বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ‘জুলাই বিপ্লব’ ঘোষণাপত্র প্রকাশের অনুষ্ঠানটি স্থগিত করা হয়েছে। সোমবার রাতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটির যৌথ সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এই সভা অনুষ্ঠিত হয় রাজধানীর বাংলা মোটরে রূপায়ন সেন্টারে।
যদিও ঘোষণাপত্রের প্রকাশ অনুষ্ঠান স্থগিত করা হয়েছে, তবুও শহীদ মিনারে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে বলে জানা গেছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নির্বাহী কমিটির সদস্য লুৎফর রহমান সমকালকে জানান, পূর্বের ঘোষণা অনুযায়ী শহীদ মিনারে সমাবেশ করবেন তাঁরা এবং সেখানে জুলাই অভ্যুত্থানের পক্ষে প্রস্তাবনা তুলে ধরবেন।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ফেসবুক পেজে বলা হয়েছে, “আজ ৩১ ডিসেম্বর বিকেল ৩টায় শহীদ মিনারে দেখা হচ্ছে। ঢাকায় আসুন ছাত্র-জনতা।”
এছাড়া, অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের একটি ঘোষণাপত্র তৈরির উদ্যোগ গ্রহণের কথা জানানো হয়েছে, যা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন সাদরে গ্রহণ করেছে।
রাত সাড়ে ১২টার দিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটির সভা শেষ হওয়ার পর বাংলা মোটর থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়, যা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দিকে যাত্রা করে।
মিছিল শুরুর আগে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখ্য সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান মাসুদ। তিনি ৫ আগস্টের মতো রাজপথে ছাত্র-জনতাকে নামার আহ্বান জানান।
শনিবার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ‘জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্র’ প্রকাশের ঘোষণা দিয়েছিল। আজ মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ঘোষণাপত্রটি পাঠ করার কথা ছিল। এই ঘোষণাপত্রে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের জনআকাঙ্ক্ষাকে দালিলিক রূপ দেওয়া হবে বলে জানানো হয়।
শহীদ মিনারে সব দলমতের মানুষকে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে সংগঠনটি বলে, “সেখানে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ১৫৮ জন সমন্বয়ক-সহসমন্বয়ক শপথ নেবেন এবং ‘সেকেন্ড রিপাবলিক’ দাবিও উঠবে।”
জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্য সচিব আখতার হোসেন জানান, জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্রে ঐতিহাসিক ব্রিটিশ সময় থেকে বর্তমান সময়ের সব ইতিহাস আসবে এবং এতে জুলাই ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান অন্তর্ভুক্ত হবে।
এদিকে, সোমবার রাতে অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে জাতীয় ঐক্যমতের ভিত্তিতে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের একটি ঘোষণাপত্র তৈরির উদ্যোগ নেওয়ার কথা জানানো হয়। প্রধান উপদেষ্টা শফিকুল আলম জানান, এ ঘোষণাপত্রটির মাধ্যমে জনগণের ঐক্য, ফ্যাসিবাদবিরোধী চেতনা ও রাষ্ট্র সংস্কারের আকাঙ্ক্ষা সুসংহত হবে।
শফিকুল আলম আরও বলেন, “আমরা আশা করছি, সকলের অংশগ্রহণে কিছুদিনের মধ্যে সর্বসম্মতিক্রমে ঘোষণাপত্রটি প্রস্তুত করা হবে এবং জাতির সামনে উপস্থাপন করা হবে।”