Thursday , November 14 2024
Breaking News
Home / National / জ্বলে উঠেছে বাংলাদেশ, সীমান্তে বিজিবি হত্যাকাণ্ডে এবার জাতিসংঘের তদন্ত চায় বিএনপি

জ্বলে উঠেছে বাংলাদেশ, সীমান্তে বিজিবি হত্যাকাণ্ডে এবার জাতিসংঘের তদন্ত চায় বিএনপি

ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের হাতে বাংলাদেশ বর্ডার গার্ড বিজিবি সদস্য রইছ উদ্দিন হত্যার ঘটনায় জাতিসংঘের তদন্ত দাবি করেছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি।

শনিবার সকালে দলের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম স্থায়ী কমিটির পক্ষ থেকে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ দাবি জানানো হয়।

বিবৃতিতে বলা হয়, ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) সদস্যরা ২১ জানুয়ারি ভোরে যশোর সীমান্তের ধান্যখোলা বিওপি জেলেপাড়া পোস্ট-সংলগ্ন এলাকায় বাংলাদেশ বর্ডার গার্ড (বিজিবি) সিপাহী মোহাম্মদ রইসউদ্দিনকে গুলি করে হত্যা করে। বাংলাদেশ-ভারত সীমান্ত গোটা বিশ্বে সবচেয়ে সহিংস ও রক্তস্নাত। ভারতের বারবার প্রতিশ্রুতি সত্ত্বেও বাংলাদেশ সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষীদের হাতে বাংলাদেশি নাগরিকদের হত্যার ঘটনা বেড়েই চলেছে। গণমাধ্যমে প্রতিনিয়ত প্রাণহানির খবর প্রকাশিত হচ্ছে। মানবাধিকার সংস্থা আইন ও সালিশ কেন্দ্রের মতে, ৭ বছরে বিএসএফের গুলিতে ২০১ জন বাংলাদেশি নাগরিক নিহত হয়েছেন।

বৈঠকে স্থায়ী কমিটির সদস্যরা বলেন, সিপাহী মোহাম্মদ রইসউদ্দিনের গুলিতে নিহত হওয়ার পর বিএসএফ যা বলেছে তা গ্রহণযোগ্য নয়। বিএসএফের পক্ষ থেকে বলা হয়, নিহত ব্যক্তি যে বিজিবির সদস্য তা তারা বুঝতে পারেননি। তার পরনে লুঙ্গি ও টি-শার্ট ছিল এবং চোরাকারবারি দলের সঙ্গে ভারতীয় সীমান্তের ভেতরে দেখা গেছে। একজন বিজিবি সদস্য কীভাবে লুঙ্গি ও টি-শার্ট পরে চোরাকারবারি চক্রের সঙ্গে মিশে যেতে পারে তা তারা বুঝতে পারছে না।

এই বিবৃতিটি কেবল বোগাস নয়, বিএসএফ বিগ ব্রাদার ভারতীয় নীতিনির্ধারকদের সস্তা মর্যাদার দ্বারা উত্সাহিত তাদের হত্যাকাণ্ডকে ন্যায্যতা দিচ্ছে। একজন বিজিবি সদস্য কখনই লুঙ্গি ও টি-শার্ট পরে চোরাকারবারী দলের সাথে থাকতে পারে না।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ভারতীয় মানবাধিকার সংস্থা ‘মাসুম’ও বিএসএফ-এর মন্তব্যের সঙ্গে একমত নয়। বিএসএফের এ ধরনের আচরণের ইতিহাস একই সঙ্গে হিংসাত্মক ও রক্তাক্ত। বিএসএফ কর্তৃক সংঘটিত অপরাধ এবং বক্তব্যের মধ্যে সবসময়ই ব্যবধান থাকে। তাদের আচরণে মনে হয় তারা আদিম ও মধ্যযুগ অতিক্রম করেনি। মোহাম্মদ রইসউদ্দিনকে হত্যার পর বাংলাদেশের জনগণ তাদের মনগড়া বক্তব্যকে ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করেছে। এই মর্মস্পর্শী হত্যাকাণ্ড সারা বাংলাদেশে ক্ষোভ ও প্রতিবাদের ঝড় তুলেছে। আগুনে জ্বলছে বাংলাদেশ। ভারতের উচ্চাভিলাষী নীতি সীমান্তে রক্তপাত বন্ধ করছে না। বাংলাদেশ সীমান্তকে ‘রক্তের খেলায়’ পরিণত করেছে বিএসএফ। বাংলাদেশের জনগণকে নতজানু করে রাখা এক আধিপত্যের বার্তা।

