আবু তাহের মোহাম্মদ শামসুজ্জামান। ঢাকাই চলচ্চিত্রে একজন শক্তিশালী অভিনেতা। তবে চলচ্চিত্রে তিনি এটিএম শামসুজ্জামান নামেই পরিচিত। আজ (১০ সেপ্টেম্বর) কিংবদন্তি অভিনেতার ৮২তম জন্মদিন।
এটিএম শামসুজ্জামান ছিলেন একাধারে গল্পকার, সংলাপ লেখক, চিত্রনাট্যকার, চলচ্চিত্র পরিচালক ও অভিনেতা। ক্যারিয়ারে অসংখ্য সিনেমায় অভিনয় করে দর্শকদের হৃদয় ছুঁয়েছেন তিনি। তবে জীবনের শেষ সময়টা খুব কষ্টে কাটিয়েছেন এটিএম শামসুজ্জামান। তারও খুব আফসোস হলো।
অসুস্থতার কারণে দীর্ঘদিন অভিনয় থেকে দূরে ছিলেন তিনি। তাই এ নিয়ে বেশ বিরক্ত ছিলেন অভিনেতা। ৫০ বছরেরও বেশি সময় ধরে নিয়মিত অভিনয় করেছেন এই কিংবদন্তি তারকা।
এটিএম শামসুজ্জামান একজন কর্মঠ মানুষ। এফডিসি, লাইট, ক্যামেরা আর সহকর্মীদের সঙ্গ ছাড়া তার ভালো লাগতো না। এসব নিয়ে তার আক্ষেপও ছিল। কিন্তু আক্ষেপ থাকলেও শারীরিক অসুস্থতার কারণে প্রিয় জায়গায় ফেরেননি এই অভিনেতা।
মৃত্যুর আগে একটি গণমাধ্যমের সাক্ষাৎকারে আক্ষেপ করে এ টি এম শামসুজ্জামান বলেছিলেন, সারা জীবন শুধু মৃত্যুর আগে গণমাধ্যমকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এটিএম শামসুজ্জামান আক্ষেপ করে বলেছিলেন, তিনি সারাজীবন শুধু টাকার জন্য অভিনয় করেছেন। এতে সৃজনশীলতা ছিল না, সবসময় মাথায় থাকত খাদ্য-বস্ত্রের চিন্তা।যদি আরেক জনম পেতাম, তাহলে আবার অভিনয় জগতে আসতাম।। সে জীবনে পেটের চিন্তা করতাম না। নিজেকে উজাড় করে মনের মতো চরিত্রে অভিনয় করতাম।
এ সময় তিনি আরও বলেন, সারাজীবন ভাঁড়ামি করে গেলাম। সংসারে অভাব-অনটন ছিল। অভিনয় করেই পেটের কাজ করতে হয়েছে। এ কারণে ইচ্ছে মতো চরিত্রে অভিনয় করতে পারিনি। আমি যদি বড় লোকের ছেলে হতাম, আমি আমার খুশি মতো কাজ করতে পারতাম। কিন্তু সেটা করতে পারিনি। বরাবরই সাহিত্যের গল্প অবলম্বনে চলচ্চিত্রে অভিনয় করতে চেয়েছিলেন। আমি একটি বা দুটি করেছি, কিন্তু অনেক চলচ্চিত্র পাইনি। দর্শকরা শুধু আমার ভাঁড়ামি দেখেছেন।
তিনি চলচ্চিত্রের পাশাপাশি অসংখ্য নাটকেও অভিনয় করেছেন। পাঁচবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন। শিল্পকলায় অবদানের জন্য ২০১৫ সালে একুশে পদক পান। তবে এটিএম শামসুজ্জামান শতাধিক চলচ্চিত্র লিখেছেন এবং তিন শতাধিক চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন। তবে দীর্ঘ অভিনয় জীবনে তিনি যে চরিত্রে অভিনয় করতে চেয়েছিলেন তা করতে না পেরে দুঃখ প্রকাশ করেছেন।