বাংলাদেশে সবাই অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন দেখতে চায় বলে মন্তব্য করেছে জাতিসংঘ। এ ছাড়া নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী অর্থনীতিবিদ ও গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা ড. মুহম্মদ ইউনূসকে বিচারিক হয়রানির অভিযোগের বিষয়টিও জাতিসংঘ খতিয়ে দেখবে বলে সংস্থাটি জানিয়েছে।
সোমবার (২৮ আগস্ট) জাতিসংঘের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশের আসন্ন জাতীয় নির্বাচন এবং জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের মুখপাত্র ড. স্টিফেন ডুজারিক ড. মুহম্মদ ইউনূসকে বিচারিক হয়রানির অভিযোগের বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে এসব মন্তব্য করেন।
ব্রিফিংয়ে একজন সাংবাদিক জানতে চাইলেন, জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব বান কি-মুন, সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামাসহ ১৬০ জন বিশ্বনেতা এবং ১০০ নোবেল বিজয়ী বাংলাদেশের ক্ষমতাসীন প্রধানমন্ত্রীর কাছে খোলা চিঠি লিখেছেন। ওই চিঠিতে বাংলাদেশের নিরাপত্তা ও স্বাধীনতা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে তারা বলেন- নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস সম্প্রতি বিচারিক হয়রানির শিকার হয়েছেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক জাতীয় নির্বাচন নিশ্চিত করতে এবং সকল মানবাধিকারকে সম্মান করার জন্য তারা (বাংলাদেশী কর্তৃপক্ষকে) আহ্বান জানিয়েছে। অধ্যাপক মুহম্মদ ইউনূস জাতিসংঘের বিভিন্ন দায়িত্বে নিয়োজিত থাকায় এই সংকটময় পরিস্থিতিতে জাতিসংঘের মহাসচিবের অবস্থান কী?
জবাবে জাতিসংঘ মহাসচিবের মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিক বলেন, আমরা আগেও বলেছি, আমরা দেখতে চাই (বাংলাদেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন) এবং আমি মনে করি সবাই বাংলাদেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন দেখতে চায়। আর আমি প্রফেসর ইউনূসকে হয়রানির বিষয়টি খতিয়ে দেখব। আমি তার বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া মামলা সম্পর্কে অবগত নই।
পরে ওই সাংবাদিক প্রশ্ন করেন, বাংলাদেশ সরকার দেশের বিরোধীদলীয় নেতার বক্তব্য প্রচারে বাধা দিতে দেশের আইনকে ব্যবহার করছে। দেশের আদালত প্রধান বিরোধীদলীয় নেতার সাম্প্রতিক সব ভিডিও বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে মুছে ফেলার নির্দেশ দিয়েছে। এছাড়া বিদেশ থেকে একজন পিএইচডি ছাত্র সরকারের সমালোচনা করায় বাংলাদেশে তার মাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
জবাবে ডুজারিক বলেন, আমি বিশেষ এই ঘটনার বিষয়ে জানি না। তবে আমি আপনাকে আবারও যা বলতে পারি, তা হচ্ছে- আমরা বাংলাদেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন দেখতে চাই।
এর আগে, শান্তিপূর্ণ সমাবেশের অধিকার বিষয়ক জাতিসংঘের বিশেষ দূত ক্লিমেন্ট ভউল মন্তব্য করেছিলেন যে বাংলাদেশে সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য বিরোধীদের সম্মান করা জরুরি। ৩১ জুলাই এক টুইট বার্তায় তিনি বলেন, বিক্ষোভে সহিং”সতা ও গ্রেপ্তারের মাত্রা বাড়ছে, এই পরিস্থিতিতে তিনি সব পক্ষকে সংযম দেখানোর আহ্বান জানান।
এ সময় তিনি আরও বলেন, ‘আমি কর্তৃপক্ষকে তাদের দায়িত্ব মনে করিয়ে দিচ্ছি, তারা শান্তিপূর্ণ সমাবেশের অধিকার নিশ্চিত করবে এবং অতিরিক্ত শক্তি প্রয়োগ থেকে বিরত থাকবে। সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচনের জন্য বিরোধী দলকে সম্মান জানানো জরুরি।