সম্প্রতি ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালি প্রতারনা মামলায় আলোচনার শীর্ষে আসেন তাহসান খান, রাফিয়াত রশিদ মিথিলা ও শবনম ফারিয়াসহ ৯ জন জনপ্রীয় অভিনেতা। অভিযোগ এসেছে গ্রাহকের টাকা আত্মসাতের মত নেক্কার জনক ঘটনার। যদিও অভিনেতারা বরাবর বলে আসছিল তারা নির্দোষ। তবে আদালত থেকে কোনো কিছু বলা বা করার আগেই অভিনেত্রী নিথিলা জামিনের আবেদন করে বসে ছিলেন। তারই ফলশ্রুতিতে আজ আদালত থেকে জামিন পাওয়ার পর তিনি মিডিয়াকে বললেন আরো অনেক কথা। ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালির প্রতারণামূলক কর্মকাণ্ডে সহযোগিতা ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগের মামলায় অভিনেত্রী রাফিয়াত রশিদ মিথিলাকে ৮ সপ্তাহের জামিন দিয়েছেন হাইকোর্ট। সোমবার বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন সেলিম ও বিচারপতি মো. আতোয়ার রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। জামিন পেয়ে গণমাধ্যমকর্মীদের মিথিলা বলেন, মহামান্য আদালত বলেছেন, যেই মামলাটি আমার বিরুদ্ধে করা হয়েছে, সেটার আসলে খুব একটা ভিত্তি নেই, ভিত্তিটা স্ট্রং না। সেই কারণে আমাকে জামিন দিয়েছেন। আইনের প্রতি আমার আস্থা আছে। আমি আশা করছি যে, শিল্পীরা হয়রানির শিকার হবে না। শুধু এখন নয়, ভবিষ্যতেও। তিনি আরও বলেন, আমি যখন ইভ্যালিতে যুক্ত হয়েছি, তার আগেও ইভ্যালিতে ৪০ লাখ গ্রাহক ছিল। তারা যেভাবে আস্তা রেখেছে, আমিও সেভাবে রেখেছি। এর আগে রোববার জামিন আবেদন করেন মিথিলার আইনজীবীরা। তার পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী ইমতিয়াজ ফারুক। ৪ ডিসেম্বর রাজধানীর ধানমন্ডি থানায় সাদ স্যাম রহমান নামে ইভ্যালির এক গ্রাহক তাহসান খান, রাফিয়াত রশিদ মিথিলা ও শবনম ফারিয়াসহ ৯ জনের নামে মামলা করেন। মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, প্রতারণামূলকভাবে গ্রাহকদের টাকা আত্মসাৎ ও সহায়তা করা হয়েছে। আত্মসাৎ করা টাকার পরিমাণ ৩ লাখ ১৮ হাজার টাকা, যা উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। ধানমন্ডি থানার ওসি মো. ইকরাম আলী মিয়া বলেন, সাদ স্যাম রহমান নামে ইভ্যালির এক গ্রাহক শনিবার (১১ ডিসেম্বর) ধানমন্ডি থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলায় ইভ্যালির এমডি মোহাম্মদ রাসেল, চেয়ারম্যান শামীমা নাসরিন, জনপ্রিয় তারকা তাহসান খান, রাফিয়াত রশিদ মিথিলা ও শবনম ফারিয়াসহ ৯ জনকে আসামি করা হয়েছে। এই মামলায় ইভ্যালির এমডি মোহাম্মদ রাসেল ও চেয়ারম্যান শামীমা নাসরিনকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। বাকিদের বিষয়ে তদন্ত চলছে। মামলায় বাদী কী অভিযোগ করেছেন, জানতে চাইলে ওসি বলেন, মামলার আসামিরা তার ৩ লাখ ১৮ হাজার টাকা আত্মসাৎ ও এর কাজে সাহায্য করেছে। তার ওই টাকা এখনও উদ্ধার করতে পারেননি ভুক্তভোগী। তাই বাধ্য হয়ে থানায় এই মামলাটি করেছেন ভুক্তভোগী সাদ স্যাম। জানা যায়, আলোচিত-সমালোচিত ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানে গায়ক-অভিনেতা তাহসান খান শুভেচ্ছাদূত হিসেবে যুক্ত ছিলেন। আর রাফিয়াত রশিদ মিথিলা ইভ্যালির ‘ফেস অব ইভ্যালি লাইফস্টাইল’ শুভেচ্ছাদূত হিসেবে যুক্ত ছিলেন। এছাড়া প্রধান জনসংযোগ কর্মকর্তা হিসেবে যোগ দেন অভিনেত্রী শবনম ফারিয়া। তবে ইভ্যালির বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের কারণে গত জুনে বড় অঙ্কের বেতনে ইভ্যালির প্রধান জনসংযোগ কর্মকর্তা হিসেবেযোগ দেন অভিনেত্রী শবনম ফারিয়া। তবে ইভ্যালির বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের কারণে গত জুনে বড় অঙ্কের বেতনে ইভ্যালির প্রধান জনসংযোগ কর্মকর্তা হিসেবে যোগ দেওয়া শবনম ফারিয়ার বেতনের অধিকাংশ বকেয়া। অন্যদিকে, ১০ মার্চ ইভ্যালির ‘ফেইস অব ইভ্যালি’ (শুভেচ্ছাদূত) ঘোষণা করা হয় তাহসানকে। তিনি শুভেচ্ছাদূত হওয়ার পরের মাস থেকে প্রতিষ্ঠানটি বিতর্কিত কর্মকাণ্ড ও গ্রাহকের পণ্য সময় মতো পৌঁছে না দিতে পারায় তোপের মুখে পড়ে। সবদিক বিবেচনা করে মে মাসের মাঝামাঝি সময় ইভ্যালি থেকে স্বেচ্ছায় সরে যান তাহসান। একই পথে হাঁটেন রাফিয়াত রশিদ মিথিলা। আদালত বলেছে তাদের বিরুদ্ধে করা অভিযোগের ভিত্তি খুবই সামান্য। তবে পুর তদন্ত শেষ না হলে পুরোপুরি নিশ্চিতভাবে কিছু হয়ত বলা যাবেনা বা সঠিক ঘটনা টা জানা যাবেনা। ইভ্যালির প্রতারণামূলক কর্মকাণ্ড দিন যতই যাচ্ছে ততই যেন ঘোলাটে হচ্ছে। তবে এর শেষ কোথায়! আসলেই কি এসব অভিনেতা অভিনেত্রীরা এই কর্মকান্ডের সাথে জড়িত! এসব প্রশ্নের উত্তর পেতে গেলে আমাদের অপেক্ষা করতে হবে আরো। দরকার শুষ্ঠু তদন্তের শুষ্ঠু বিচারের তবেই বলা যাবে বা জানা যাবে আসল ঘটনা কি। তবে ভোক্তারা কি তাদের প্রাপ্য পণ্য বা টাকা ফেরত পাবে কিনা এটা অনেকটাই অনিশ্চিত।
Check Also
দুই বাংলার জনপ্রিয় অভিনেত্রী মিথিলার দাম্পত্যে ভাঙনের সুর
দুই বাংলার জনপ্রিয় অভিনেত্রী রাফিয়াত রশিদ মিথিলা এবং পশ্চিমবঙ্গের খ্যাতনামা পরিচালক সৃজিত মুখার্জির দাম্পত্য জীবনে …