Tuesday , September 17 2024
Breaking News
Home / Countrywide / জ্বালানি তেলের দাম কমানোর জন্য, নাকি ভাড়া বাড়ানোর জন্য চলছে ধর্মঘট

জ্বালানি তেলের দাম কমানোর জন্য, নাকি ভাড়া বাড়ানোর জন্য চলছে ধর্মঘট

ডিজেল ও কেরোসিনের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদ জানাতে শুক্রবার হতে দেশজুড়ে চলামন রয়ছে পরিবহন ধর্মঘট যার কারনে বিপাকে পড়েছেন সাধারন যাত্রী এবং ব্যবসায়ীরা। তবে ধর্মঘটে পণ্য পরিবহনগুলো চলাচল বন্ধের কেন্দ্রীয় পর্যায় থেকে ঘোষণা দেওয়ার পরও গণপরিবহন বন্ধের বিষয়টি নিয়ে সুস্পষ্ট কোনো ধরনের সামান্যতম ধারণাও দিচ্ছেন না পরিবহন মালিক নেতা যারা রয়েছেন তারা। ধর্মঘটের বিষয়ে পরিবহন নেতা যারা রয়েছেন তাদের মধ্যে ভিন্ন মত দেখা যাচ্ছে। কিছু দল ডিজেলের দাম কমানোর দাবিতে ধর্মঘটকে ব্যবহার করার চেষ্টা করছে, আবার অন্য একটি পক্ষ পরিবহন ভাড়া বাড়িয়ে দেওয়ার জন্য চা’প দিচ্ছে।

বাস ভাড়া বাড়ানো নিয়ে রোববার বিকেলে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) সঙ্গে বৈঠক হবে। বৈঠকের ফলাফলের উপর নির্ভর করে ধর্মঘট নতুন মোড় নিতে পারে। কারণ বাস মালিক সমিতি চায় বাসের ভাড়া বাড়ানো হোক এবং পণ্য পরিবহন মালিকদের প্রধান দাবি ডিজেলের দাম কমানো।

যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়াকে সমস্যার সমাধান মনে করছেন না বাংলাদেশ ট্রাক কাভার্ড ভ্যান মালিক সমিতির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হোসেন মো. মজুমদার। তিনি গনমাধ্যমকে বলেন, ‘ডিজেল ও কেরোসিনের বর্ধিত মূল্য প্রত্যাহার করতে হবে। পরিবহনের ভাড়া বৃদ্ধি কখনো যুক্তিসংগত সমাধান হতে পারে না। একটি পক্ষ সরকারকে খুশি করতে কোনো ধরনের আ’ন্দোল/নে যেতে চাচ্ছে না। তাদের চাওয়া শুধু ভাড়া বাড়ানো।’

যদি ভাড়া সমন্বয় করে বাস মালিকরা ধর্মঘট তুলে নেন, তখন পণ্য পরিবহনের ধর্মঘটের অবস্থান কেমন হবে জানতে চাইলে মজুমদার বলেন, ‘তখন পণ্য পরিবহনের সব নেতা মিলে নতুন করে সিদ্ধান্ত নেবেন। তবে আমাদের উদ্দেশ্য ডিজেলের দাম কমানো, এ জন্যই আমরা ধর্মঘট ডেকেছি।’

আগামীকালের বৈঠকে বাসের ভাড়া সমন্বয় করা হলে ধর্মঘট প্র’ত্যাহার করার ইঙ্গিত দিয়েছে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্লাহ। তিনি বলেন, ‘আট বছর ধরে বাসের ভাড়া বাড়ছে না। আমরা ২০১৯ সালেই বাসের ভাড়া বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছিলাম। এখন আবার ডিজেলের দাম বেড়েছে। ডিজেলের দাম কমলে ভালো কথা; কিন্তু না কমলে ভাড়া সমন্বয় হওয়া দরকার।’

বিআরটিএর বৈঠকে যদি বাসের ভাড়া বাড়ানো হয়, তাহলে ধর্মঘট প্রত্যাহার করা হবে কি না—এ প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘আশা করি, ধর্মঘট প্রত্যাহার হবে।’

