কক্সবাজারের মহেশখালী দ্বীপের নিকটবর্তী সমুদ্র উপকূলে মাছ ধরার জালে বিশাল সাইজের আটটি কালো পোয়া মাছ ধরা পড়ার পর ঐ এলাকায় সাড়া পরে গেছে। বড় সাইজের ঐ ৮ টি মাছের দাম চাওয়া হয়েছে ৩০ লাখ টাকা। কিন্তু স্থানীয় মাছ ব্যবসায়ীরা সেগুলোর দাম ২৫ লাখ টাকা পর্যন্ত দিতে রাজি হয়েছেন। তবে জেলে সেখানে মাছের কাঙ্খিত দাম না পাওয়ার জন্য আজ মঙ্গলবার অর্থাৎ ২৯ নভেম্বর মাছগুলো বিক্রির জন্য চট্টগ্রামে নিয়ে যাওয়ার কথা জানান। এদিকে বিশাল আকারের এসব মাছ নিয়ে জেলে পরিবারে আনন্দ বিরাজ করছে।
জানা যায়, মোহাম্মদ শহিদুল হক বহদ্দারের এফবি মা-বাবার দোয়া নামের মাত্র ২৪ হর্স পাওয়ারের একটি ছোট মাছ ধরার নৌকা রয়েছে। তার বাড়ি মহেশখালী উপজেলার মাতারবাড়ি ইউনিয়নের জেলেপাড়ায়। সোমবার (২৮ নভেম্বর) সন্ধ্যায় শহিদুল, তার ছোট ভাই ও ঐ এলাকার অপর দুই জেলে যথারীতি নৌকা নিয়ে বাড়ির পাশের সাগরে মাছ ধরতে বের হন। তারা সমুদ্রের কুয়াঁরদ্বার পয়েন্টে কয়েকটি জাল ফেলে। শেষ বিকেলে তাদের জালে ধরা পড়ে ৮টি কালো পোয়া মাছ।
এ খবর স্থানীয় ও চট্টগ্রামের মাছ ব্যবসায়ীদের কানে গেলে তারা মোবাইল ফোনে ও সরাসরি দর কষাকষি শুরু করে। শহিদুল ৮টি মাছের দাম ৩০ লাখ টাকা চাইলেও সর্বোচ্চ দাম ২৫ লাখ টাকা বলে জানিয়েছেন স্থানীয় মাছ ব্যবসায়ীরা। কিন্তু কিছুতেই শহিদুল চাহিবা দামের নিচে যেতে রাজি নয়। চট্টগ্রামের পাইকাররা বেশি দামে মাছ কিনতে রাজি হওয়ায় এসব মাছ বরফে ঢেকে রাখা হয়েছে। মঙ্গলবার (২৯ নভেম্বর) সকালে এসব মাছ বিক্রির জন্য চট্টগ্রামে নিয়ে যাওয়া হবে।
এ ব্যাপারে জেলে এ কে খান বলেন, আমাদের জালে অনেক মূল্যবান মাছ ধরা পড়েছে। আমাদের পরিবারে অনেক আনন্দ বিরাজ করছে। নৌকায় এমন মাছ আগে কেউ ধরেনি। দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ৩০ লাখ টাকা। কিন্তু স্থানীয়ভাবে এই দাম পাওয়া যায়নি। চট্টগ্রাম থেকে অনেক মাছ ব্যবসায়ী যোগাযোগ করেছেন। তারা এসব মাছ কিনতে আগ্রহী। আগামীকাল (২৯ নভেম্বর) মাছ নিয়ে চট্টগ্রাম যাব। দেখি ৩০ লাখে বিক্রি করতে পারি কিনা।
মাছগুলো সামুদ্রিক জো-ফিশ প্রজাতির। এর বৈজ্ঞানিক নাম ‘Protonibia diacanthus’। এই মাছের বায়ু থলি সাধারণত তিনটি কাজে ব্যবহৃত হয়। প্রথমত, এটি অস্ত্রো”পচারের কাজে সুতো হিসাবে ব্যবহার করা হয়, দ্বিতীয়ত, ভিটামিন-ই ক্যাপসুল তৈরি করা হয় এবং সর্বশেষে, বিদেশে এই মাছের বাতাসের থলি থেকে অত্যন্ত ব্যয়বহুল স্যুপ তৈরি করা হয়।
এই ধরনের পোয়া মাছের মূল্য অধিক হওয়ার কারণ হিসেবে যেটা জানা গেছে তা হলো- এসকল মাছের পেটের মধ্যে থাকা এয়ার থলি উচ্চ মূল্যে বিদেশে কিনে থাকে। হংকং সহ বিশ্বের আরো বেশ কয়েকটি দেশে এই মাছের বায়ুথলির নানা গ্রেড দিয়ে বিক্রি হয়ে থাকে। জানা গেছে, বাংলাদেশের সাগর এলাকাতে এই পোয়া মাছের অনেক বসবাসের স্থান রয়েছে।