আবারও সংসার ভেঙেছেন ঢালিউড অভিনেত্রী পরীমনি। বুধবার দিনভর ছিল বিচ্ছেদ নিয়ে নানা আলোচনা। অবশেষে রাতে ‘ডিভোর্স’ নিয়ে মুখ খুললেন পরীমনি। ফেসবুকে অভিনেতা শরিফুল রাজকে ডিভোর্সের খবর নিশ্চিত করেছেন তিনি।
রাজের সঙ্গে বিয়ের আগে তার আরও কিছু সম্পর্ক ছিল বলে জানা যায়। পরীমনি ১৪ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ সালে প্রথম সম্পর্কের কথা ঘোষণা করেন। তিনি একজন সাংবাদিকের প্রেমে পড়েছিলেন। দীর্ঘদিন প্রেমের পর বাগদান হয় এই জুটির। স্বামীর সঙ্গে বিশ্বের বিভিন্ন দেশেও ঘুরেছেন তিনি। কিন্তু সেই পরিবার স্থায়ী হয়নি। বিয়ের এক বছর পর এই দম্পতি আলাদা হয়ে যায়।
২০২০ সালের ৯ মার্চ পরী আবার বিয়ে করেন। ওই রাতে মাত্র তিন টাকা যৌতুক নিয়ে পরিচালক হৃদি হকের অফিসে তার সহকারী কামরুজ্জামান রনিকে বিয়ে করেন এই অভিনেত্রী। কিন্তু সেই বিয়ে বেশিদিন টেকেনি।
অনেক ধুমধাম করে বিয়ের খবর ঘোষণা করা হলেও নীরবে বিচ্ছেদের পথে হেঁটেছেন এই দম্পতি। কেন রনির সঙ্গে পরীর সংসার হয়নি তা নিয়ে মিডিয়ার সামনে মুখ খোলেননি তিনি।
২০২১ সালের ১৭ অক্টোবর ঢাকাই সিনেমার অভিনেতা শরিফুল রাজকে গোপনে বিয়ে করেন পরীমনি। মাত্র সাতদিন পরিচয়ের পর বিয়ে করেন তারা। তিনি সেই খবরটি ১০ জানুয়ারী, ২০২২-এ প্রকাশ্যে এনেছিলেন। অভিনেত্রীর দুই বছর পর এই সংসারও ভেঙে যায়। স্বামীর বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ তুলে শরিফুল রাজকে ডিভোর্স লেটার পাঠিয়েছেন পরীমনি।
এই তিন বিয়ে এবং পরীর সংসার ভাঙার খবর ব্যাপক আলোচিত হলেও তাকে ঘিরে আরও কিছু বিয়ের খবর বিভিন্ন সময়ে প্রকাশ পেয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়।
২০১৬ সালের শুরুতে হঠাৎ করেই ফেসবুকে ভাইরাল হয়ে যায় পরীর বিয়ের খবর। এমনকি বিয়ের ছবি, বিয়ের সার্টিফিকেট এবং ডিভোর্স পেপারও সে সময় প্রকাশিত হয়েছিল। ছবিগুলো একটি ফেসবুক আইডি থেকে শেয়ার করা হয়েছে এবং নিজেকে পরীমনি ইসমাইল নামের একজনের স্ত্রী বলে দাবি করা হয়েছে।
কয়েকদিন পর সৌরভ কবির নামে আরেক ব্যক্তির সঙ্গে তার বিয়ের সার্টিফিকেট এবং কিছু অন্তরঙ্গ ছবি ফেসবুকে পাওয়া যায়। সিনেমায় আত্মপ্রকাশের ঠিক দুই বছর আগে, অর্থাৎ তিনি যখন নাটকে অভিনয় করছিলেন, তখন সেতু নামের এক ফটোগ্রাফারের সঙ্গে বিয়ের খবরও শোনা গিয়েছিল। দুই বছর তাদের বিয়ে হয়েছিল।
যদিও এসব বিয়ে নিয়ে কখনো মুখ খোলেননি পরী। একাধিকবার তার বক্তব্য নেওয়ার চেষ্টা করা হলেও তিনি বরাবরই এ প্রসঙ্গ এড়িয়ে গেছেন।
সম্প্রতি নিজের সংসার ভাঙার কথা খুলেছেন তিনি। বুধবার রাতে পুরনো একটি ফেসবুক স্ট্যাটাসের ছবি পোস্ট করে পরীমনি লিখেছেন, এই স্ট্যাটাসটি নিশ্চয়ই অনেকের মনে আছে। সেই সময়ও রাজ পাঁচ দিন পর বাড়ি ফেরার পর আমাকে ফেসবুক থেকে ডিলিট করে দেয়। তারপরও তিনি বারবার এসব ঘটনার পুনরাবৃত্তি করেন।
পরীমনি লেখেন- সরি বলা, না খেয়ে থাকা, পা ধরে মাফ করে দাও আর হবে হবে না, এমনকি সুইসাইড এর মতো হুমকিতেও ব্ল্যাকমেইলের শিকার হতে হয়েছে আমাকে। একই রকম ভুলের ক্ষমা কতবার করা যায় আমি জানি না।
অভিনেত্রী আরও লেখেন, আমি শুধু সব ভুলে সুন্দর স্বাভাবিক একটা পারিবারিক সম্পর্ক চেয়েছিলাম। কিন্তু সে কখনোই এই সম্পর্কটাকে ধারণ করেনি। সবার সামনে আমার বউ, আমার বাচ্চা করে বেড়ানো ভয়ংকর একজন মানুষ। যে কিনা এই সম্পর্কটাকে শুধু নিজের স্বার্থে ব্যবহার করে গেল প্রতিনিয়ত।
তিনি লেখেন, এমন ভয়ংকর মানুষকে অনেক সুযোগ দিয়েছি। সেও একটা সুযোগ পেত, কারণ আমি তার কাছ থেকে আইনত ডিভোর্স পাইনি। এসবের কারণে আমি অসম্মানিত হয়েছি আপনাদের কাছেও। আমাকে ক্ষমা করবেন।
বিচ্ছেদ নিয়ে পরী লিখেছেন, আমি আনুষ্ঠানিকভাবে তাকে ডিভোর্স দিয়েছি। খুবই স্বাভাবিক মাধ্যমে। এটাও তার কাছে আমার এক ধরনের ক্ষমা। অন্যথায়, সে আমার সাথে যে অন্যায় করেছে তার জন্য তাকে জেল হওয়ার কথা।
স্বামীকে ডিভোর্সের পর সন্তানের সব দায়িত্ব নিজেই পালন করতে চান পরী। সে কথা উল্লেখ করে তিনি লিখেছেন, ছেলের ভরণ-পোষণ থেকে শুরু করে ভবিষ্যৎ লেখাপড়ার যাবতীয় খরচ আমি নিজেই বহন করব। আমি এ পর্যন্ত যেমন করেছি। বাচ্চার সমস্ত অভিভাবকের দায়িত্ব এখন তার মায়ের। এ বিষয়ে যা কিছু বলার আমার আইনজীবীরা বলবেন। ধন্যবাদ।
রোববার আইনজীবীর কাছে যান পরীমনি। সেখানকার আইনজীবীর পরামর্শ অনুযায়ী ডিভোর্স লেটার তৈরি করে সোমবার রাজের কাছে পাঠিয়ে দেন তিনি।