পরিবহন ধর্মঘট নিয়ে স্পষ্ট করে কিছুই বলছেন না বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সভাপতি মসিউর রহমান রাঙ্গা। ডিজেলের মূল্যবৃদ্ধিতেও তাঁর সরাসরি প্রতিক্রিয়া পাওয়া যাচ্ছে না। তিনি বলছেন, ‘কেন্দ্রীয়ভাবে এখনো কোনো আ’/ন্দো’লন বা কর্মসূচির সিদ্ধান্তে আসা যাচ্ছে না। প্রধানমন্ত্রী (শেখ হাসিনা) দেশে নেই। এমন অবস্থায় কর্মসূচি দিয়ে তেমন কোনো লাভ হবে কি না, তা-ও বোঝা যাচ্ছে না।’

চলমান ধর্মঘট বিচ্ছিন্ন তৎপরতা কি না এবং এই আ’ন্দো’/লনের ভবিষ্যৎ কী—এই প্রশ্নে মসিউর রহমান রাঙ্গা বলেন, ‘জেলাভিত্তিক সিদ্ধান্তে ধর্মঘট পালিত হচ্ছে। আমরা কেন্দ্র থেকে একযোগে কোনো কর্মসূচি দিইনি।’

এদিকে চাকরিসহ নানা বিষয়ে পরীক্ষার্থী এবং জনগণের দুর্ভোগের বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে পরিবহন বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের জন্য মালিক-শ্রমিকদের প্রতি আহবান জানিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। গতকাল নিজের সরকারি বাসভবনে ব্রিফিংকালে পরিবহন মালিক ও শ্রমিকদের প্রতি তিনি এ আহবান জানান।

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আগামীকাল বিআরটিএর ভাড়া পুনর্নির্ধারণ কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। সেখানে সংশ্লিষ্ট সবার সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে বাস্তবভিত্তিক মূল্য সমন্বয়ের মাধ্যমে জনগণের ওপর বাড়তি চাপ সহনীয় পর্যায়ে রাখার চেষ্টা করা হবে।’

এদিকে ধর্মঘটের কারণে দূরপাল্লার বাস ও শহরের বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে। একই সঙ্গে হিউম্যান হলার (লেগুনা) ও থ্রি হুইলারের মতো গণপরিবহনও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। গতকাল অফিস-আদালত বন্ধ থাকলেও ভোগান্তিতে পড়েছেন চাকরিপ্রার্থীরা এবং জরুরী কাজের জন্য বের হওয়া যাত্রীরা। কাছাকাছি যেতে হবে এমন গন্তব্যের অধিকাংশ যাত্রী পায়ে হেঁটে তারা তাদের গন্তব্যে পৌছাতে হয়েছে। তবে দূরপাল্লার যাত্রীদের রিকশা, সিএনজি চালিত অটোরিকশা ও অ্যাপভিত্তিক সেবার জন্য বাড়তি ভাড়া দিতে হচ্ছে।

রাজধানী ঢাকায় দেখা গেছে বিভিন্ন সড়কে বিআরটিসির বাস চলাচল এবং যাত্রী পরিবহন করছে। তবে বেসরকারি পরিবহন যেগুলো রয়েছে সেগুলো চলাচল করতে দেখা যায়নি। ফলে সড়কগুলোতে রিকশা, সিএনজি চালিত অটোরিকশা, প্রাইভেটকার ও মোটরসাইকেল চলাচল করতে দেখা গেছে। এবং তারা অতিরিক্ত ভাড়া নিয়ে যা্ত্রীদের গন্তব্যে পৌছে দিচ্ছে। যাত্রীরা এরকারনে অনেকটা বিপাকে পড়েছে।

About

Check Also

হাসিনার ভাগ্য নির্ধারণের আর পাঁচ দিন, বিপাকে ভারত

আগামী ২০ সেপ্টেম্বর শেষ হতে চলেছে বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভিসার মেয়াদ। বর্তমানে, কূটনৈতিক …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *