পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও পিটিআই প্রধান ইমরান খান এবারের জাতীয় নির্বাচনে অংশ নিতে পারেননি। নির্বাচনের সময় তিনি কারাগারে ছিলেন। সেখান থেকেই রাজনীতির মাঠ নিয়ন্ত্রণ করেছেন সাবেক এই বিশ্বকাপজয়ী তারকা।
চলতি সপ্তাহের শুরুতে শোনা গিয়েছিল নওয়াজ শরিফ ও বিলাওয়াল ভুট্টোর দল সরকার গঠন করছে। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হবেন নওয়াজ শরিফের ভাই শাহবাজ শরিফ। তবে জেলে বসেই খেলা বদলে দেন ইমরান খান।
পাকিস্তানে সরকার গঠনের জন্য নওয়াজ শরিফ ও বিলাওয়াল ভুট্টোর দল প্রায় সবই প্রস্তুত ছিল। ইমরান খানের পিটিআইও বিরোধী দলে থাকার কথা বলেছে। তবে সময়ের সাথে সাথে এই হিসাব পাল্টেছে। প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থীর নাম ঘোষণা করেছে পিটিআই। এই পরিস্থিতিতেই পাকিস্তানে নতুন মোড়। জিও নিউজের খবর
নির্বাচনের ফল ঘোষণা করতে সময় লেগেছে চার দিন। নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার প্রায় এক সপ্তাহ পার হয়ে গেছে, এখনো সরকার গঠনের কোনো সমাধান পাওয়া যায়নি পাকিস্তানে। নতুন করে জল্পনা চলছে যে বিলাওয়াল ভুট্টোর পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি) পাকিস্তান মুসলিম লিগের (নওয়াজ) সঙ্গে জোট করবে না। বরং তারা ইমরান খানের দলের সঙ্গে জোট করবে।
৯ ফেব্রুয়ারি, নওয়াজ শরীফ ঘোষণা করেন যে তার ছোট ভাই শাহবাজ শরীফ পিপিপির বিলাওয়াল ভুট্টোর সাথে জোটের বিষয়ে আলোচনা করেছেন। সরকার গঠিত হবে, প্রধানমন্ত্রী হবেন শাহবাজ শরীফ। মারিয়ান হবেন পাঞ্জাব প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু এক সপ্তাহ পর গল্প নতুন মোড় নেয়। নওয়াজ শরিফের দল পিএমএল-এন পিপিপির সঙ্গে জোট নিয়ে আলোচনায় স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করছে না। পিপিপিও পিটিআই সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থীদের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ করছে।
পাকিস্তানের গুপ্তচর সংস্থা আইএসআই সম্প্রতি আদিয়ালা জেলে ইমরান খানের সঙ্গে দেখা করেছে, সূত্রের বরাত দিয়ে পাকিস্তানি ও ভারতীয় গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। ইমরান খানের সঙ্গে চুক্তি হয়েছিল। এরপর ওমর আইয়ুব খানকে প্রধানমন্ত্রী প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করা হয়।
খবরে বলা হয়েছে, আন্তর্জাতিক চাপের কারণে পাকিস্তান সেনাবাহিনী পিটিআইকে বিরোধী দলে রাখতে চায় না। যেহেতু পিটিআই-সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থীরা বেশিরভাগ আসনে জয়ী হয়েছে, তাই তারা বিক্ষোভের আশ্রয় নিয়েছে। এই প্রতিবাদ সামলানো কঠিন হয়ে পড়ছে। সে কারণেই নওয়াজ শরিফের হাত ছেড়ে ইমরানের হাত নিতে আগ্রহী বিলাওয়াল ভুট্টোর দল।এদিকে, পাকিস্তানের এক্সপ্রেস ট্রিবিউন এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে যে পাকিস্তানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী এবং তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) প্রতিষ্ঠাতা ইমরান খান বলেছেন, তার দল ক্ষমতায় ফিরলে ফাতাহ-ই-মক্কা নীতি গ্রহণ করবে। অর্থাৎ সবাইকে সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করা হবে।
রাওয়ালপিন্ডির আদিয়ালা জেলে ইমরান খানের সঙ্গে ৩০ মিনিট দীর্ঘ বৈঠকের পর পিটিআই নেতা আলি মুহাম্মদ খান এ কথা বলেন। ইমরান খান তাকে বলেন, আমরা কোনো রাজনৈতিক প্রতিশোধ নেব না, দেশ ও জাতির উন্নয়নের স্বার্থে দেশ ও জাতিকে এগিয়ে নিয়ে যাব।
৮ ফেব্রুয়ারি পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদের ২৬৬টি আসনের মধ্যে ২৬৫টিতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ইমরান খানের পিটিআই-এর স্বতন্ত্র প্রার্থীরা ৯২টি আসনে জয়ী হয়। নির্বাচনে নওয়াজ শরিফের পাকিস্তান মুসলিম লিগ-এন (পিএমএলএন) দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৭৫টি আসন জিতেছে। আর বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারির পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি) ৫৪টি আসন পেয়েছে।