বাংলাদেশের বিপুল সংখ্যক ধর্মপ্রাণ মুসলমান প্রতিবছর হজ পালন করতে সৌদি আরবে গিয়ে থাকেন। তাদের সৌদি আরব আনা নেওয়ার জন্য সাধারনত পরিবহন হিসেবে বিমান পরিবহন ব্যবস্থা চালু রয়েছে। তবে এবার জাহাজে করে হজযাত্রীদের সৌদি আরবে আনা নেওয়ার প্রস্তাব করেছে দেশের একটি স্বনামধন্য শিপ বিল্ডার্স কোম্পানি। কক্সবাজারের টেকনাফ থেকে পর্যটকদের সেন্টমার্টিন আনা নেওয়া করা কর্ণফুলী শিপ বিল্ডার্স লিমিটেড জাহাজে করে হজযাত্রীদের সৌদি আরবে পাঠানোর এই প্রস্তাব দিয়েছে।
বাংলাদেশের হজযাত্রীদের জন্য সমুদ্রপথে জাহাজ নামাতে চায় এই সংস্থা। কর্ণফুলী শিপ বিল্ডার্স লিমিটেড বলছে, জাহাজটি চট্টগ্রাম বন্দর থেকে সৌদি আরবের জেদ্দা বন্দরে যেতে ১০ দিন সময় লাগবে।
ভ্রমণ ও হজের আনুষ্ঠানিকতাসহ একজন হজযাত্রীর মোট সময় হবে ৩৭ দিন। জাহাজে গেলে প্লেনের চেয়ে খরচ পড়বে এক থেকে দেড় লাখ টাকা কম।
কোম্পানিটি সমুদ্রপথে জাহাজ পরিচালনার অনুমতি চেয়ে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেছে। গত ২৯ জানুয়ারি সচিবালয়ে এ প্রস্তাব নিয়ে আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠক হয়।
নৌ-পরিবহন সচিব মোস্তফা কামালের সভাপতিত্বে বৈঠকে সমুদ্রপথে হজ করার পক্ষে-বিপক্ষে মত রয়েছে। কেউ কেউ বলেন জাহাজে হজে যাওয়া ইতিবাচক। কেউ কেউ বিভিন্ন চ্যালেঞ্জও তুলে ধরেছেন। সৌদি আরব সরকার সমুদ্রপথে এর অনুমতি দেবে কিনা তা নিশ্চিত নয়।
নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে প্রধানমন্ত্রীর কাছে প্রস্তাব পাঠানো হবে। সেখান থেকে ইতিবাচক সাড়া পেলে সৌদি সরকারের সঙ্গে আলোচনা শুরু হবে। দেশ রাজি হলে অন্যান্য প্রক্রিয়া শুরু হবে।
নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলছেন, আশির দশকে বাংলাদেশ থেকে জাহাজে করে হজযাত্রীরা সৌদি আরব যেতেন। জাহাজে যেতে তিন মাস সময় লাগত। একপর্যায়ে তা বন্ধ হয়ে যায়।
নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের তথ্য বলছে, ২০১৮ সাল থেকে সমুদ্রপথে শুধু সুদানের মানুষই হজ করছেন। সুদান থেকে মানুষ জাহাজে হজ করতে গিয়ে থাকেন। অতীতেও হজ পালন করতে সুদান ও এ অঞ্চলের অন্যান্য দেশ থেকে অনেক মানুষ জাহাজে করে মক্কায় গেছেন। যাত্রাটি দীর্ঘ এবং চ্যালেঞ্জিং হলেও, অনেক তীর্থযাত্রী এটিকে একটি আধ্যাত্মিক যাত্রা হিসাবে দেখেন যা তাদের সৃষ্টিকর্তার কাছাকাছি নিয়ে আসে।