ইভিএম মেশিনে ভোট বিষয়ে নির্বাচন কমিশন দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে আলোচনা করেছে। কিন্তু অধিকাংশ রাজনৈতিক দল ইভিএমে ভোট গ্রহন হলে অস্বচ্ছ এবং ভোট কারচুপি হবার সম্ভাবনা রয়েছে, এমনটাই দাবি করেছে। তাই ইভিএমের মাধ্যমে ভোট বাতিলের পক্ষে বেশিরভাগ দল মতামত দিয়েছে। তবে আ.লীগের পক্ষ থেকে ইভিএম মেশিন এর মাধ্যমে ভোটগ্রহণের পক্ষে মত দিয়েছে। তবে শেষ পর্যন্ত নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে কত আসনে ইভিএম মেশিন এর মাধ্যমে ভোট করা হবে। এ বিষয়ে এবার বক্তব্য দিলেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
ফখরুল ইসলাম আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ১৫০টি আসনে ইভিএম মেশিনের মাধ্যমে ভোট করার বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করে বলেছেন, ভোট হবে সম্পূর্ণ ব্যালটেই। আজ বুধবার (২৪ আগস্ট) বিকেলে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে যৌথসভা শেষে সংবাদ সম্মেলনে ইসির সিদ্ধান্তের বিষয়ে তিনি এ প্রতিক্রিয়া জানান।
তিনি বলেন, সরকারের ইচ্ছা পূরণের জন্যই এই ইসি। সরকার গঠনের লক্ষ্য চূড়ান্ত করতে ইভিএম ভোট হবে কিনা এই নিয়ে পুনরায় কথা বলেছে ইসি। আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই যে এটা জনগণ কখনোই মেনে নেবে না, আমরাও না। সম্পূর্ণ প্রত্যাখ্যান করছি।
মির্জা ফখরুল বলেন, বিএনপির দাবি খুবই স্পষ্ট। নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া এদেশে কোনো নির্বাচন হবে না। দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনে জনগণের দাবির প্রতিফলন ঘটবে না। জনগণের রায় প্রতিফলিত হবে না। তাই আমরা যেমন স্পষ্ট করেছি, এই সরকারকে তাদের ব্যর্থতার জন্য অবিলম্বে পদত্যাগ করতে হবে। তাদের পদত্যাগ করে একটি নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে। সংসদ ভেঙে দিতে হবে এবং ইসির নেতৃত্বে একটি নতুন সংসদ নির্বাচন করতে হবে যা সব নবগঠিত দলের কাছে গ্রহণযোগ্য। সেই নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের সরকার গঠন করতে হবে। পূর্ণাঙ্গ ব্যালটের মাধ্যমে ভোট গ্রহণ করা হবে।
বর্তমান ইসির বিষয়ে তিনি বলেন, আপনারা ভালো করেই জানেন, তাদের প্রতি আমাদের কোনো আগ্রহ নেই। তারা কী বলছে, কী বলছে না, কী করছে- -এটা আমাদের কাছে খুব আগ্রহ সৃষ্টি করে না। কারণ আমরা বিশ্বাস করি, সরকার পরিবর্তন না হলে নির্বাচনকালীন সুষ্ঠু নির্বাচন কোনো ইসির পক্ষে সম্ভব নয়। আজ প্রমাণিত হলো এই ইসিও সরকারের একটি প্রতিষ্ঠান। কারণ তারা (আওয়ামী লীগ) ৩০০ আসনে ইভিএম চেয়েছে। এবং তারা সরকারের (নির্বাচন কমিশন) সাথে রফা করেছে এবং এখন তারা ১৫০ প্রস্তাব করেছে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, কিন্তু সব রাজনৈতিক দল এমনকি জাতীয় পার্টি (জাপা) সবাই এসে বলেছে, আমরা ইভিএম চাই না। কারণ ইভিএম জনগণের রায়কে সঠিকভাবে প্রতিফলিত করবে না। তারপরও বর্তমান ইসি এটা বৈধ নয় এটাকে আমরা অবৈধ বলি। কারণ এই কমিশন গঠন সঠিকভাবে হয়নি।
উল্লেখ্য, জাতীয় সংসদ নির্বাচন কবে অনুষ্ঠিত হবে এ বিষয়ে খসড়া ধারণা দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে ২০২৪ সালের প্রথমদিকে বা ২০২৩ সালের শেষ দিকে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে। নির্বাচন কমিশন ইভিএম মেশিনে ভোট গ্রহণ বিষয়টি ডিজিটাল যুগের একটি স্বচ্ছ মাধ্যম হতে পারে এমনটাই বলছে। তবে বিএনপি বলছে ভিন্ন কথা।