Thursday , September 19 2024
Breaking News
Home / Countrywide / জানা গেল চলন্ত গাড়ি থেকে পদ্মাসেতুর উপর দিয়ে নদীতে ঝাঁপ দেওয়ার কারণ

জানা গেল চলন্ত গাড়ি থেকে পদ্মাসেতুর উপর দিয়ে নদীতে ঝাঁপ দেওয়ার কারণ

বাঙালির অন্তরের মানুষ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। আজ বাংলাদেশের অস্তিত্ব আছে শুধু তারই অবদানের জন্য। অনেক বাঙালির হৃদয়ে বঙ্গবন্ধুর জন্য রয়েছে অঘাত ভালোবাসা।  তেমনি একজন বাঙালি বঙ্গবন্ধুর প্রতি ভালবাসা নিয়ে ১৫ ই আগস্ট শোক দিবসে ছুটে যান বঙ্গবন্ধুর মাজারে।  সেখান থেকে তার সাথে ঘটে যাওয়া অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার জেরে চলন্ত প্রাইভেটকারের দরজা খুলে মুন্সীগঞ্জের মাওয়া প্রান্তে পদ্মা সেতু থেকে ঝাঁপ দিয়েছেন নুরুজ্জামান (৩৮) নামে এক পোশাক শ্রমিক।

পুলিশ ও নুরুজ্জামানের সঙ্গে থাকা ব্যক্তির দেওয়া তথ্যমতে, গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় জাতীয় শোক দিবসে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিতে ঝাঁপিয়ে পড়েন তিনি।

সোমবার দুপুর আড়াইটার দিকে এ ঘটনা ঘটে। রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত পদ্মা নদীতে খোঁজাখুঁজি করেও তাকে পাওয়া যায়নি।

মাওয়া নৌ পুলিশ ফাঁড়ির এসআই মো. আরিফ হোসেন দ্য ডেইলি স্টারকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

নুরুজ্জামানের বাড়ি নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও থানার কাঁচপুর এলাকায়। তিনি ঢাকার ডেমরা এলাকায় একটি পোশাক কোম্পানিতে আয়রনম্যান হিসেবে কাজ করতেন।

এসআই ডেইলি স্টারকে বলেন, নুরুজ্জামান রোববার রাতে টুঙ্গিপাড়া যাওয়ার জন্য একটি প্রাইভেটকার ভাড়া করেন। আজ ভোরে ওমর ফারুক নামে এক ব্যক্তির সঙ্গে টুঙ্গিপাড়ায় যান তিনি। কিন্তু ফুল দেওয়ার অনুমতিপত্র না থাকায় সেখান থেকে তাদের ফিরিয়ে দেওয়া হয়। এরপর পদ্মা সেতু দিয়ে ফেরার পথে চলন্ত গাড়ির দরজা খুলে লাফ দেন।

তিনি আরও বলেন, ‘ঝাঁপ দেওয়ার আগে তিনি মোবাইল ফোনে একটি ভিডিও করেছিলেন। সেখানে তিনি বলছিলেন, শেখ মুজিবুর রহমান সবার। কেন আমরা ফুল দিতে পারি না? খবর পেয়ে নৌ-পুলিশ পদ্মানদীতে তল্লাশি চালিয়েও তাকে পায়নি।

গাড়িতে নুরুজ্জামানের পাশে থাকা ওমর ফারুক দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘সকাল ৭টায় নারায়ণগঞ্জের কাঁচপুর এলাকা থেকে গোপালগঞ্জের উদ্দেশে রওনা হয়ে সকাল সাড়ে ১০টায় টুঙ্গিপাড়ায় পৌঁছান। সেখানে ২ ঘণ্টা থাকার পর ফুল দেওয়ার চেষ্টা করি। কিন্তু কোনো কার্ড না থাকায় আমরা ফুল পাঠাতে পারিনি। তার পর আমি বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম।

‘ব্রিজে থাকার সময় গাড়িটি কম গতিতে চলছিল। কারণ সেতু কর্তৃপক্ষ সেখানে ডিভাইডার বসিয়েছিল। এরপর নুরুজ্জামান গাড়ি থামাতে বললেও আমরা তার কথা শুনিনি। তারপর কিছু না বলে দরজা খুলে ব্রিজের ওপর ঝাঁপ দেন। এর পরে, আমরা যদি ৯৯৯ কল করি, নৌ পুলিশ এসে আমাদের সাথে কথা বলে।

ওমর ফারুক আরও বলেন, ‘ঝাঁপ দেওয়ার আগে নুরুজ্জামান ব্রিজে থাকা অবস্থায় মোবাইলে কথা বলছিলেন। শেখ মুজিবকে ভালোবাসেন, ফুল দিতে পারেননি তাই কষ্ট পাচ্ছেন- এসব কথা বলছিলেন তিনি।

তিনি বলেন, ‘আমার সঙ্গে নুরুজ্জামানের সম্পর্ক প্রায় চার বছরের। তিনি কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত নন। তবে তিনি শেখ মুজিবুর রহমানকে খুব ভালোবাসতেন। তিনি কাঁচপুর এলাকায় ২ মেয়ে ও স্ত্রীকে নিয়ে ভাড়া বাসায় থাকতেন।

ওমর ফারুক বলেন, তারা ১৩ হাজার টাকায় প্রাইভেটকার ভাড়া করেন। এরপর টুঙ্গিপাড়া যাওয়ার পথে ঢাকার শাহবাগ থেকে ফুলের তোড়া কেনেন।

বঙ্গবন্ধুর মাজারে ফুল দিতে না পাওয়ার কষ্টে পদ্মা সেতুর উপর দিয়ে লাফ দেয়ার ঘটনা ঘটেছে বলে ধারণা করছেন অনেকে।   তবে ১০০ ভাগ নিশ্চিত হয়ে বলা যায় না যে বঙ্গবন্ধুর মাজারে ফুল দিতে না পারার কষ্টে সে আত্মহনন করার জন্য ঝাঁপ দিয়েছে।  নুরুজ্জামানকে এখনো খুজে পাওয়া যায়নি। তকে পদ্মা নদিতে অনুসন্ধান করছের নৈপুলিশের ডুবুরি দল।

About Nasimul Islam

Check Also

আ.লীগ ও তৃণমূল থেকে বিএনপিতে যোগদানের হিড়িক

নারায়ণগঞ্জে আওয়ামী লীগ ও তৃণমূল বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে বিএনপিতে যোগদানের প্রবণতা বৃদ্ধি পেয়েছে। ফ্যাসিবাদী আওয়ামী …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *