নদি পরাপারের জন্য অনেকে ফেরির ব্যবহার করেছে থাকে। এর কারন ফেরিতে ভারি ভারি যানবাহন নদির একপ্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে নিয়ে যাওয়া যায়। তবে এটি শতভাগ নিরাপদ তা নয়। অনেক সময়ই গন মাধ্যমে ফেরি দূর্ঘটনার কথা শোনা যায়। সম্প্রতি এমনি একটি ঘটনা ঘটেছে শরীয়তপুরের জাজিরা প্রান্তে।
গভীর রাতে দুটি ফেরির মুখোমুখি সংঘর্ষে পিকআপ ভ্যানের চালক নিহত ও অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন।
শনিবার বিকেল ৩টার দিকে শিমুলিয়া-মাঝিরকান্দি ফেরি রুটের শরীয়তপুর টার্নিংয়ের কাছে এ ঘটনা ঘটে বলে লৌহজং থানার এএসআই সাখাওয়াত হোসেন জানান।
বিআইডব্লিউটিসি কর্মকর্তারা জানান, সুফিয়া কামাল ফেরিটি ৩০টি গাড়ি নিয়ে শরীয়তপুরের মাঝিরকান্দি (সাত্তার মাদবর মঙ্গলমাঝি ঘাট) থেকে মুন্সীগঞ্জের শিমুলিয়া ঘাটে যাচ্ছিল। অপরদিকে, শিমুলিয়া থেকে মাঝিরকান্দি পর্যন্ত বেগম রোকেয়া ফেরিতে ৩৪টি যানবাহন ছিল।
ফেরিতে দুই শতাধিক যাত্রী ছিল। শরীয়তপুরে পদ্মা নদীর মোড়ের কাছে দুটি নৌকার মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়েছে। পরে ফেরি দুটি ক্ষতিগ্রস্ত অবস্থায় নিজ নিজ গন্তব্যে পৌঁছায়। ফেরি দুটির চালকরা জানান, যখন দুর্ঘটনা হয়, তিনি ঘুমাচ্ছিলেন, ফেরি চালাচ্ছিলেন সহকারী মাস্টার। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে বলে জানান এএসআই সাখাওয়াত।
নিহত পিকআপ চালকের নাম মো. খোকন (৪০), বাড়ি ঝালকাঠি জেলার কাঁথালিয়ায়। তার গাড়ি ছিল ফেরি সুফিয়া কামাল। তার মরদেহ শিমুলিয়ার তিন নম্বর ফেরি টার্মিনালে রাখা হয়েছে। পদ্মায় পড়ে আরও এক চালক নিখোঁজ রয়েছেন। তীব্র গতিতে মুখোমুখি সংঘর্ষে দুটি ফেরির আহত অংশ দুমড়ে-মুচড়ে যায়। এতে রোকেয়া ফেরিতে থাকা অন্তত পাঁচটি প্রাইভেটকার ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
ফেরি বেগম রোকেয়া মাস্টার মিন্টু রঞ্জন দাস বলেন, তার ফেরি ভাটিতে আসছে, আর সুফিয়া কামাল উজানে যাচ্ছে। দুর্ঘটনার সময় তিনি ঘুমিয়ে ছিলেন, ফেরি চালাচ্ছিলেন সহকারী মাস্টার। সুফিয়া কামালকে অপেক্ষা করতে বলা হলেও তারা অপেক্ষা করেননি। পানি কম থাকায় ফেরি নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না।
ফেরি সুফিয়া কামালের মাস্টার মোহাম্মদ হাসানও বলছেন, তিনি দায়িত্বরত দ্বিতীয় মাস্টারের সঙ্গে ঘুমিয়ে ছিলেন।
“শরীয়তপুর টার্নিংয়ে প্রবল স্রোতের কারণে ফেরি নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না। এতে ফেরির চালকদের মধ্যে একজন মারা যান। ”
এএসআই সাখাওয়াত বলেন, দুর্ঘটনার পর ফেরি দুটি নিজ নিজ গন্তব্যে নোঙর করতে সক্ষম হয়। এতে আরো অনেক যাত্রীর জীবন রক্ষা পায়।
অনেকে দাবি করছেন নাবিকের গাফেলাতির জন্য এমন ঘটনা ঘটেছে। তবে তদন্ত সাপেক্ষে সেটা প্রমানিত হবে বলে জানিয়েছেন এএসআই সাখাওয়াত। তিনি আরো বলেন এটি যদি গাফেলাতি প্রমানিত হয় তাহলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থ নেওয়া হবে।