গাজীপুর মহানগরীর পূবাইল মেট্রোপলিটন থানার সভাপতি ও মহানগরের সাবেক ওয়ার্ড কাউন্সিলর আজিজুর রহমান শিরীষ ছেলের হুমকির পরিপ্রেক্ষিতে নিজের জীবনের আশংকা প্রকাশ করেছেন। নিজের ও পরিবারের অন্য সদস্যদের জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে তিনি সংবাদ সম্মেলন করেন।
আজিজুর রহমান শিরীষ শনিবার নগরীর ৪০ নং ওয়ার্ডের মেঘডুবি এলাকায় মহানগর যুবলীগের আহবায়ক সদস্য রাজীবুল হাসান রাজীবের শ্বশুর বাড়িতে এ সংবাদ সম্মেলন করেন। এ সময় স্ত্রী ফাতেমা বেগম, ছেলে রুবেল ও ছোট ছেলে রাজিবুল হাসান রাজীব উপস্থিত ছিলেন।
আজিজুর রহমান শিরীষের অভিযোগ, তার বড় ছেলে হুসেনুর রহমান রাসেল (৪৫) মাদকাসক্ত ও বিপথগামী। প্রাণ বাঁচাতে প্রশাসনের সহযোগিতা চান তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন পূবাইল ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মো. কান্নাজড়িত কণ্ঠে ছেলে রাসেলের দীর্ঘদিনের অন্যায় ও নির্যাতনের বর্ণনা দেন।
আজিজুর রহমান শিরীষ বলেন, আমি, স্ত্রী ফাতেমা, ছেলে রুবেল ও রাজীবসহ আমার পরিবার এখন ঘর ছাড়া। রাসেল আমাদের বিভিন্নভাবে ভয়ভীতি দেখিয়ে দেশীয় অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে এলাকায় ভীতিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে। আমার স্ত্রী ফাতেমাও তার মারধরের হাত থেকে রেহাই পায়নি। মারধরের ভয়ে অনেকেই মুখ খোলেন না। বিষয়টি স্থানীয় ওসি শফিকুল ইসলামকে জানাই। দেখার প্রতিশ্রুতি দিলেন।
তিনি বলেন, মাদক সেবন করতে গিয়ে রাসেল মানসিক ভারসাম্যহীন হয়ে পড়েছে। তার অত্যাচার থেকে রেহাই পায়নি মেঘডুবি এলাকার অনেকেই। স্থানীয় তাজবিউর রহমান মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মোহাম্মদ ইব্রাহিমকে ছুরি দিয়ে হত্যা, ক্যাবল অপারেটর আব্দুর রহমানকে এলাকা থেকে বহিষ্কার, আতাউর রহমান শামীমের অফিস দখল, মেঘডুবি উচ্চ বিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ বাবু অখিল কুমার বিশ্বাসের মোটরসাইকেল ছিনতাই, শেখ ইউসুফের মোটরসাইকেল। কলার বাজারের সাবেক সভাপতি আলীর পেটে ছুরিকাঘাত, তার প্রতিপক্ষ দিস রাসেল ব্যবসায়ী হারুনের পায়ের রগ কেটে নানা অপরাধ করেছে।
মাদকাসক্তের বিপথগামী ছেলেকে একটি স্বার্থান্বেষী মহল তার বিরুদ্ধে ব্যবহার করছে বলে অভিযোগ করেন শিরীষ।
৪৮ বছর পূবাইল এলাকার জনপ্রতিনিধি ছিলাম। আমার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ এবং বিএনপির কিছু লোকের প্ররোচনা ও আর্থিক সহায়তায় প্রভাবিত হয়ে রাসেল হেইনের এমন কোনো কাজ নেই যা তিনি করছেন না। রাসেল আমাকে রাজনৈতিকভাবে হেয় করে সমাজ, এলাকা ও দেশের মানুষের কাছে আমার অবস্থান নষ্ট করার জন্য নিরলস প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। আমি এবং আমার পরিবার ভীতিকর এবং অস্বাভাবিক পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছি, আমরা চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। ‘
শিরীষ জানান, এরই মধ্যে তিনি তার ছেলে রাসেলের নামে সংশ্লিষ্ট থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেছেন। প্রাণহানি ও মর্যাদাহানি বন্ধে প্রশাসন ও সরকারকে ব্যবস্থা নিতে বলেন তিনি।
শিরীষ আরও দাবি করেন, যারা আমাকে মানহানি ও রাজনৈতিকভাবে হয়রানি করার জন্য মিথ্যা ও কাল্পনিক অভিযোগ করেছেন তাদের আইনের আওতায় আনা হোক।
প্রসঙ্গত, গত ১৮ সেপ্টেম্বর পূবাইল থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি আজিজুর রহমান শিরীষের বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, জেলা প্রশাসক ও গাজীপুরের পুলিশ কমিশনারের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন তার বড় ছেলে রাসেল।
একই সঙ্গে রাসেল তার দুই ভাই মহানগর যুবলীগের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য রাজিবুল হাসান রাজীব ও হোসেনুর রহমান রুবেলের বিরুদ্ধেও অভিযোগ করেন।