শেষ পর্যন্ত ঘটতে যাচ্ছে জল্পনা কল্পনার অবসান।রাষ্ট্রপতি নির্বাচন যতই ঘনিয়ে আসছে, ততই পদপ্রার্থীর তালিকা সংক্ষিপ্ত হচ্ছে। শুরুতে তালিকায় প্রায় এক ডজনের নাম থাকলেও এখন বারবার কথা হচ্ছে মাত্র দুইজনের নাম। তাদের একজন জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অর্থনৈতিক উপদেষ্টা ড. মশিউর রহমান।
বর্তমান প্রেসিডেন্ট. আবদুল হামিদের মেয়াদ শেষ হচ্ছে আগামী এপ্রিলে। এর আগে, ১৯ ফেব্রুয়ারি দেশের ২২তম রাষ্ট্রপতি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সংবিধান অনুযায়ী, জাতীয় পরিষদের সদস্যদের ভোটে রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন। তবে সংসদে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকায় রাষ্ট্রপতি পদে আওয়ামী লীগ মনোনীত ব্যক্তিই নির্বাচিত হবেন তা নিশ্চিত করে বলা যায়। তাই ক্ষমতাসীন দলের পক্ষ থেকে রাষ্ট্রপতি পদে কে মনোনয়ন পাচ্ছেন তা নিয়ে চলছে আলোচনা।
রাষ্ট্রপতি পদে প্রাথমিকভাবে প্রায় ডজন খানেক নাম প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ছিল। ওই তালিকায় ছিলেন- প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক উপদেষ্টা মসিউর রহমান, চট্টগ্রাম-১ আসনের সংসদ সদস্য মোশাররফ হোসেন, জাতীয় সংসদের স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী, আইনমন্ত্রী আনিসুল হক ও সাবেক প্রধান বিচারপতি খায়রুল হক, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, আওয়ামী লীগ নেতা ড. লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। সাবেক প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান, সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী। পরে সেই তালিকা সংক্ষিপ্ত করে মাত্র পাঁচজনের নাম আলোচনায় আসে। গত কয়েকদিন ধরেই দেশের পরবর্তী রাষ্ট্রপতি পদে মসিউর রহমান ও শিরীন শারমিন চৌধুরীর নামই আলোচনায় আসছে। তাদের যে কোনো একজন রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ পদে বসতে পারেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। যদিও এ বিষয়ে সরাসরি মুখ খোলেননি ক্ষমতাসীন দলের কোনো নেতা।
গত কয়েকদিন ধরে নতুন সভাপতি হিসেবে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর নাম ব্যাপকভাবে আলোচিত হচ্ছে। বিশেষ করে জাতীয় সংসদের সর্বস্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে এমন আলোচনা শোনা গেছে। তাদের অনেকেই মনে করছেন, শিরীন শারমিনের সভাপতিত্ব নিশ্চিত। এ ছাড়া তিনি বঙ্গভবনে বসতে যাচ্ছেন বলেও মনে করছেন আওয়ামী লীগের অনেক নেতাকর্মী।
অপরদিকে প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক উপদেষ্টা ড. সভাপতি পদে মসিউর রহমানের নামও বহুল আলোচিত। তিনি দীর্ঘদিন ধরে মন্ত্রীর পদমর্যাদায় প্রধানমন্ত্রীর অর্থ উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। এর আগে তিনি ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকারের সময় অর্থ সচিব ছিলেন। স্বাধীনতার পর মসিউর রহমান বঙ্গবন্ধুর ব্যক্তিগত কর্মকর্তা হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন।
আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের একাধিক নেতা জানিয়েছেন, দলের সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও আলোচনায় থাকা নামগুলো বিবেচনা করছেন। এ নিয়ে কাজ করছেন তিনি। নির্বাচনকে সামনে রেখে এই রাষ্ট্রপতি নির্বাচন আওয়ামী লীগের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। এসব বিষয় মাথায় রেখে সবচেয়ে সম্মানিত ও যোগ্য ব্যক্তিকে রাষ্ট্রপতি করা হবে।
এর আগে সর্বশেষ তফসিল ঘোষণা হয়েছিল ২০১৮ সালে। সে সময়ে রাষ্ট্রপতি হিসেবে নাম ঘোষণা করা হয় আব্দুল হামিদের। আর সেই থেকেই তিনি পালন করে আসছিলেন দেশের রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব। তার দুই বারের মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার কারনে এখন তাই নতুন করে আবারো ঘোষণা করা হবে দেশের নতুন রাষ্ট্রপতির।