Friday , September 20 2024
Breaking News
Home / Countrywide / জানা গেল যেসব করনে ৪০ পরিবার মিশে একমাস ধরে দখল করে আছে স্কুল প্রতিষ্ঠানটি

জানা গেল যেসব করনে ৪০ পরিবার মিশে একমাস ধরে দখল করে আছে স্কুল প্রতিষ্ঠানটি

দুই গ্রামের সাথে বিবাদ। জোর যার মূল্যুক তার প্রবাদের সত্যতা প্রকাশ পায় এই দুই গ্রামের বিবাদ শরু হওয়ার পর। ঘটনা সূত্রে জানা যায় যে গ্রমের লোকেরা দূর্বল তারা এখন গ্রম ছেড়ে পালিয়ে আশ্রয় নিয়েছে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। বগুড়ার জেলার শিবগঞ্জ উপজেলার খেউনি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আশ্রয় নিয়েছে প্রায় ৪০টি পরিবার। কারণ তাদের বাড়িটি এমনভাবে ভাংচুর করা হয়েছে যে তা একেবারেই বসবাসের অযোগ্য। কিছু পরিবারে এখন পানীয় জলের ব্যবস্থা নেই, বিদ্যুৎ সংযোগ নেই। কোনো আসবাবপত্র নেই, এমনকি চুলাও ভেঙে ফেলা হয়েছে।

ঘরের খাবার, অলংকার, গরু-ছাগল সব লুট হয়ে গেছে। ফলে স্কুলে পড়লেও স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান তাদের খাবার সরবরাহ করছেন। এক মাস আট দিন পেরিয়ে যাওয়ার পর পরিবারের পুরুষ সদস্যরা বাড়ি ফিরে দেখতে পান সবকিছু ভাঙাচোরা। এদিকে তাদের দেশে ফিরিয়ে আনতে প্রশাসন ও পুলিশ কাজ শুরু করেছে। কিন্তু ভয় কাটেনি।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ১৮ এপ্রিল বিদ্যালয় সংলগ্ন এলাকার এক-চতুর্থাংশ জায়গায় টিনের চালা দিয়ে দোকান নির্মাণকে কেন্দ্র করে গ্রামের দুই পক্ষের মধ্যে সং/ ঘর্ষ হয়। আহত হয়েছেন ১০ জন। তাদের বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। সেখানে বজলুর রশিদ বুলু মিয়া (৪৮) মারা যান।

স্কুলে আশ্রয় নেওয়া রেখা বানু (৬০) জানান, সংঘর্ষের পর উভয় পক্ষের লোকজন পালিয়ে যায়। কিন্তু বুলুর মৃ/ ত্যুর পর ওই দলের লোকজন গ্রামে ফিরে আসে। এ সময় পুলিশ উপস্থিত থাকায় তাৎক্ষণিক কিছু ঘটেনি। কিন্তু রাত ১১টার দিকে তারা কয়েকটি দলে হামলা শুরু করে। কোনো বাড়িতে পুরুষ ছিল না। এ সময় তারা বাড়িতে ভাঙচুরের চেয়ে লুটপাট চালায়। এটা তখন আমাদের নজরে আসে। যা সব কিছুকে তার গতিতে নিয়ে যায়। সোনাদানা, চাল, দরজা-জানালা, জলের কল, কিচুই বাদ যায়নি।

