Thursday , November 14 2024
Breaking News
Home / Countrywide / জামায়াতের সাথে ঐক্য গড়বে কিনা, যা ভাবছে গণতন্ত্র মঞ্চ ও সমমনা দল-জোট

জামায়াতের সাথে ঐক্য গড়বে কিনা, যা ভাবছে গণতন্ত্র মঞ্চ ও সমমনা দল-জোট

একদফা দাবিতে একযোগে আন্দোলনে না থাকলেও বিএনপির সঙ্গে ঐক্যবদ্ধ হয়ে অভিন্ন কর্মসূচি পালন করে আসছে জামায়াতে ইসলামী। সরকারের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলনের চূড়ান্ত পর্যায়ে ঐক্যবদ্ধভাবে মাঠে নামতে চায় এই দুই দল।

এ নিয়ে তারা একাধিক বৈঠকও করেছেন। জামায়াতকে সঙ্গ দেওয়ার জন্য ইতিমধ্যে একযোগে আন্দোলনে থাকা শরিকদের কাছেও দুটি প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। কিন্তু গণতন্ত্র মঞ্চ একমঞ্চে আন্দোলনে আপত্তি জানায়। তবে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার এবং জনগণের ভোটাধিকার ফিরিয়ে দেওয়ার বৃহত্তর স্বার্থে জামায়াতকে একযোগে আন্দোলনে রাখতে রাজি হয়েছেন মঞ্চের নেতারা।

নেতারা বিষয়টি সমাধান করে দ্রুত জামায়াতকে সঙ্গে নিয়ে মাঠে নামতে চান। এর জন্য বিএনপির একজন শীর্ষ নেতাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তবে জামায়াতের সঙ্গে ঐক্য করতে অন্য সমমনা দল ও জোটের কোনো আপত্তি নেই। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

গণতন্ত্র মঞ্চের দায়িত্বশীল একটি সূত্র জানায়, জামায়াত ইস্যুতে বিএনপির পক্ষ থেকে তাদের দুটি প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। যার একটি হচ্ছে জামায়াতে ইসলামী, যুগপৎ আন্দোলনকারী দলগুলো একত্রিত হবে। আরেকটি বিকল্প হল জামায়াতকে একত্রিত করা এবং অন্যরা এক প্লাটফর্ম থেকে আন্দোলনে যোগ দেবে।

শুক্রবার গণতন্ত্র মঞ্চের সভায় এ দুই প্রস্তাব নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। জামায়াতকে নিয়ে এক মঞ্চে আন্দোলনের বিষয়ে একটি দল ছাড়া গণতন্ত্র মঞ্চের বাকি পাঁচ দলই আপত্তি জানায়।

বৈঠকে উপস্থিত একজন শীর্ষ নেতা নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বলেন, জামায়াতকে নিয়ে এক প্লাটফর্ম থেকে আন্দোলন করা সম্ভব বলে মনে করেন না। এমনটা হলে সেই উদ্যোগে মঞ্চ থাকবে না। তাই তিনি যুগপৎকে গুরুত্ব দিচ্ছেন। এছাড়া জামায়াতের সঙ্গে বিএনপি একত্র হলে গণতন্ত্র মঞ্চের ভূমিকা কী হবে? ৩১ ধারার ভিত্তিতে তারা এক বছর ধরে একসাথে রয়েছেন। তারা তাদের স্বতন্ত্রতা বজায় রেখে কর্মসূচিতে থাকতে চায়।

রাজপথের ঐক্যটাই গুরুত্বপূর্ণ। আন্দোলন এমন একটা পর্যায়ে পৌঁছেছে, আরেকটু গতি পেলেই সফলতা আসবে। অর্থাৎ চূড়ান্ত পর্যায়ে যদি এ ধরনের ঐক্য রাজপথে গড়ে ওঠে, সে ঐক্য তো হতেই পারে। কিন্তু এ মুহূর্তে সেই ঐক্যের বাস্তবতা নেই বলে তারা মনে করেন।

যুগপৎ ধারায় যে আন্দোলন করে এসেছেন, তা জনগণের সমর্থন পেয়েছে, তারা গ্রহণ করেছেন। চলমান আন্দোলনে রাজপথ দখলে নেওয়ার মতো জামায়াতের সে ধরনের কোনো তৎপরতা এখনো দেখা যায়নি। তাই জামায়াত ঐক্যে এলেই যে সর্বশক্তি নিয়ে মাঠে নামবে, তা বিশ্বাস করা কঠিন।

অবশ্য সমমনা অন্যান্য দল ও জোটের নেতারা জানান, সময় বেশি নেই। তাই ভোট ও মাঠের শক্তি হিসাবে জামায়াতের সঙ্গে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের এখনই সময়। অতীতে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগও জামায়াতকে নিয়ে আন্দোলন করেছিল। তাহলে জামায়াতকে নিয়ে বিএনপি আন্দোলন করলে দোষ কোথায়?

নির্বাচনের আগমুহূর্তে গণতন্ত্রের মঞ্চের আকস্মিক মনোভাব নিয়ে তারা সন্দেহ প্রকাশ করেন। সমমনা নেতারা জানান, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগেই জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠিত হয়েছে। কিন্তু সেই ফ্রন্ট বিএনপি নেতাদের বিভ্রান্ত করছে।

বিএনপি চেয়ারপারসন দলের সিনিয়র নেতাদেরও বলেছেন, ঐক্যফ্রন্ট গঠন একটি ভুল সিদ্ধান্ত। দেশের এই ক্রান্তিকালে গণতন্ত্রের মঞ্চ সঠিক সিদ্ধান্ত নেবে বলে তারা আশাবাদী। কারণ মানুষ এই আন্দোলনের দিকে তাকিয়ে আছে।

এ বিষয়ে জানতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খানকে একাধিকবার ফোন করেও তাকে পাওয়া যায়নি।

তবে বিএনপির স্থায়ী কমিটির একজন সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, জামায়াতের সঙ্গে আলোচনা চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। উভয় পক্ষই ইতিবাচক, যেটা সামনে প্রতিফলিত হবে। গণতন্ত্রের মঞ্চও তাদের মিত্র। তারাও চায় জনগণের মনোভাব, বাস্তবতা-সবকিছু উপলব্ধি করে একটি জোরালো আন্দোলন। তারা বিশ্বাস করে যে বৃহত্তর মঙ্গলের জন্য সবাই একত্রিত হবে। এর কোনো বিকল্প নেই। যুক্তরাষ্ট্রসহ গণতান্ত্রিক বিশ্ব বাংলাদেশে সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন চায়। কিন্তু বাস্তবে তা হচ্ছে না, একতরফা নির্বাচন আয়োজন করা হচ্ছে। তাই গণতান্ত্রিক বিশ্বও তাদের সঙ্গে আছে।

জানা যায়, শনিবার জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী পরিষদের বৈঠকে প্রহসন ও বিভক্তি আখ্যা দিয়ে নির্বাচন বর্জন করে ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ আন্দোলন গড়ে তোলার প্রস্তাব গৃহীত হয়েছে। সেজন্য তারা সর্বশক্তি দিয়ে মাঠে থাকবে।

জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নায়েব ডক্টর সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের যুগান্তরকে বলেন, দুই দলের ঘনিষ্ঠ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এ নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। হয়ে গেলেই বাস্তবে দেখা যাবে।

About bisso Jit

Check Also

উপদেষ্টা পরিষদেই বৈষম্য

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা পরিষদে আঞ্চলিক বৈষম্যের অভিযোগ উঠেছে। ২৪ সদস্যের এই পরিষদে ১৩ জনই চট্টগ্রাম …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *