সন্তানকে ফিরে পেতে আল্লাহর কাছে কান্নাকাটি করছেন তারেকুলের বাবা-মা। বুধবার (১৩ মার্চ) দুপুরে ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলার চকরিকান্দি গ্রামের বাড়িতে গিয়ে তারেকুলের বাবা-মায়ের সঙ্গে কথা হয়।
ঘরে ঢুকতেই দরজার সামনে দাঁড়িয়ে দেখা গেল- তারেকুলের বাবা দেলোয়ার হোসেন কোরান তেলাওয়াত করছেন। কান্না থামছে না তরিকুলের মা হাসিনা বেগমের। ছেলের ছবি দেখে তিনি কাঁদছেন এবং তাকে ফিরিয়ে আনতে সরকারের কাছে বার্তা পাঠাতে অনুরোধ করছেন।
তারেকুলের বাবা দেলোয়ার হোসেন জানান, তারেকুলের সঙ্গে টেক্সট মেসেজের মাধ্যমে কথা বলতেন। হঠাৎ সে মেসেজ দেয়, “আব্বু আমাকে ক্ষমা করে দাও”। এই বার্তা পাওয়ার পর আমি চিন্তিত হয়ে পড়লাম। এরপর বড় ছেলের কাছ থেকে জানতে পারি তারেকুলের জাহাজ জলদস্যুরা জিম্মি করেছে। এরপর আর কোনো যোগাযোগ নেই। আজ সকালে একটা ম্যাসেজ দিয়েছে একটি ক্যানেলের মধ্যে নিয়ে যাওয়া হয়েছে তাদের। আর কোনো যোগাযোগ করতে পারি নাই।
তিনি আরও বলেন, শিপিং কোম্পানির সঙ্গে কথা হয়েছে, তারা এখনও কিছু বলতে পারছেন না। সুস্থভাবে ছেলেকে ফিরে পেতে সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
তারিকুলের মা কান্নাজড়িত কন্ঠে বলেন, সাত বছর বয়স থেকে কখনো নামাজ-রোজা কামাই করেনি তারেক।
বাড়িতে ভিড় করছেন আত্মীয়-স্বজন ও প্রতিবেশীরা। তাদের একটাই চাওয়া যে কোন মূল্যে তাদের প্রিয় তারেকুলকে ফিরিয়ে আনা হোক।
অবসরপ্রাপ্ত কর্মচারী দেলোয়ার হোসেনের দুই ছেলে ও এক মেয়ের মধ্যে সবার ছোট তারেকুল ইসলাম। তিনি মিরপুরের ডা. মোঃ শহীদুল্লাহ কলেজিয়েট স্কুল থেকে এসএসসি ও এইচএসসি পাস করেন। তিনি ২০১২ সালে চট্টগ্রাম মেরিন একাডেমিতে ভর্তি হন। ২০১৪ সালে নটিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করে চাকরিতে যোগ দেন।
সর্বশেষ গত বছরের ডিসেম্বরে নতুন করে যোগ দিয়েছিলেন ভারত মহাসাগরে সোমালিয়ার জলদস্যুদের কবলে পড়া গোল্ডেন হক নামে বাংলাদেশী জাহাজ এমভি আবদুল্লাহর থার্ড অফিসার হিসেবে।
পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, তারেকুলের বিয়ে হয় ২৫ ডিসেম্বর, ২০১৯। তারেকুলের এক বছর এক মাস বয়সী একটি মেয়ে রয়েছে। বর্তমানে তারেকুলের স্ত্রী ও সন্তানরা বাবার বাড়িতে অবস্থান করছেন।