সম্প্রতি বিএনপি থেকে বহিষ্কৃত ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর জেল থেকে জামিন পেয়ে নৌকার টিকিট নিয়ে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। এরপর টক অব দ্য কান্ট্রিতে পরিণত হন ব্যারিস্টার শাহজাহান। এখনও তাকে ঘিরে আলোচনা-সমালোচনা থামছে না।
শনিবার যমুনা টেলিভিশনে সমসাময়িক বিভিন্ন রাজনৈতিক বিষয়ে টকশোর আয়োজন করা হয়। সেখানে বিএনপির সহ-আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান মসরুর মাওলার বিশেষ দূত উপস্থিত ছিলেন।
টকশোর একপর্যায়ে সাবেক সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার রুমিন বলেন, ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর জামিন পেয়েই নৌকায় চড়েছেন। একইভাবে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর-১ আসনের একরামুজ্জামানও জামিন পেয়ে নৌকায় মনোনয়ন কিনেছেন। এই সূত্র বোঝা কি খুব কঠিন?
শুধু সংগঠন নয়, শুধু আইনশৃঙ্খলা বাহিনীই নয়, শুধু রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানই এই খেলায় জড়িত নয়, বিচার বিভাগও এই খেলায় জড়িত।
বিচার বিভাগ কাকে জামিন দেবে আর কাকে দেবে না- তা ওপর থেকে ঠিক করা হয়। বিশেষ করে রাজনৈতিক মামলায় যেখানে রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব আসামি। এসব ক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত ওপর থেকে আসে। না হলে দেখুন- একই মামলায় এখনো কারাগারে মির্জা ফখরুল, আমীর খসরু।
শুধু তাই নয়, একই মামলায় দলের অনেক সিনিয়র নেতা কারাগারে রয়েছেন। সেই মামলায় শাহজাহান ওমর কীভাবে জামিন পেলেন। তিনি তাৎক্ষণিকভাবে নৌকায় চড়ে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে মনোনয়ন নিশ্চিত করেন।
এখন তো শাহজাহান ওমরকে মানতে হবে ওবায়দুল কাদের তার নেতা। তা হলে আমার প্রশ্ন— ওবায়দুল কাদের যদি তৃণমূল ও বিএনএমকে চমক বলেন, তা হলে শাহজাহান কেন বলবেন তারা (তৃণমূল ও বিএনএমকে) ফকিন্নি পার্টি। তিন কোটি টাকার বিনিময়ে তারা পার্টি করেছেন।
এখন প্রশ্ন— শাহজাহান ওমরের ভাষ্যমতে, যে তিন-চার কোটি টাকা দিয়ে ছোট ছোট দলগুলোকে নিয়ে কিংস পার্টি বানায়, এখানে আদর্শের কোনো ব্যাপার নেই।
পরে টকশো উপস্থাপকের পক্ষ থেকে রুমিনের কাছে জানতে চাওয়া হয়, যাকে (শাহজাহান ওমর) আপনি আদর্শহীন বলছেন সে তো কিছু দিন আগেও আপনার দলে ছিল?
রুমিন ফারহান উপস্থাপককে উদ্দেশ্য করে বলেন, আমার বাসায় অনেক বই আছে। হঠাৎ একদিন খেয়াল করলাম আমার কিছু বই ঘুনপোকা নষ্ট হয়ে গেছে। এতে কিছু দামি বইও ছিল। আমি যদি কয়েকদিন আগে পোকাটি সনাক্ত করতে পারতাম, তাহলে এত দামী বই হারাতে হতো না।। যে মুহূর্তে পেয়েছি বিষ দিয়ে ঝেড়ে ফেলেছি পোকাগুলো। এতে অন্য বইগুলো বেঁচে গেছে।
যেসব ঘুনপোকা দলের ভেতরে লুকিয়ে থাকে, তারা যখন আপসে নিজেই সরে যায়, তখন দল বেঁচে যায়। এ দলে কয়টা ঘুনপোকা পেয়েছেন বলুন তো? একটা শাহজাহান ওমর আর নাসিরনগরের একরাম সাহেব আর কে? আর তো পেলাম না। তৈমূর আলম তো বহিষ্কৃত ছিল। শমসের মবিন তো ’১৫ সাল থেকে দলে নেই।