তারা বলেন, ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ-এর হাতে এখন পর্যন্ত সাধারণ বাংলাদেশি নিহত হয়েছেন। আর এখন সীমান্তে বিজিবির কোনো নিরাপত্তা নেই। স্বাধীন দেশের সীমান্তরক্ষীকে অন্য দেশের বর্ডার গার্ডের হাতে হত্যা কোনো সাধারণ ঘটনা নয়, এর সঙ্গে রাষ্ট্রের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের প্রশ্ন জড়িত। এটা গভীর উদ্বেগের বিষয় যে শেখ হাসিনার নতজানু পররাষ্ট্রনীতি তার ক্ষমতার লোভের ফলে বাংলাদেশকে আজ দাস রাষ্ট্রে পরিণত করেছে। দখলদার আওয়ামী সরকার আজ ঘৃণ্য দেশবিরোধী চক্রান্তের খেলোয়ার। সীমান্তরক্ষী বিজিবিকেও এখন প্রাণ দিতে হচ্ছে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্যরা আরও বলেন, বিএসএফের পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড এখন সবার জানা। দিল্লির হিংস্রতা এবং ঢাকার নীরবতা এসব অনিয়ন্ত্রিত হত্যাকাণ্ডকে প্রকাশ করে। দিল্লির সাথে শেখ হাসিনার অধীনস্থ চিরস্থায়ী রাজনৈতিক সমঝোতার ফলে সীমান্তে বাংলাদেশীদের হত্যার বিষয়ে বিএসএফের নীরবতা রয়েছে। ক্ষমতা ক্ষুধার্ত বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, মোহাম্মদ রইসুদ্দিন হত্যার পরের দিন পর্যন্ত তিনি জানতেন না। আওয়ামী মন্ত্রীদের ক্ষমতা দখল নাগরিকদের জীবনের চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ। দেশবাসীকে পরাধীন রেখে ক্ষমতা ভোগ করাই আওয়ামী লীগের নীতি ও আদর্শ। মাতৃভূমির সীমান্তে আওয়ামী সরকার কাউকে শান্তিতে রাখেনি। এখন তাদের বন্ধু দেশের সীমান্তরক্ষীদের হাতে বাংলাদেশের সাধারণ নাগরিক ও সীমান্তরক্ষীদের প্রাণহানি হচ্ছে। ভারত একটি গণতান্ত্রিক দেশ হলেও এর নীতিনির্ধারকেরা গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের গভীরতা অর্জন করতে পারেননি।

এ কারণে বাংলাদেশের সীমান্তে অবৈধ হত্যাকাণ্ডে তারা কোনো দায়বোধ করে না। ফেলানী সহ সকল হত্যাকান্ডে, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এমনকি বেশ কয়েকটি ভারতীয় মানবাধিকার সংস্থা প্রতিবাদ-উৎকণ্ঠা-উৎকণ্ঠা প্রকাশ করেছে, কিন্তু ভারতীয় কর্তৃপক্ষ এর প্রতিকার বা চেষ্টা করেনি। কাঁটাতারে ঝুলন্ত ফেলানীর মৃতদেহের হৃদয়বিদারক দৃশ্য আজও বাংলাদেশের মানুষের হৃদয়ে জ্বলছে। এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।

About Zahid Hasan

Check Also

যুক্তরাষ্ট্রের কাছে সেন্টমার্টিন লিজ দেওয়ার বিষয়ে যা জানালেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং

সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি গুজব ছড়িয়েছে যে অন্তর্বর্তী সরকার সেন্টমার্টিন দ্বীপকে লিজ দিচ্ছে। তবে প্রধান …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *