ভাবি হয়ে নিজের দেবরকে দল থেকে বিদায় জানানোর ঘনটা সম্প্রতি গণমাধ্যম ও যোগাযোগ মাধ্যমে তুমুল আকারে ভাইরাল। জানা গেছে, রওশন এরশাদ যখন বিদেশে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ছিলেন তখনি সে এই সিদ্ধান্ত নেন। দলের অনেক নেতারা জিএম কাদেরের বিরুদ্ধে একের পর এক রওশন এরশাদের কাছে অভিযোগ তুলে ধরার পর তিনি এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছে বলে জানা যায়।
জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান এরশাদের দেবর জাপা চেয়ারম্যান জিএম কাদেরকে নভেম্বরে কাউন্সিল থেকে বিদায় জানাতে বেগম রওশন এরশাদ ডেকেছিলেন। থাইল্যান্ডে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি চিঠির মাধ্যমে এই পরিষদের ডাক দেন।
আগামী ২৬ নভেম্বর তিনি জাতীয় পার্টির দশম কাউন্সিল করবেন। কাউন্সিল উপলক্ষে গঠিত কমিটিতে রয়েছেন দলের কো-চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ এমপি, সাবেক মহাসচিব এবিএম, রুহুল আমিন হাওলাদার, কাজী ফিরোজ রশীদ, আবু হোসেন বাবলা, মো. মোঃ মুজিবুল হক চুন্নু, সালমা ইসলাম।
কাউন্সিলের উল্লিখিত নেতারা যুগ্ম আহ্বায়ক হবেন। এছাড়া এরশাদের রাজনৈতিক সচিব এরশাদ মুক্তি পরিষদের সাবেক সভাপতি ও দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য গোলাম মসীহকে সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির সদস্য সচিব হিসেবে নিয়োগ দেন।
রওশন এরশাদের রাজনৈতিক সচিব গোলাম মসীহ সারাবাংলাকে জানান, রওশন এরশাদ আগামী ২৬ নভেম্বর জাপার দশম কাউন্সিল অধিবেশন আহ্বান করেছেন। এ উপলক্ষে গঠিত কমিটিতে রওশন এরশাদ নিজেই আহ্বায়ক ও জাতীয় পার্টির আট সদস্যের কমিটি ঘোষণা করেছেন। আমাকে ওই কমিটির সদস্য সচিব করা হয়েছে।
রওশন এরশাদের কাউন্সিল আহ্বান প্রসঙ্গে জিএম কাদের সাংবাদিকদের বলেন, আমি এ বিষয়ে কিছু জানি না। আমাকে কিছু বলা হয়নি। শুধু তাই, দলীয় কাউন্সিল করার কোনো এখতিয়ার তার (রওশন এরশাদ) নেই।
পরিষদের আহবায়ক পত্রে বলা হয়েছে, আমি, বাংলাদেশের জাতীয় সংসদে বিরোধীদলীয় নেতা হিসেবে বেগম রওশন এরশাদ (এমপি) এবং জাতীয় পার্টির প্রধান পৃষ্ঠপোষক হিসেবে জাতীয় পার্টির দশম জাতীয় কাউন্সিল আহবান করছি। সংবিধান. জাতীয় পার্টির ক্ষমতা। কাউন্সিল ২৬ নভেম্বর, ২০২২ (শনিবার) সকাল ১০ টায় অনুষ্ঠিত হবে।
আমি দীর্ঘদিন ধরে ব্যাংকক সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল (সিএমএইচ) এবং বামরুনগ্রাদ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলাম। এ সময় দেখা যায়, জাতীয় পার্টির কাঠামোগত উদ্দেশ্য, বিধি-বিধান ও দলের মূল আদর্শ সঠিকভাবে পরিচালিত হচ্ছে না। বর্তমানে দলটি তার স্বীকৃত আদর্শ, নীতি ও নীতি থেকে দূরে সরে ভুল পথে যাচ্ছে।
রওশন এরশাদ দাবি করেন, জাতীয় পার্টি ২০১৪ সালের ২রা ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে দেশের সাংবিধানিক ধারাবাহিকতা রক্ষা করেছে এবং দেশের গণতান্ত্রিক পরিবেশ অক্ষুণ্ন রেখেছে।
জাতীয় পার্টিতে ঘটে যাওয়া অনেক ঘটনার জন্য জিএম কাদেরকে দায়ী করছে দলীয় নেতার। তাদের দাবি রওশন এরশাদের অবর্তমানে জাতীয় পার্টিকে ভুল দিকে নিয়ন্ত্রণ করে কাদের। রওশন এরশাদ চিকিৎসাধীন থাকাকালেই এসকল তথ্য তার কানে যায়। তবে অন্যদিকে জিএম কাদের দাবি করছে তাকে পদ থেকে সরানোর কোন এখতিয়ার রওশন এরশাদের নেই। এই নিয়েও শুরু হয়েছে তুমুল সমালোচনা। তবে এই ঘটনার শেষ কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে তা ২৬ নভেম্বর, ২০২২ তারিখেই সবার মাঝে স্পষ্ট হবে।