লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) চৌধুরী হাসান সারওয়ার্দী আট দিনের রিমান্ডে আছেন। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশকে চাঞ্চল্যকর তথ্য দেন। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের কথিত উপদেষ্টা মিয়া আরেফিকে জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদ করবে ডিবি।
সারওয়ার্দীর দেওয়া তথ্য যাচাইয়ের জন্য মঙ্গলবার (৭ নভেম্বর) দুপুরে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের প্রধান অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশিদের নেতৃত্বে চার সদস্যের একটি দল কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে যায়।
ডিবির একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র জাগো দেশের একটি জনপ্রিয় সংবাদমাধ্যমকে জানায়, গ্রেফতারকৃত লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) চৌধুরী হাসান সারওয়ার্দীকে জিজ্ঞাসাবাদে চাঞ্চল্যকর তথ্য পাওয়া গেছে। জো বাইডেনের কথিত উপদেষ্টা মিয়ান আরেফিকে সেই তথ্য যাচাই করার জন্য জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। এ জন্য ডিবির একটি দল কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে যায়।
এর আগে রাজধানীর পল্টন থানার মামলায় আসামি মিয়া আরেফির পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। বৃহস্পতিবার ঢাকার মহানগর হাকিম নুরুল হুদা চৌধুরীর আদালত এ রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
কাশিমপুর কারাগার থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে মিয়া আরেফিকে আদালতে হাজির করা হয়।
গত ২৯ অক্টোবর রাজধানীর পল্টন থানায় মহিউদ্দিন শিকদার নামে এক ব্যক্তি মিথ্যাচার করে দেশকে অস্থিতিশীল করার অভিযোগে মামলা করেন। মামলায় মিয়া আরেফিসহ অবসরপ্রাপ্ত লে. জেনারেল হাসান সারওয়ার্দী ও বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনকে আসামি করা হয়েছে। এরপর গত মঙ্গলবার সাভার থেকে অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল হাসান সারওয়ার্দীকে গ্রেপ্তার করে ডিবি পুলিশ। বুধবার হাসান সারওয়ার্দীর আট দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।
মামলার এজাহারে বলা হয়, পূর্বঘোষিত গণসমাবেশ উপলক্ষে গত ২৮ অক্টোবর দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে সারাদেশ থেকে দলটির নেতাকর্মীরা নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জড়ো হতে থাকেন। ওইদিন বিক্ষুব্ধ বিএনপি নেতাকর্মীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। একপর্যায়ে কাকরাইল মোড় থেকে আরামবাগ মোড় পর্যন্ত পুলিশের সঙ্গে বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীদের সং/ঘর্ষ হয়। তারা সরকারি ভবন ও সরকারি যানবাহন, প্রধান বিচারপতির সরকারি বাসভবনসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে আ/গুন দেয়। এতে পুলিশের ৪১ সদস্য আহত ও একজন নি/হত হন। একপর্যায়ে বেলা ৩টার দিকে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা সাধারণ সভা স্থগিত ঘোষণা করেন।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, সন্ধ্যা ৬টা থেকে ৭টার মধ্যে বিএনপির তৎপরতা শেষে আসামি মিয়া আরেফি, হাসান সারওয়ার্দী ও বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনের নেতৃত্বে ২০ জন নেতাকর্মী গণমাধ্যমের সামনে হাজির হন। অভিযুক্ত নং ১ মিয়ান আরাফি নিজেকে বাইডেনের উপদেষ্টা হিসেবে পরিচয় দেন। তিনি বলেন, তিনি তার সরকারকে বাংলাদেশ পুলিশ, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং আইন ও বিচার বিভাগ নি/ষিদ্ধ করার সুপারিশ করেছেন।
অভিযুক্ত নং ১ তার বক্তৃতায় দাবি করেছেন যে মার্কিন রাষ্ট্রপতির সাথে তার ১০ থেকে ১৫ টি যোগাযোগ রয়েছে এবং মার্কিন সরকারের সবাই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের পক্ষে। অভিযুক্ত আরও দাবি করেছেন যে তিনি মার্কিন দূতাবাসের সাথে কথা বলেছেন এবং বাংলাদেশের পরিস্থিতি সম্পর্কে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরকেও জানিয়েছেন।
বিবৃতিতে বাদী আরও অভিযোগ করেন, আসামি ২ নং হাসান সারওয়ার্দী ও ৩ নং আসামি ইশরাক হোসেন মিয়া আরাফিকে মিথ্যা বক্তব্য দিতে সহায়তা করেছেন এবং তার বক্তব্য সমর্থন করে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটাতে বিএনপি নেতাকর্মীদের উস্কানি দিয়েছেন। এক নম্বর আসামি অন্য আসামিদের সহায়তায় সরকারের প্রতি বিদ্বেষ সৃষ্টি করে সারাদেশে নেতাকর্মীদের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি করে।
বিবৃতিতে বলা হয়, ওই সংবাদ সম্মেলনের একপর্যায়ে ১ নম্বর আসামির বক্তব্য শুনে এবং ভিডিও দেখে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতি হয়।