মানুষের পকেট থেকে টাকা।

বিপিসি এখন লোকসান করলেও ২০১৪ সালের পর সাত বছরে মুনাফা করেছে বলে উল্লেখ করেন ফখরুল। এই বলে লোকসানে যাচ্ছে পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন। লোকসানে যাবেন কেন? ৫ বছর আগে এই কোম্পানি আয় করেছিল প্রায় ৩৯ হাজার কোটি টাকা। তারপরও আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম কম ছিল। কিন্তু আপনি কমালেন না। তারপরও আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম কমতে শুরু করেছে।

তেলের দাম বাড়ায় দেশ ধ্বংস হয়ে গেছে বলে মনে করেন বিএনপির এই নেতা। তিনি বলেন, “এখন প্রতিটি পণ্যের দাম বাড়বে। চাল, তেলের দাম বাড়বে। কৃষকদের জন্য সারের দাম বাড়বে, পরিবহন খরচ বাড়বে। অর্থনীতিতে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। অর্থনীতির মোড় ঘুরবে। খারাপ

বাইক চালিয়ে যাঁরা সংসার চালান, তাঁরা এখন স্ত্রী-সন্তানের খরচ চালাতে গিয়ে চোখে অন্ধকার দেখছেন। কৃষকরা তাদের চোখে অন্ধকার দেখছে। ডিজেলের দাম বাড়লে তারা সেচ দেবে কী করে? সরকার তাদের পাত্তা দেয় না।

জনগণের সরকারের প্রয়োজন নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, পুলিশ ও সশস্ত্র বাহিনী দিয়ে সরকার দেশ চালাবে। আর হবে না। এই দেশকে এভাবে আর দেশ চালাতে দেওয়া হবে না। ধ্বংস করেছে আমাদের রাজনীতি, ধ্বংস করেছে আমাদের অর্থনীতি, ধ্বংস করেছে আমাদের ভবিষ্যৎ। তাই এই সরকারকে আর ঠিক করতে দেওয়া যাবে না।

নিজেদের মধ্যে ক্ষুদ্র বিভেদ সৃষ্টি না করে সরকারের বিরুদ্ধে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ারও আহ্বান জানান এই বিএনপি নেতা।

সরকারের একটি তথ্যও সঠিক নয়

বিগত যুগে সরকার দেশের উন্নয়নের যে সূচক উপস্থাপন করেছে তার কোনোটিই সঠিক নয় বলেও দাবি করেন বিএনপি নেতা। তিনি বললেন, আপনি কিছু মানুষকে ধনী বানিয়েছেন আর কিছু লোককে গরীব থেকে গরীব বানিয়েছেন। সে বড় বড়াই করে। মিথ্যা তথ্য দিন। একটি তথ্যও সঠিক নয়। সব তথ্য আছে মানুষকে বিভ্রান্ত করার জন্য।

“আমি জনগণকে অনুরোধ করব, তাদের তথ্যে বিভ্রান্ত হবেন না, নিজেকে প্রশ্ন করুন সত্যটা কী। তারপর দেখবেন চাল, সবজি, মাছের দাম কত বেড়েছে? তাহলে বুঝবেন দেশের অবস্থা?

তিনি গ্যাসের দাম বাড়িয়েছেন, পানির দাম বাড়িয়েছেন। পেট্রোল-ডিজেলের দাম বেড়েছে সব কিছুর। মানুষ কোথায় যাবে?’

সরকারকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, ‘আপনার পকেটে অনেক দুর্নীতির টাকা, ঘুষের টাকা আছে। এটা আমাদের পকেটে নেই। বাঁচার টাকাও শেষ হয়ে যাবে।

সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন কৃষক দলের সভাপতি হাসান জাফির তুহিন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, ঢাকা মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমান, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আহ্বায়ক আবদুস সালাম প্রমুখ।

প্রসঙ্গত, সারা বিশ্বে চলছে জ্বালানি তেলের সংকট। তারাই প্রভাব এসে পড়েছে বাংলাদেশে। হঠাৎ করেই রাতারাতি জ্বালানি তেলের দাম অপ্রত্যাশীতভাবে বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে সাধারণ মানুষ পড়েছে সীমাহীন বিপাকে।

About Shafique Hasan

Check Also

আ.লীগ ও তৃণমূল থেকে বিএনপিতে যোগদানের হিড়িক

নারায়ণগঞ্জে আওয়ামী লীগ ও তৃণমূল বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে বিএনপিতে যোগদানের প্রবণতা বৃদ্ধি পেয়েছে। ফ্যাসিবাদী আওয়ামী …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *