প্রেমের টানে খুলনায় আসা অস্ট্রেলিয়ান চিত্রশিল্পী ম্যালকম কিথ আর্নল্ড (৭৬) মারা গেছেন। বুধবার সকাল ৬টার দিকে সোনাডাঙ্গা এলাকায় ভাড়া বাসায় তিনি মারা যান। তিনি দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ ছিলেন।
তদন্তে সোনাডাঙ্গা মডেল থানার ওসি মো. আমিরুল ইসলাম বলেন, খবর পেয়ে আমরা ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে জানিয়েছি। একই সঙ্গে নথিপত্র দূতাবাসে পাঠানো হয়েছে। মরদেহ দাফনের অনুমতি দিয়েছে দূতাবাস। উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নির্দেশে তার পরিবারকে জানানো হয়েছে। তারা স্থানীয় কাউন্সিলরের কাগজপত্র নিয়ে বাসুপাড়া কবরস্থানে লাশ দাফন করবেন।
ম্যালকমের স্ত্রী হালিমা বেগম জানান, মঙ্গলবার রাতের খাবার ও ওষুধ খেয়ে ঘুমিয়ে পড়েন তিনি। ভোরবেলা আমি তার ঘন ঘন শ্বাসকষ্ট শুনে দৌড়ে গেলাম। তারপর মুখে স্প্রে দিতে বললেন। কিছুক্ষণ পর তিনি মারা যান। এরপর তাকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। স্ট্রোকে তার মৃত্যু হয়েছে বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন। তিনি হৃদরোগ, ডায়াবেটিসসহ নানা শারীরিক জটিলতায় ভুগছিলেন।
হালিমা বেগম কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, তিনি খুব ভালো মনের মানুষ ছিলেন। সে আমার জন্য ইসলাম গ্রহণ করেছে। অস্ট্রেলিয়ায় তার পরিবার আছে। আমি অনেকবার বলেছি আপনি অস্ট্রেলিয়া ফিরে যান। কিন্তু ম্যালকম বলতেন তুমি ছাড়া কেউ আমার যত্ন নিতে পারবে না। এই দেশেই থাকব। মরে গেলেও কবর দিও এ দেশের মাটিতে।
হালিমা বেগম আরও বলেন, অস্ট্রেলিয়ায় তার পরিবারের সঙ্গে কথা হয়েছে। তাকে বাংলাদেশে দাফন করলে কোনো সমস্যা নেই বলে জানান তারা। বিষয়টি থানায় জানিয়েছি। তারা অস্ট্রেলিয়ান দূতাবাসকে বিষয়টি জানায়। সেখান থেকে অনুমতি নিয়েছি। কিছু কাগজপত্র প্রয়োজন সেগুলো সংগ্রহ করে ভাসুপাড়া কবরস্থানে দাফন করা হবে। তবে সময় এখনো ঠিক হয়নি।
হালিমা বেগম জানান, প্রথম স্বামীর সঙ্গে বিচ্ছেদের পর তিনি মংলায় ওয়ার্ল্ড ভিশনে চাকরি করতেন। ম্যালকম ২০০১ সালে মংলায় এলে তার সাথে দেখা হয়। হালিমার বাড়ি বাগেরহাট জেলার রামপাল উপজেলার পেরিখালী গ্রামে। পরে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়লে ম্যালকমকে চিঠি পাঠান। ২০০৩ সালে ম্যালকম বাংলাদেশে এসে তার চিকিৎসা করান। এরপর ম্যালকম তাকে বিয়ের প্রস্তাব দিলে তিনি ম্যালকমকে ইসলাম ধর্ম গ্রহণের কথা বলেন।। ম্যালকম ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন এবং 8 ফেব্রুয়ারি, ২০০৪ তারিখে তাকে বিয়ে করেন।