Sunday , November 24 2024
Breaking News
Home / Countrywide / জেদ্দায় স্বর্ণসহ বাংলাদেশ বিমানের কেবিন ক্রু ফ্লোরা আটক, বেরিয়ে আসছে গোপন তথ্য

জেদ্দায় স্বর্ণসহ বাংলাদেশ বিমানের কেবিন ক্রু ফ্লোরা আটক, বেরিয়ে আসছে গোপন তথ্য

সৌদি আরবের জেদ্দা বিমানবন্দরে তিন কোটি টাকার স্বর্ণ ও বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রাসহ বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একজন নারী কেবিন ক্রু স্থানীয় পুলিশের হাতে সরাসরি ধরা পরেন। ঘটনা প্রকাশ্যে আশার সাথে সাথে গোটা বিমান বন্দরে আলোড়নের সৃষ্টি হয়েছে। ঘটনাটি প্রকাশ্যে আশার পরে শিডিউল মোতাবেক বিমানটি ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসে, তবে আটক ক্রকে রেখেই পাইলট বিমান নিয়ে রওনা হয়েছেন। আটক ফ্লোরাকে নিয়ে চলছে এই রহস্য উধঘাটনের তৎপরতা। এই বিষকে কেন্দ্র করে কেবিন ক্র ফ্লোরার চাকরি চলেও যেতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন সংশ্লিষ্টরা।

এবার তিন কোটি টাকার সোনা ও বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রাসহ সৌদিতে আটক হলেন বিমানের কেবিন ক্রু। তার নাম ফ্লোরা। ১৩ জুন ফ্লাইটে ওঠার আগ মুহূর্তে তাকে আটক করে সৌদি পুলিশ। এ কারণে বাধ্য হয়ে তাকে ছাড়াই দেশে ফিরে আসে বিমানের ফিরতি ফ্লাইট। এ ঘটনায় ফ্লোরাকে গ্রাউন্ডেট করা হয়েছে। গঠন করা হয়েছে তদন্ত কমিটি। বিমানের একটি সূত্র জানিয়েছে, এ ঘটনায় ফ্লোরা চাকরিচ্যুত হতে পারেন। উল্লে­খ্য, কিছুদিন আগে সোনাসহ আটক হয়েছিলেন আরেক কেবিন ক্রু রুহুল আমিন শুভ। সৌদি পুলিশ সূত্রে জানা যায়, বিমানের ঢাকাগামী ফ্লাইট বিজি ০৩৪০-এর ফ্লাইট পার্সার হিসাবে ডিউটি ছিল ফ্লোরার। রিয়াদ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বিমানে ওঠার আগ মুহূর্তে সৌদি পুলিশ জানতে পারে তার লাগেজে বিপুল পরিমাণ সোনা ও বৈদেশিক মুদ্রা আছে। এরপর পুলিশ লাগেজ তল্লাশি করে প্রায় ৩ কোটি টাকা সমমূল্যের সোনা উদ্ধার করে।

এসব সোনার কাগজপত্র দেখতে চাইলে ফ্লোরা তা দেখাতে পারেননি। এ কারণে তাকে আটক করা হয়। পরে বিমানের ফ্লাইটটি তাকে ছাড়াই ঢাকার উদ্দেশে বিমানবন্দর ত্যাগ করে। সিভিল এভিয়েশন আইন অনুযায়ী, বিমানের এ ধরনের ফ্লাইটে ১০ জন কেবিন ক্রু থাকা বাধ্যতামূলক। কিন্তু ফ্লোরা আটক হওয়ায় পাইলট আইন লঙ্ঘন করে ৯ জন ক্রু নিয়ে ঢাকায় আসেন। এ ঘটনায় বিমানকে মোটা অঙ্কের টাকা জরিমানার শিকার হতে হবে। বিমানের কাস্টমার সেন্টার সূত্রে জানা যায়, সৌদি কারাগার থেকে ফ্লোরাকে ফিরিয়ে আনা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া চলছে। অভিযোগ আছে, বিমানের শিডিউলিং শাখার একটি সিন্ডিকেটের হাত ধরে ফ্লোরা ও শুভ এই রুটে একটি বড় ধরনের সোনা চোরাচালান চক্র গড়ে তুলেছেন। চক্রটি দীর্ঘদিন ধরে সৌদি আরব, দুবাইসহ মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশ থেকে সোনা আনত বিমানের ফ্লাইট ব্যবহার করে। শিডিউলিং শাখায় ওই সিন্ডিকেট মোটা অঙ্কের টাকা মাসোহারা নিয়ে চক্রের সদস্যদের এই রুটে ফ্লাইটের ব্যবস্থা করে দেয়।

প্রতি ফ্লাইটে শিডিউলিং শাখার সিন্ডিকেট ১০ থেকে ২০ হাজার করে টাকা নেয় ক্রুদের কাছ থেকে। সোনা চোরাচালান চক্রের গডফাদাররা বিমানের এসব কেবিন ক্রুকে ক্যারিয়ার হিসাবে ব্যবহার করে প্রতিমাসে কোটি কোটি টাকার সোনা আনছে। ফ্লোরা, শুভ ও তার (শুভ) স্ত্রীর বিরুদ্ধে সোনা আমদানি ও টাকা পাচারসহ অসংখ্য অভিযোগ থাকলেও বিমানের একজন সাবেক প্রভাবশালী পরিচালকের কারণে কর্তৃপক্ষ তা আমলে নিতেন না। এ কারণে ১৩ জুন ফ্লোরা আটক হলেও বিমান কর্তৃপক্ষ পুরো ঘটনাটি গোপন রেখে ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করে। শুধু তাই নয়, হাতেনাতে আটক হওয়ার পরও শুভকে ফের চাকরিতে ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়া শুরু করেছে সিন্ডিকেট। এ কারণে তারা কাউকে পরোয়া করে না। জানা যায়, চক্রের এক সদস্যের বিরুদ্ধে চাকরিচ্যুতিসহ বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে বিমান। তার নাম শেহজাদ। সম্প্রতি সোনাসহ হাতেনাতে ধরা পড়েছিলেন তিনি।

উল্লেখ্য, সৌদি আরবের জেদ্দা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে একটি ফ্লাইটে ওঠার কিছুক্ষণ আগে গোপন তথ্যের ভিত্ত্বিতে ফ্লোরার লাগেজ চেক করা হয়। ফ্লোরার লাগেজ চেক করতে গিয়ে ফ্লোরার লাগেজে প্রায় ৩কোটি মুল্যের সোনাসহ বিপুল পরিমানের বৈদেশিক মুদ্রা খুজে পায়। খুজে পাওয়া এসকল পন্যের কোন এভিডেন্স না দেখাতে পারায় তাকে বিমান বন্দরের পুলিশ আটক করে তাদের হেফাজতে নিয়ে রাখে এই সকল বিষয়ের তদন্ত্যে লক্ষ্যে। তবে তাকে আটকের পর বেরিয়ে আসছে বিভিন্ন ধরনের বিমান উড্ডয়নের চাঞ্চল্যকর তথ্য।

 

 

 

 

About Syful Islam

Check Also

সংস্কারের নামে ভয়াবহ দুর্নীতি-লুটপাট

সংস্কার ও উন্নয়নের নামে কয়েকগুণ বেশি ব্যয় দেখিয়ে হরিলুটের ব্যবস্থা করা হয়েছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *