বিএনপি সভানেত্রী বেগম খালেদা জিয়া রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তিনি বেশ কয়েক সপ্তাহ ধরে এই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। লিভার সিরোসিস সহ বার্ধক্যজনিত নানাবিধ শারীরিক অসুস্থতায় ভূগছেন তিনি। বর্তমানে বেগম জিয়ার শারীরিক অবস্থা অনেকটাই স্থিতিশীল পর্যায়ে রয়েছে। গতকাল অর্থাৎ রবিবার তার রক্তক্ষরণ হয়নি, এমনটাই জানা হাসপাতাল সূত্রে। তার শারীরিক অন্যান্য প্যারামিটারও অনেকটাই স্বাভাবিক ছিল বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকেরা।
হাসপাতালে সূত্রে জানা গেছে, অনেকটা নিরিবিলি সময় কাটাচ্ছেন বেগম জিয়া। তিনি তার চিকিৎসক এবং নার্সের সাথে তেমন কোন কথা বলেন না। তাঁর যদি কিছু প্রয়োজন হয়, তাহলে তিনি আস্তে করে সেটা জানিয়ে দেন। শারীরিক দুর্বলতার জন্য তার ঘুমের কোন নির্দিষ্টতা নির্দিষ্ট কোন সময় নেই। এছাড়া বেশিরভাগ সময়ই তিনি চোখ বুজে থাকেন। চিকিৎসকরা তার শারীরিক বিষয়ে তার নিকট জিজ্ঞাসা করলে তিনি শুধুমাত্র প্রয়োজনীয় কথাই বলেন।
সিসিইউতে মেডিকেল বোর্ডের চিকিৎসক, পরিবারের সদস্য এবং শুধু বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের প্রবেশাধিকার রয়েছে। সিসিইউর সামনে তার নিরাপত্তার জন্য পোশাকধারী তিনজন পু’লিশকে দেখা গেছে। তারা নিয়মমাফিক ডিউটি করেন।
সূত্র জানায়, সকাল ৬টার মধ্যেই সাধারণত খালেদা জিয়ার ঘুম ভাঙে। পরিচ্ছন্ন হয়ে ওষুধ সেবন করেন। এর আধা ঘণ্টা পর হালকা নাশতা করেন। নাশতায় মূলত তার বাসা থেকে সরবরাহ করা তরল খাবার দেওয়া হয়। এরপর তিনি আবারও একটু ঘুমিয়ে নেন।
গতকাল বিএনপি চেয়ারপারসনের চিকিৎসকদের মধ্যে হাসপাতালে ছিলেন কেবল ডা. এজেডএম জাহিদ। শারীরিকভাবে একটু ভালো থাকায় দুপুর ২টায় গোসলের জন্য তাকে তার কেবিনে (নং ৭২০৫) নেওয়া হয়। দুপুর আড়াইটায় তার ছেলের স্ত্রী শর্মিলা রহমান সিঁথি হাসপাতালে এসে খালেদা জিয়ার কেবিনে যান। বিকেল ৪টায় তাকে আবারও সিসিইউতে নিয়ে আসা হয়। এর মধ্যে তাকে দুপুরের খাবার ও ওষুধ খাওয়ানো হয়। খাবারের মধ্যে বাসা থেকে আনা তরল খাবার ছিল।
এভারকেয়ার হাসপাতালের নিয়মানুযায়ী, বাইরের খাবারের বিষয়ে বিধিনিষেধের বিষয়টি চিকিৎসকদের ব্যবস্থাপত্রে খালেদা জিয়ার ক্ষেত্রে কিছুটা শিথিল করা হয়েছে। সে অনুযায়ী মাঝেমধ্যে বাসা থেকে তার জন্য তরল খাবার নিয়ে আসা হয়। তবে হাসপাতাল থেকে দেওয়া মেডিকেল ডায়েট ফুডচার্ট অনুযায়ী তাকে খাবার দিতে হয়। বিকেল সোয়া ৫টার দিকে শর্মিলা রহমান সিঁথি হাসপাতাল থেকে চলে যান। সাড়ে ৫টায় ডা. এজেডএম জাহিদও হাসপাতাল ত্যাগ করেন।
বেগম জিয়া যে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন তার কেবিনের পাশে আরো একটি কেবিন বুকিং করা রয়েছে। কেবিনের সামনে তার ব্যক্তিগত নিরাপত্তা বাহি’নীর কয়েকজন সদস্য সর্বক্ষণ দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন। খালেদা জিয়ার যিনি গাড়িচালক তিনি নিয়ম করে হাসপাতালে যাওয়া-আসা করে থাকেন। খালেদা জিয়ার মেডিকেল বোর্ডের একজন ডাক্তার জানিয়েছেন খালেদা জিয়ার বর্তমান শারীরিক অবস্থা অনেকটাই স্থিতিশীল রয়েছে। আজ অর্থাৎ সোমবার তার একটি পরীক্ষা করার কথা রয়েছে, এই পরীক্ষার রিপোর্টের উপর ভিত্তি করে কি ধরনের চিকিৎসা দেয়া হবে সেই সিদ্ধান্ত পরবর্তীতে নেয়া হবে বলেও জানা গেছে।