স্থগিতাদেশ থাকলেও দুই ছাত্রীর সাথে খারাপ কাজের মামলার আসামিকে অসৎ উদ্দেশ্যে জামিন দেওয়ার পর আলোচনায় আসেন বিচারক মোসা. কামরুন্নাহার। এ বিষয়ে প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে আপিল বিভাগের পাঁচজন বিচারপতির সমন্বয়ে গঠিত আদালতের পূর্ণাঙ্গ রায়ে এমন ধরনের কথা বলা হয়। রায়ে আরও বলা হয়েছে যে, তিনি এখন থেকে তিনি আর বাংলাদেশের কোনো ফৌজদারি আদালতে ফৌজদারি মা’মলা পরিচালনা ক্ষমতা রাখা হলো না। সংবিধান অনুসারেই তার ক্ষমতা কেড়ে নেওয়া হয়েছে।
রায়ে আপিল বিভাগ বলেন, বিচারক মোসা. কামরুন্নাহারকে যখন বলা হয় কেন জামিন দিলেন, তখন তিনি বলেন যে তিনি জানতেন না। কিন্তু নথি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, এর আগে ওই ট্রাইব্যুনাল একাধিকবার আসলাম শিকদারের জামিন নামঞ্জুর করেছেন। অসৎ উদ্দেশ্যে আসামিকে জামিন দেন তিনি এমন বিষয় উঠে আসে তার বক্তব্য উপস্থাপনায়।
আপিল আদালত গত সোমবার ‘রাষ্ট্র বনাম আসলাম সিকদার’ মাম’লায় স্থগিতাদেশ থাকার পরও জামিন দেওয়ার ব্যাখ্যা শুনতে বিচারক মোসা. কামরুন্নাহারকে তলব করেছিলেন। এরপর প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বে পাঁচ বিচারপতির আপিল বেঞ্চে তাঁর বিষয়ে রুদ্ধদ্বার শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। এরপর আদালত মোসা. কামরুন্নাহারের ফৌজদারি বিচারিক ক্ষমতা ‘সিজ করা হয়েছে’ মর্মে আদেশ দেন। গতকাল বুধবার পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়েছে।
মোসা. কামরুন্নাহার গত ১১ নভেম্বর ঢাকার নারী ও শি’/শু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৭-এ থাকার সময় বনানীর রেইনট্রি হোটেলে দুই শিক্ষার্থীর সাথে খারাপ কাজের মামলার রায়ে বিতর্কিত পর্যবেক্ষণের পর ব্যাপকভাবে সমালোচিত হন। এরই প্রেক্ষাপটে ১৪ নভেম্বর সকালে সুপ্রিম কোর্ট তাঁকে বিচারকাজ থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দেন।
কামরুন্নাহারকে তার বর্তমান কর্মস্থল থেকে প্রত্যাহার করে মন্ত্রণালয়ে সংযুক্ত করতেও আইন মন্ত্রণালয়কে বলা হয়েছে। এদিকে, স্থগিতাদেশ থাকা সত্ত্বেও আরেকটি মামলায় খারাপ কাজের আ’সা/মিকে জামিন দেওয়ায় গত বছর কামরুন্নাহারকে তলব করেছিল আপিল বিভাগ। এরপর গত ১৫ নভেম্বর কামরুন্নাহার তার ব্যাখ্যা দিতে আপিল বিভাগে হাজির হন। সোমবার তিনি এ বিষয়ে শুনানির জন্য আদালতে হাজির হন।