কারাবন্দি পরিমনি, তার নামে একটি মামলা হয়েছে। আর এই মামলার জের ধরেই তাকে নেয়া হয়েছে তিন দফা রিমান্ডে। আর এই রিমান্ডে থেকেই তিনি দিচ্ছেন নানা ধরনের সব তথ্য। নায়িকা পরীমণি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের অন্তরালে বিভিন্ন অনৈতিক কাজের সঙ্গে সম্পৃক্তের বিভিন্ন তথ্য-প্রমাণ পেয়েছে পুলিশের সিআইডি। রাজধানীর বনানী থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে দায়ের মামলায় পরীমণির ৫ দিনের রিমান্ড আবেদনে এমনটাই উল্লেখ করেছে তদন্তকারী সংস্থাটি।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক কাজী গোলাম মোস্তফা রিমান্ড আবেদনে বলেন, ‘পরীমণিকে রিমান্ডে নিয়ে ঘটনার বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদের শেষ দিকে আসামি মামলার ঘটনা ও ঘটনার নেপথ্যে মূল হোতাদের বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছেন। মামলার সুষ্ঠু তদন্ত ও ন্যায়বিচারের স্বার্থে তার দেওয়া তথ্য-উপাত্ত যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। এ অবস্থায় মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে পরীমণিকে ইতোপূর্বে আদালতের আদেশে পুলিশ রিমান্ডে পেয়ে জিজ্ঞাসাবাদে যেসব তথ্য পাওয়া গেছে, তার সঠিকতাসহ মাদক ব্যবসার মূল হোতাদের গ্রেপ্তার, মাদকদ্রব্যের মজুদ উদ্ধারসহ মাদক ব্যবসার পেছনে অর্থের যোগানদাতাদের খুঁজে বের করার জন্য পুনরায় ৫ দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা একান্ত প্রয়োজন।’
রিমান্ড আবেদনে আরও বলা হয়, ‘পরীমণিকে রিমান্ডে পাওয়া গেলে মাদক ব্যবসায়ী মূল হোতাদের গ্রেপ্তার, মাদকদ্রব্যের অবৈধ উৎসসহ অপরাধীদের সন্ধান পাওয়া সম্ভব হবে। পরীমণি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের অন্তরালে বিভিন্ন অনৈতিক কাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত আছেন মর্মে সাক্ষ্য-প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে।’
উল্লেখ্য, গেল ৪ আগস্ট পরীমণিকে তার বনানীর বাসা থেকে আটক করে র্যাব। অভিযানে নতুন মাদক এলএসডি, মদ ও আইস উদ্ধার করা হয় বলে দাবি করে তারা। তার ড্রয়িংরুমের কাবার্ড, শোকেস, ডাইনিংরুম এবং বেডরুমের সাইড টেবিল ও টয়লেট থেকে বিপুল মদের বোতল উদ্ধার করা হয় বলেও দাবি করা হয়। পরদিন বিকেলে পরীমণি, প্রযোজক ও অভিনেতা মো. নজরুল ইসলাম রাজ এবং তাদের দুই সহযোগী আশরাফুল ইসলাম দীপু ও মো. সবুজ আলীকে বনানী থানায় সোপর্দ করে র্যাব।
এরপর র্যাব বাদী হয়ে রাজধানীর বনানী থানায় পরীমণি ও তার সহযোগী দীপুর বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা করে৷ রাত ৮টা ২৪ মিনিটে পরীমণি ও তার সহযোগীকে ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করা হয়। এরপর বনানী থানার মামলায় তাদের ৭ দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। এ সময় আসামিপক্ষে তাদের আইনজীবী রিমান্ড বাতিল চেয়ে আবেদন করেন। অন্যদিকে, রাষ্ট্রপক্ষ রিমান্ডের পক্ষে শুনানি করেন। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে আদালত তাদের ৪ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এরপর ১০ আগস্ট পরীমণি ও তার সহযোগী দীপুকে আদালতে হাজির করে ফের ৫ দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করে মামলার তদন্ত সংস্থা সিআইডি। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে আদালত তাদের দুই দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এর আগে দুই দফা রিমান্ডে নেয়া তাকে। ১৩ ই আগষ্ট দ্বিতীয় বারের মত রিমান্ডে নেয়া হয় তাকে। আর সে সময়ে তার সহকারী দিপুও ছিলেন তার সাথে। সে সময়ে আদালতে হাজির করা হলে আদালত তাদের জামিন আবেদন খারিজ করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।