মায়ানমার ও বাংলাদেশের সাথে চলমান পরিস্থিতি নিয়ে সারা দেশের মানুষের মধ্যে কৌতূহল বিরাজ করছে। কখন কি হয় জানার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন অনেক জনসাধারণ। বিশেষ করে বর্ডার এলাকার বাসিন্দারা ভয়ের মধ্য দিয়ে জীবন যাপন করছে। অনেকে গ্রাম ছেড়ে পালিয়েছে বলেও জানা যায়।
এ বিষয় নিয়ে, মিয়ানমার সরকার বলেছে,বাংলাদেশের ভূখণ্ডে মিয়ানমারের মর্টার শেল পড়ার ঘটনাটি ভুলবশত, তারা এ বিষয়ে আরও সতর্কতা অবলম্বন করবে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার যুক্তরাষ্ট্র সফরের কর্মসূচি নিয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে ড. এ কে আব্দুল মোমেন সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সীমান্ত সম্পূর্ণ সিল করা হয়েছে, এমনকি একটি রো-/হিঙ্গাকেও আশ্রয় দেওয়া হবে না।
মঙ্গলবার (২০ সেপ্টেম্বর) হোটেল লোটে নিউইয়র্ক প্যালেসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা-ইউএনএইচসিআর-এর হাইকমিশনার ফিলিপ্পো গ্র্যান্ডি। এ সময় তারা রো-/হিঙ্গা সংকটসহ শরণার্থী সমস্যার বিভিন্ন দিক নিয়ে কথা বলেন। পরে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের প্রসিকিউটর করিম খানও প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেন। পরে সাংবাদিকদের সঙ্গে বৈঠকের বিষয়ে কথা বলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন।
সাম্প্রতিক পরিস্থিতিতে এই দুই গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কী কথা বলেছেন?
এ বিষয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, মিয়ানমারের অভ্যন্তরে আরাকান আর্মির বিরুদ্ধে অভিযান চলছে। দেশটির সরকার বলেছে যে সেখান থেকে কিছু মর্টার শেল ভুলবশত বাংলাদেশের ভূখণ্ডে পড়েছিল।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, বাংলাদেশ সীমান্ত পুরোপুরি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। আর কোনো রো-/হিঙ্গাকে আশ্রয় দেওয়া হবে না।
রোহিঙ্গা হ-/ত্যা একটি আন্তর্জাতিক অপরাধ, বাংলাদেশ ইতোমধ্যে এর বিচার চেয়েছে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন সাংবাদিকদের বলেন, প্রসিকিউটর করিম খান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বলেছেন যে প্রক্রিয়াটি দ্রুত করতে তিনি শীঘ্রই মিয়ানমার সফর করবেন।
বৃহস্পতিবার (২২ সেপ্টেম্বর) জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের সাইড ইভেন্ট হিসেবে রো-/হিঙ্গা সংকট নিয়ে একটি উচ্চপর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। ধারণা করা হচ্ছে, এ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী পুরো পরিস্থিতি সংশ্লিষ্টদের সামনে তুলে ধরবেন।
প্রসঙ্গত, সোমবার (১৯ সেপ্টেম্বর) মিয়ানমার আরাকান আর্মির পাশাপাশি রাখাইন সশস্ত্র সংগঠন আরসাকে বাংলাদেশ সীমান্তের পরিস্থিতির জন্য দায়ী করে বলেছে, এই দুই পক্ষ বাংলাদেশের সঙ্গে বিদ্যমান সম্পর্ক নষ্ট করতে চলমান পরিস্থিতি তৈরি করেছে। ইয়াঙ্গুনে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মঞ্জুরুল করিম খান চৌধুরীর সঙ্গে এক আলোচনায় দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা মিঃ ফিউ উইন তার অবস্থান ব্যাখ্যা করেন। মিয়ানমারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তাদের ফেসবুক পেজে বৈঠকের বিষয়টি নিম্নরূপ তুলে ধরেছে।
চলতি মাসে বাংলাদেশ সীমান্তে কয়েক রাউন্ড মর্টার শেল পড়েছে। মর্টার শেল হামলায় হতাহতের ঘটনাও ঘটেছে।
উল্লেখ্য, মিয়ানমার থেকে আসা গলায় এই পর্যন্ত দুইজন নিহত হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে এবং হতাহত হয়েছে অনেকেই। যার জন্য সীমান্তবর্তী এলাকার অনেক পরিবার জীবন বাঁচাতে নিজের ঘরবাড়ি ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ের উদ্দেশ্যে চলে গেছে বলেও জানিয়েছে এলাকাবাসী। বর্তমানে ওই বর্ডারের এলাকাজুড়ে থমথমে পরিবেশ বিরাজ করছে। যদিও ২৪ ঘন্টা বাংলাদেশের সেনারা পাহারা দিয়ে চলেছে তাদের তবুও যেন ভয় কাটছে না এলাকাবাসীর। এ ঘটনাটির সুষ্ঠু সমাধানের জন্য জাতিসংঘে আলোচনা করা হয়েছে। সরকার মনে করছে মায়ানমার ও বাংলাদেশ সীমান্তের বর্তমানের উত্তেজনামূলক অবস্থা খুব দ্রুতই স্বাভাবিক হয়ে যাবে।