গত ২৮ জানুয়ারি থেকে শিল্পী সমিতির নির্বাচন নিয়ে উঠে এসেছে নানা রকমের চাঞ্চল্যকর তথ্য। শিল্পী সমিতির নির্বাচনে সাধারণ সম্পাদক পদে প্রথমে জায়েদ বিজয়ী হন। জায়েদের বিজয়ী মেনে নিতে না পেরে নিপুন আদালতের দ্বারস্থ হন এবং আদালতে নির্বাচনের দুর্নীতির প্রমাণ করতে পেরে, জায়েদ খান ( Zayed Khan )কে আসন থেকে সরিয়ে নিজে সাধারণ সম্পাদকের চেয়ার দখল করতে সক্ষম হন। তবে নিপুনের বিজয়ীর ঘোষণাকে অবৈধ বলে দাবি করে হাইকোর্টে আপিল করেন জায়েদ ।
আপেলের পরিপ্রেক্ষিতে বিগত কয়েক দিন আগে জায়েদকে ( Zayed ) হাইকোর্ট বিজয়ী করেছেন, এমন একটি হাইকোর্টের ( High Court ) আদেশের কপি ইলিয়াস কাঞ্চনকে দেখিয়ে আবারো সাধারণ সম্পাদকের চেয়ারে বসেন জায়েদ। নবনির্বাচিত শিল্পী সমিতির সভাপতি ইলিয়াস কাঞ্চন ( Elias Kanchan Zayed ) জায়েদকে ( Zayed ) শপথ বাক্য ও পাঠ করান। এই বিষয়টিকে ঘিরে ১৮ সংগঠনের নেতাদের মধ্যে বিতর্ক সৃষ্টি হয় এবং এক পর্যায়ে জাহিদকে তারা বয়কট করার সিদ্ধান্ত নেয়। অতঃপর তারা আদালতের আদেশ সম্পর্কে তদন্ত শুরু করেন।
আসলেই জায়েদ সাধারণ সম্পাদকের পদে বিজয়ীর যে আদেশনামা ইলিয়াসকে দেখিয়েছেন সেটি সঠিক কিনা তা যাচাই করেন। তারপরে উঠে আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য। ভুয়া কাগজ দেখিয়ে জাহেদ সাধারণ সম্পাদক হিসাবে শপথ বাক্য পাঠ করেন। তবে ভুয়া কাগজপত্র দেখানোর জন্য ইলিয়াস কাঞ্চন আবারো জায়েদকে ( Zayed ) চেয়ার থেকে সরিয়ে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব সাইমন সাদিককে ( Simon Sadiq ) পালন করতে নির্দেশ দেয়। গত সোমবার এফডিসিতে ( FDC ) আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে শিল্পী সমিতির সভাপতি এ নির্দেশ দেন।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, যেহেতু সাধারণ সম্পাদক পদে আদালতের স্থিতাবস্থা রয়েছে, তাই এ পদের যে কার্যক্রম তা চালিয়ে নেবেন সাইমন সাদিক। তিনি আমাদের নির্বাচিত সহ-সাধারণ সম্পাদক। গঠনতন্ত্র অনুযায়ী সাধারণ সম্পাদকের অনুপস্থিতিতে দায়িত্ব পালন করবেন সাইমন।
সম্মেলনে ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, জায়েদ খান ( Zayed Khan ) আদালতের জাল কাগজপত্র দেখিয়ে শপথ নিয়েছেন। তিনি আমার সঙ্গে এবং মিডিয়ার সঙ্গেও প্রতারণা করেছেন। তাই আমি তার শপথ গ্রহণকে অবৈধ ঘোষণা করেছি। ‘
চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সভাপতি বলেন, সমিতির নিয়মানুযায়ী শপথ গ্রহণের দিন কমিটির সাত সদস্যের উপস্থিতিতে কোরাম পূর্ণ হলেও ওইদিন শপথ গ্রহণের কারণে কোরাম অপূর্ণ ছিল। জায়েদ খান ( Zayed Khan )ের বাতিল করা হয়েছে।” তাই সেই বৈঠকও বাতিল করা হয়েছে। ‘
নিপুন আক্তারের আবেদনের শুনানি নিয়ে চেম্বার জজ তাকে শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক পদে থাকতে নিষেধ করেন। ফলে নিপুন ও জায়েদ কেউই এই পদে দায়িত্ব পালন করবেন না। আগামী ৪ এপ্রিল মামলার রায় ঘোষণার জন্য দিন ধার্য করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, বিগত কিছুদিন আগে হাইকোর্টের ( High Court ) একটি ভুয়া কাগজ দেখিয়ে জায়েদ খান ( Zayed Khan ) নিজেকে প্রমাণ করেন সাধারণ সম্পাদক পদে হাইকোর্ট তাকে বিজয়ী ঘোষনা করেছেন। তার ছলনায় পা দিয়ে নবনির্বাচিত শিল্পী সমিতির সভাপতি ইলিয়াস কাঞ্চন তাকে সংবাদ মাধ্যমের উপস্থিতিতে আনুষ্ঠানিকতার মধ্য দিয়ে শপথ বাক্য পাঠ করান। তারপর জায়েদ সংবাদমাধ্যমকে ( Zayed media ) তার বিজয়ী হওয়ার কাগজও দেখান।
একজন শিল্পী হয়ে এমন অপ্রত্যাশিত নাটকীয় ঘটনা তৈরি করার বিষয়টি মেনে নিতে পারছেন না অনেকেই। তবে জায়েদখান কেন এমন ভুয়া কাগজ দেখাল সে বিষয়ে তার মুখ থেকে এখনো পর্যন্ত কোন তথ্য পাওয়া যায় নাই। নবনির্বাচিত সভাপতি ইলিয়াস কাঞ্চনও এ বিষয়ে কোনো তথ্য প্রকাশ করেনি। জায়েদের বিরুদ্ধে কোন প্রকার আইনি ব্যবস্থা নাওয়া হবে কিনা তা এখনো অস্পষ্ট।