অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আলোচিত ব্যক্তিগত সহকারী (পিয়ন) মো. জাহাঙ্গীর আলম এবং তার স্ত্রী কামরুন নাহারের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) মামলা করেছে।
মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) দুদকের প্রধান কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এ তথ্য নিশ্চিত করেন সংস্থাটির মহাপরিচালক আক্তার হোসেন।
মামলার এজাহার অনুযায়ী, জাহাঙ্গীর আলম স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ মিলিয়ে ১৮ কোটি ২৯ লাখ ১০ হাজার ৮৮২ টাকার জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করেন। এছাড়া, তার নামে ও বিভিন্ন ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের নামে ৮টি ব্যাংকের ২৩টি হিসাবে ৬২৬ কোটি ৬৫ লাখ ১৮ হাজার ১০৭ টাকা জমা হওয়ার তথ্য পাওয়া গেছে। এই টাকার একটি বড় অংশ তিনি উত্তোলন বা স্থানান্তর করেছেন, যা সন্দেহজনক এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে বিবেচিত।
দুদকের অনুসন্ধানে উঠে এসেছে, এসব অর্থ অবৈধ উপায়ে অর্জিত এবং বিভিন্ন মাধ্যমে তার ব্যাংক হিসাবে জমা হয়েছে। জাহাঙ্গীর আলম তার মালিকানাধীন “স্কাই রি এরেঞ্জ” নামক প্রতিষ্ঠানের মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের একটি হিসাবে ২০২৪ সালের প্রথম ৫ মাসে মাত্র ৮৩ দিনে ১৭৮ কোটি টাকা জমা করেন এবং একই সময়ে তা উত্তোলন/স্থানান্তর করেন।
উল্লেখ্য, চলতি বছরের ১৪ জুলাই তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এক সংবাদ সম্মেলনে পিএসসির এক গাড়িচালক এবং তার বাসার এক পিয়নের বিপুল সম্পদের মালিক হওয়ার বিষয়ে মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, “আমার বাসার একজন পিয়ন ছিল, সেও নাকি ৪০০ কোটি টাকার মালিক! হেলিকপ্টার ছাড়া চলে না। পরে তাকে ধরা হয়েছে।”
শেখ হাসিনার ওই মন্তব্যের পর থেকেই জাহাঙ্গীর আলম আলোচনায় আসেন। অনুসন্ধানের এক পর্যায়ে তার ব্যাংক হিসাব জব্দ করা হয়। তবে জানা যায়, তিনি পরিবারসহ যুক্তরাষ্ট্রে পালিয়ে গেছেন।
এদিকে, আরেকটি মামলায় জাহাঙ্গীর আলমের স্ত্রী কামরুন নাহারের বিরুদ্ধে ৬ কোটি ৮০ লাখ ৪৮ হাজার ৬৪২ টাকার জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জন এবং ভোগদখলের অভিযোগ আনা হয়েছে। এ অভিযোগে দুদক আইন, ২০০৪ এর ২৭(১) ধারা এবং দণ্ডবিধির ১০৯ ধারায় তাকে অভিযুক্ত করা হয়েছে।
এই ঘটনা আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে দুর্নীতির ভয়াবহ চিত্র সামনে নিয়ে আসায় দেশজুড়ে তীব্র সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে।