নানা ধরনের দাবি দাওয়া নিয়ে প্রায় সময় শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করে থাকে। তবে শনিবার ৩ দফা দাবিতে আন্দোলনে নামে শিক্ষার্থীরা। এই আন্দোলনকে ঘিরে বেশ বিপাকে পড়েছেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমদ। এমনকি তাকে বরখাস্ত করে নতুন উপাচার্য নিয়োগ চেয়ে গণস্বাক্ষর সংগ্রহ করছেন শিক্ষার্থীরা। এবার ফরিদ উদ্দিন আহমদকে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এক পোষ্ট দিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক কামরুল হাসান মামুন।
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশের হা/ম/লা/র ঘটনায় উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমেদকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছে শিক্ষার্থীরা। তারা বর্তমান উপাচার্যকে বরখাস্ত করে এবং নতুন উপাচার্য নিয়োগের জন্য গণস্বাক্ষর সংগ্রহ করে। অন্যদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ পরিস্থিতির জন্য আন্দোলনকারীদের দায়ী করেন উপাচার্য। এদিকে উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী ফরিদ উদ্দিন আহমেদ সম্পর্কে নতুন তথ্য দিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক কামরুল হাসান মামুন। তিনি তার ফেসবুক অ্যাকাউন্টে লিখেছেন, বিএনপি শাসনামলে শাবিপ্রবি ভিসি জিয়ার রাষ্ট্রপতি হওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিলেন। এটা ছিল বিএনপিপন্থী সাদা দল। সাদা দল থেকে ভিসি হওয়া প্রসঙ্গে কামরুল হাসান লিখেছেন, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি একজন অনন্য ভিসি। বিএনপি যখন ক্ষমতায় ছিল তখন এটা ছিল বিএনপিপন্থী সাদা দল। বিএনপি শাসনামলে আপনি জিয়াকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে চেয়ার করার প্রস্তাব দিয়েছিলেন শুনেছি। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ আসলে আওয়ামী লীগপন্থী নীল দলে যোগ দেয়। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিন এবং শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হন।
প্রশ্নপত্র ফাঁসের সঙ্গে উপাচার্যের জড়িত থাকার কথা অনেকেই বলেছেন উল্লেখ করে তিনি লিখেছেন, কেউ কেউ বলছেন তিনি প্রশ্নপত্র ফাঁসের সঙ্গে জড়িত। তিনিও একজন পোশাক ব্যবসায়ী। এই অধ্যাপকের পিএইচডি নেই। এত কিছুর পরও তিনি যে বর্তমান পদে আছেন তাই নয়, দ্বিতীয়বারের মতো নিয়োগও পেয়েছেন তিনি। এ পর্যন্ত ওই ভিসিদের টানা দ্বিতীয়বারের মতো ভিসি হতে দেখা গেছে যারা গোঁড়ামি ও কারসাজির মাধ্যমে সরকারের মন জয় করতে সক্ষম হয়েছেন। আর যারা দ্বিতীয়বার ভিসি হয়েছেন তারা দ্বিতীয় প্রান্তিকে প্রথমবারের চেয়ে খারাপ করেছে। উপাচার্যের শিক্ষাগত যোগ্যতা প্রসঙ্গে তিনি লিখেছেন, তিনি সরল মাস্টার্স পাস করেছেন। এই ডিগ্রি নিয়ে একজন বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপক হতে পারেন। কিন্তু তিনি হয়ে উঠেছেন একজন কলেজের অধ্যাপক, একজন ডিন, একজন ভিসি, একজন সফল পোশাক ব্যবসায়ী। এই সফল ব্যক্তি ভিসি হিসাবে এই মেয়াদ শেষে ‘সাফল্যের রহস্য’ শিরোনামে একটি গাইড লিখতে পারেন। তিনি একা নন। মাস্টার্স পাস করে একাধিক মাস্টার ইউজিসির সভাপতি ও সদস্য হয়েছেন। প্রশ্ন উঠছে নিয়োগকর্তাদের দেশপ্রেম নিয়ে যারা এ ধরনের লোকদের একাডেমিক পদে ভূষিত করে। আপনি কি চান আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম মানসম্মত শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে দেশকে সুন্দর করুক? ‘
প্রায় সময় দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে রাজনৈতিক ভাবে নানা ধরনের ঘটনা ঘটছে। এতে করে শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন ধরনের অসুবিধার সম্মুখীন হয়ে থাকে। গতকাল রবিবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে এক অপ্রতিকার ঘটনার সৃষ্টি হয়েছে। এই ঘটনায় পু/লি/শ আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর লাঠিচার্জ, রা/বা/র বু/লে/ট ও সা/উ/ন্ড গ্রে/নে/ড হা/ম/লা চালায়। এতে অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী আহত ও একজন শিক্ষক গুলিবিদ্ধ হন। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে অনির্দিষ্টকালের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করে সোমবার দুপুর ১২টার মধ্যে শিক্ষার্থীদের হল ত্যাগের নির্দেশ দেয় প্রশাসন।