বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রাক্তন সেনাপ্রধান জিয়াউর রহমান মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী সময়ে নানা ধরনের ষ”ড়যন্ত্র লিপ্ত হন যার কারণে বহুসংখ্যক মানুষকে নিথর করে দেওয়া হয় এমন দাবি করেছে ‘মায়ের কান্না’ নামের একটি সংগঠন। জিয়াউর রহমানের প্রয়ানের পর তাকে জাতীয় সংসদ এলাকার চন্দ্রিমা উদ্যানে সমাধিস্থ করা হয়। এবার তার কবরস্থান চন্দ্রিমা উদ্যান থেকে অপসারনের দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি। এর আগেও জিয়াউর রহমানের কাবরস্থান সরানোর দাবি ওঠে।
সংসদ ভবন এলাকার চন্দ্রিমা উদ্যান থেকে সাবেক সামরিক শাসক জিয়াউর রহমানের কবর সরানোর দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি। গতকাল চন্দ্রিমা উদ্যানে এক মানববন্ধনে সংগঠনটি জানায়, অবিলম্বে চন্দ্রিমা উদ্যান থেকে জিয়ার কবর সরানো না হলে তারা নিজেরাই এই কবর অপসারণের উদ্যোগ নেবে। মানববন্ধনে ১৯৭৭ সালের ২ অক্টোবর সে’না ও বিমান বাহিনীর সদস্যদের ফাঁ’/’সি দেওয়ার দায়ে জিয়াউর রহমানের মরণোত্তর বিচার দাবি করেছে তাদের পরিবার। নিহ”/তদের সহায়তা ও হ”/ত্যাকারীদের বিচারের দাবিতে মানববন্ধন শেষে বিক্ষোভ মিছিল করা হয়।
মানববন্ধনে উপস্থিত বিচারপতি এএইচএম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক বলেন, জিয়া মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানের গুপ্তচর হিসেবে কাজ করেছিলেন। তিনি ভারতে গিয়েছিলেন মূলত পাকিস্তানের গুপ্তচর হিসেবে। তাই জিয়া সুযোগ পেলেই পাকিস্তানিদের নির্দেশে মুক্তিযোদ্ধাদের নির্ম”/মভাবে হ”/ত্যা করেন। বিচারের নামে বহু মানুষকে হ”/ত্যা করেছেন। তিনি বলেন, জিয়া যে দল গড়ে তুলেছিলেন তার ব্যানারে রাজনীতি করার অধিকার কারো নেই। জামায়াত ও বিএনপির মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই। এই দুটি গ্রুপই স্বাধীনতাবিরোধী সংগঠন হিসেবে পরিচিত। বিএনপিকে বিলুপ্ত করার দাবি জানান বিচারপতি মানিক। প্রয়াত কর্নেল নাজমুল হুদার মেয়ে সংসদ সদস্য নাহিদা ইজাহার খান বলেন, ৪৭ বছর আগে জিয়া আমাদের বাবাকে নির্ম”/মভাবে হ”/ত্যা করেছিলেন। একজন খু”/নির লা”/শ সংসদ ভবনের মতো পবিত্র জায়গায় রাখা যাবে না। জিয়াসহ সকল যু”দ্ধাপরাধীর কবর এখান থেকে সরাতে হবে। এছাড়া ক্ষতিগ্রস্তদের আর্থিক সহায়তা দেওয়ার জোরালো দাবি জানান তিনি।
মানববন্ধনে বক্তারা আরও বলেন, ওই সময় বি”দ্রোহ দম”নের নামে সাম’/রিক বাহিনীর প্রায় দেড় হাজার সদস্যকে অন্যায়ভাবে ফাঁ”/সিসহ বিভিন্ন শাস্তি দেওয়া হয়। ইতিহাসে এটি একটি লজ্জাজনক ঘটনা। সে’না ও বিমান বাহিনীর সদস্যদের স্বজনরা উল্লেখ করেন, জিয়াউর রহমান তার ক্ষমতা পাকাপোক্ত করতে এ হ”/ত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছেন।
মৃ”/ত্যুদণ্ডপ্রাপ্তদের স্বজনরা জানান, তথাকথিত বিদ্রো’/হ দম’নের নামে জিয়াউর রহমানকে এক দিনের জন্য সা”মরিক আদালতে বিচার করা হয় এবং একই রাতে ঢাকা, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, রংপুর, যশোর ও বগুড়া কেন্দ্রীয় কারাগা’রে ফাঁ”/সি দেওয়া হয়। রাতের অন্ধকারে কারফিউতে মৃ”/ত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়। ঢাকার আজিমপুর কবরস্থানে এবং কুমিল্লার টিক্কারচর কবরস্থানে কোনো প্রকার ধর্মীয় দাহ ছাড়াই লা”/শ দাফন করা হয়। সাম’রিক শাসক জেনারেল জিয়াউর রহমানের নির্দেশে গঠিত বিশেষ সা”মরিক ট্রাইব্যুনালের কথিত বিচারে ফাঁ”সি হওয়া ১৯৩ জনের নাম ও পরিচয় পাওয়া গেছে। কিন্তু প্রয়াতের সংখ্যা ছিল ১১৪৩, এবং সে’না ও বিমান বাহিনীর ২৫০০ সদস্যকে বন্দী করা হয়।
মানববন্ধনে আরও উপস্থিত ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা মেজর জেনারেল হেলাল মোর্শেদ খান বীর বিক্রম, ১৯৭৭ সালে ফাঁ”/সি হওয়া শহীদ মেজর জেনারেল খালেদ মোশাররফের কন্যা মাহজাবিন খালেদের সন্তান ও পরিবারের সদস্যরা।
এদিকে জিয়াউর রহমানের কবরের সরানোর দাবি নিয়ে বিএনপি’র পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, রাজনৈতিক প্রতিহিং’সার কারণে বাংলাদেশের সাবেক প্রেসিডেন্ট এবং প্রাক্তন সেনাপ্রধান জিয়াউর রহমানের কবর সরানোর দাবি করা হচ্ছে। এটা কোনোভাবে বিএনপি মেনে নেবে না। তিনি ছিলেন বাংলাদেশের একজন মুক্তিযোদ্ধা এবং বিশিষ্টজন। তার কবরস্থান সরানো শুধুমাত্র রাজনৈতিক চাল ছাড়া কিছুই নয়।