গত বুধবার পুলিশের দুজন সদস্য কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে আত্মহননের ঘটনা ঘটিয়েছেন, যেটা নিয়ে দেশজুড়ে আলোচনা চলছে। ঠিক কী কারণে তারা এই ধরনের ঘটনা ঘটিয়েছেন, সে বিষয়ে তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। তবে ৪০ বছর বয়সী খুলনা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার (এডিসি) লাবণী আক্তারের বিষয়ে জানা যায়, তার স্বামীর সাথে বনিবনা হচ্ছিল না। এমনটাই জানিয়েছে তার পরিবার। কিন্তু লাবনীর বডিগার্ড হিসেবে কর্মরত ছিলেন কনস্টেবল মাহমুদুল হাসান, তিনি ঠিক কি কারণে এমন ঘটনা ঘটিয়েছেন সে বিষয়ে জানা যায়নি।
পুলিশের ইউনিফর্ম পরা কনস্টেবল মাহমুদুল হাসান (২৩) শটগান দিয়ে গু’/লি করে আত্মহননের ঘটনা ঘটিয়েছেন। দুটি ঘটনার মধ্যে যোগসূত্র নিয়ে বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন উঠেছে।
তবে প্রয়াত মাহমুদুল হাসানের পরিবার ও স্বজনরা জানান, তাদের মধ্যে ভাই বোনের সম্পর্ক ছিল। কনস্টেবল মাহমুদুলকে ছোট ভাইয়ের মতো ভালোবাসতেন পুলিশ কর্মকর্তা লাবণী।
প্রয়াত কনস্টেবল মাহমুদুল হাসানের বোন সুমাইরা খাতুন জানান, পুলিশ কর্মকর্তা লাবণীর সঙ্গে আমার ভাইয়ের খুব ভালো সম্পর্ক ছিল। তাদের মধ্যে ভাইবোনের মতো সম্পর্ক ছিল। পুলিশ অফিসার লাবণী আমার ভাইকে ছোট ভাইয়ের মতো ভালোবাসতেন। আমার ভাই খুব ভালো মানুষ ছিলেন। কখনো কারো সাথে খারাপ ব্যবহার করেনি। লাবনীর সাথে আমার ভাইয়ের কোন খারাপ সম্পর্ক ছিল না।
প্রয়াত মাহমুদুল হাসান কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার খলিসাকুন্ডি ইউনিয়নের পিপুলবাড়িয়া গ্রামের এজাজুল হকের ছেলে। কুষ্টিয়া শহরের দাদাপুর রোড়ের নতুন কমলাপুর এলাকায় করিম বক্স লেনে শুভেচ্ছা ভিলা নামের একটি দোতলা বাড়ি রয়েছে তাদের। প্রায় তিন বছর আগে পুলিশে যোগ দেন মাহমুদুল।
বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে মাগুরা পুলিশ লাইন্সের পুলিশ ব্যারাকের চারতলা ভবনের ছাদে আ”ত্মহন”ন করেন কনস্টেবল মাহমুদুল হাসান। দুটি ঘটনার মধ্যে যোগসূত্র রয়েছে বলে অনেকে মনে করেন। কারণ প্রয়াত পুলিশ কনস্টেবল মাহমুদুল হাসান দেড় মাস আগে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা শাখার এডিসি খন্দকার লাবনীর দেহরক্ষী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। মাত্র দেড় মাস আগে মাহমুদুলকে মাগুরায় বদলি করা হয়।
মাহমুদুলের স্বজনরা জানান, ঈদের ছুটিতে ঈদের আগের দিন বাড়িতে এসে ঈদের পরদিন মাগুরায় যান তিনি। পুলিশ কর্মকর্তার দেহরক্ষী ছিলেন মাহমুদুল। এডিসি লাবণী কনস্টেবল মাহমুদুলকে খুব পছন্দ করতেন। কেন সে এমন ঘটনা ঘটালেন তা আমরা কেউ বুঝতে পারছি না। মাহমুদুল ছিলেন শান্ত স্বভাবের ছেলে। তার প্রয়ান আমরা কোনোভাবেই মেনে নিতে পারি না। মাহমুদুলের বাবা এজাজুল হকও পুলিশ কনস্টেবল হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তার পোস্টিং ছিল চুয়াডাঙ্গায়।
উল্লেখ্য, এই দুজন পুলিশ সদস্যের ঘটনার বিষয়ে কোনো যোগসুত্র থাকতে পারে, এমনটাই মনে করছেন অনেকে। পুলিশ কনস্টেবল মাহমুদুলের পরিবারের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে যে, তাদের মধ্যে ভাইবোনের মত পবিত্র সম্পর্ক ছিল সবসময়। অন্যদিকে লাবনী আক্তার এর প্রয়াণ সাংসারিক ঝামেলার জন্য হয়ে থাকতে পারে বলে প্রাথমিকভাবে মনে করছেন তদন্তকারীরা।