ওই গ্রামের বাসিন্দা শামীম প্রামাণিক বলেন, থালা-গলা পর্যন্ত লুটপাট করে নিয়ে যায়। পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী কেয়া মনি স্কুলে দিন কাটায় এবং রাত কাটায় স্কুলের ঘরে। তৃতীয় শ্রেণির সুমাইয়া আক্তার ও ফাতেমা খাতুন এবং প্রথম শ্রেণির সাহারা খাতুনও স্কুলে পড়ে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, দোকান নির্মাণের ঘটনা সেদিনের হলেও শত্রুতা দীর্ঘদিনের। গ্রামবাসীর আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে স্থানীয় ইউপি সদস্য বাদশা মিয়ার স্বামী ইন্দজ ফকির ও মহিলা ইউপি সদস্য ইলিয়াস বেগমের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এখানে রাজার পক্ষের লোকজন বিরোধপূর্ণ এলাকায় একটি দোকান ভাংচুর করে এবং পরস্পর সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। হত্যার পর ইন্দাজ ফকিরের সমর্থকরা গ্রাম ছেড়ে পালিয়ে যায়। তার মামলার সমর্থকরা এই বিবৃতিটির প্রকৃত প্রতিলিপি অনলাইনে উপলব্ধ করার জন্য কাজ করছেন। ওই দুই মামলায় ৬০ জন আসামি রয়েছে। গ্রামবাসীরা জানান, মামলার ভয়ে গ্রাম ছেড়ে যাওয়ার সময় তাদের ওপর হামলা ও লুটপাট করা হয়।

মহিলা ইউপি সদস্য ইলিয়াস বেগম জানান, রাজার সঙ্গে তার স্বামীর কোনো বিরোধ নেই। তবে তিনি ও তার স্বামীর বিরুদ্ধে গ্রামবাসীর পাশে থাকার অভিযোগ উঠেছে। গত বৃহস্পতিবার উচ্চ আদালত থেকে জামিন নিয়ে তারা এলাকায় ফিরে আসেন। তারপর দেখলেন বাড়িতে মাথা-পাছা বলে কিছু নেই। কাঁথা-বালিশ নিয়ে আগুনে পুড়িয়ে ফেলা হয়েছে। বাধ্য হয়ে তারা স্কুলে আশ্রয় নেয়।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শফিকুল ইসলাম বলেন, এখানে যারা আশ্রয় নিয়েছে তাদের অধিকাংশই শিক্ষার্থীদের অভিভাবক। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আপাতত বিদ্যালয়ে থাকার অনুরোধ করায় তাদের দুটি কক্ষ দেওয়া হয়েছে। চেয়ারম্যান আমাকে আশ্বস্ত করেছেন যে তারা দ্রুত দেশে ফিরবেন। ইউপি চেয়ারম্যান এসকেন্দার আলী বলেন, পরিবারদের বাড়িতে যাওয়ার পরিবেশ না থাকায় ইউএনওর সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছিল। আপাতত আমি এটা করেছি, তিনি বলেন।

এ ব্যাপারে ইউপি সদস্য বাদশা মিয়ার সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। বোনের পরিচয় দিতে গিয়ে সালমা খাতুন বলেন, ‘মেম্বার শহরে গেছে। তার মোবাইল নম্বর চাওয়া হলে তিনি তা দিতে অস্বীকার করেন। শিমগঞ্জের ইউএনও উম্মে কুলসুম সম্পা বলেন, ‘এলাকায় আর কোনো সংঘর্ষ বন্ধ করতে পুলিশকে বলা হয়েছে। শিবগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দীপক কুমার দাস বলেন, ইতিমধ্যে তাদের সঙ্গে বৈঠক হয়েছে এবং উভয় পক্ষই প্রতিশ্রুতি দিয়েছে কোনো সমস্যা হবে না।

এই ঘটনার পর থেকে কেউ গ্রামে যেতে সাহস পাচ্ছে না। তবে সরকারের পুরো সহজগিতা পেলে তারা বাসায় ফিরতে চায়। তবে তাদেরর স্কুল দখল করায় প্রতিষ্ঠানটি কেমন ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে কিনা সে বিষয়ে কোন তথ্য পাওয়া যায়নি।

About Nasimul Islam

Check Also

আ.লীগ ও তৃণমূল থেকে বিএনপিতে যোগদানের হিড়িক

নারায়ণগঞ্জে আওয়ামী লীগ ও তৃণমূল বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে বিএনপিতে যোগদানের প্রবণতা বৃদ্ধি পেয়েছে। ফ্যাসিবাদী আওয়ামী …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *