Monday , December 23 2024
Breaking News
Home / Countrywide / জমি রেজিস্ট্রেশন নিয়ে পাওয়া গেল বড় ধরনের সুসংবাদ

জমি রেজিস্ট্রেশন নিয়ে পাওয়া গেল বড় ধরনের সুসংবাদ

ভূমি নিবন্ধন(রেজিস্ট্রেশন) কর কমানো হয়েছে। ঢাকা, চট্টগ্রাম, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন এলাকার অনাবাদী জমিকে মৌজা অনুযায়ী পাঁচটি শ্রেণীতে ভাগ করা হয়েছে। এগুলো হলো- রিয়েল এস্টেট কোম্পানির প্রতিষ্ঠিত এলাকায় সাধারণ বাণিজ্যিক, আবাসিক, বাণিজ্যিক ও আবাসিক প্লট এবং অন্যান্য জমি। এই ৫ ধরনের জমি রেজিস্ট্রেশনে উৎসে ট্যাক্স শ্রেণীবিভাগও করা হয়েছে। এখন থেকে জমি বিক্রির ওপর উৎসে কর আদায় করা হবে। এছাড়া অন্যান্য সিটি করপোরেশন এলাকায় জমি রেজিস্ট্রেশনে আগের হারে (৬ শতাংশ) কর দিতে হবে। মঙ্গলবার এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।

প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক), চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ), গাজীপুর উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষ, গণপূর্ত অধিদপ্তর এবং ক্যান্টনমেন্ট বোর্ডের নিয়ন্ত্রণাধীন বাণিজ্যিক এলাকা (জমি বা প্লট) ‘ক’- ‘ বিভাগ এ রাখা হয়েছে। ‘খ’ শ্রেণিতে রাখা হয়েছে এসব এলাকার (ক শ্রেণিতে উল্লিখিত এলাকা) আবাসিক প্লট ও জমি। শ্রেণি-‘গ এর মধ্যে রয়েছে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, গাজীপুর উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষ, গণপূর্ত বিভাগ এবং ক্যান্টনমেন্ট বোর্ডের নিয়ন্ত্রণাধীন নয়, কিন্তু ডেভেলপার বা রিয়েল এস্টেট কোম্পানির প্রতিষ্ঠিত বাণিজ্যিক এলাকা। শ্রেণি-‘ঘ’তে আছে এসব স্থানের ( গ শ্রেণিভুক্ত) আবাসিক এলাকা। শ্রেণি-‘ঙ’তে ক, খ, গ, ঘ শ্রেণি ব্যতীত অন্য সব এলাকা পড়েছে। ঢাকার গুলশান, বনানী, মতিঝিল ও তেজগাঁও থানার সব মৌজার ‘ক’ শ্রেণির জমির ক্ষেত্রে দলিল মূল্যের ৮ শতাংশ অথবা কাঠাপ্রতি ১৫ লাখ টাকার মধ্যে যেটি বেশি সেই হারে উৎসে কর দিতে হবে। ‘খ’ শ্রেণির জন্য ৮ শতাংশ বা ৬ লাখ টাকা, ‘গ’ শ্রেণির জন্য মূল্যের ৮ শতাংশ বা কাঠাপ্রতি ১৫ লাখ টাকা, ‘ঘ’ শ্রেণির জন্য মূল্যের ৮ শতাংশ অথবা কাঠাপ্রতি ৬ লাখ টাকা এবং ‘ঙ’ শ্রেণির জন্য ৮ শতাংশ অথবা কাঠাপ্রতি ৫ লাখ টাকার মধ্যে যেটি বেশি সেই হারে উৎসে আয়কর দিতে হবে।

বর্তমানে ঢাকার গুলশান, বনানী, মতিঝিল, দিলকুশা, নর্থ সাউথ রোড, মতিঝিল সম্প্রসারিত এলাকা এবং মহাখালী এলাকায় বাণিজ্যিক জমির ওপর উৎসে ৮ শতাংশ বা ২০ লাখ টাকার অধিক যেটি বেশি সেই হারে উৎসে কর ধার্য রয়েছে। আবাসিক জমির ক্ষেত্রে ১0 লাখ টাকা ট্যাক্স দিতে হবে। নতুন বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, বাণিজ্যিক জন্য ১৫ লাখ এবং আবাসিক জন্য ৬ লাখ উৎসে পরিশোধ করতে হবে।

এনবিআর কর্মকর্তারা বলছেন, নতুন ব্যবস্থায় জমির ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়েই লাভবান হবেন। আগে সব ধরনের জমি রেজিস্ট্রেশনে কর হার ছিল একই। এখন কর কমানোর পাশাপাশি জমির শ্রেণীবিভাগ করা হয়েছে। এতে আবাসিক জমি ক্রয়-বিক্রয়ের খরচ কমবে।

ঢাকার ধানমন্ডি, ওয়ারী, তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানা, শাহবাগ. রমনা, পল্টন, বংশাল, নিউমার্কেট ও কলাবাগান থানার অন্তর্গত মৌজার ‘ক’ শ্রেণির জমির ক্ষেত্রে দলিল মূল্যের ৮ শতাংশ অথবা কাঠাপ্রতি ১০ লাখ টাকা, ‘খ’ শ্রেণির জন্য ৮ শতাংশ বা ৪ লাখ টাকা, ‘গ’ শ্রেণির জন্য মূল্যের ৮ শতাংশ অথবা কাঠাপ্রতি ১০ লাখ টাকা, ‘ঘ’ শ্রেণির জন্য মূল্যের ৮ শতাংশ অথবা কাঠাপ্রতি ৪ লাখ টাকা এবং ‘ঙ’ শ্রেণির জন্য ৮ শতাংশ অথবা কাঠাপ্রতি ৩ লাখ টাকার মধ্যে যেটি বেশি সেই হারে উৎসে আয়কর দিতে হবে।

খিলক্ষেত, কাফরুল, মোহাম্মদপুর, সূত্রাপুর, যাত্রাবাড়ী, উত্তরা মডেল থানা, ক্যান্টনমেন্ট থানা, চকবাজার থানা, কোতোয়ালি থানা, লালবাগ থানা, খিলগাঁও, শ্যামপুর, গেন্ডারিয়া থানার সব মৌজার ‘ক’ শ্রেণির জমির ক্ষেত্রে দলিল মূল্যের ৮ শতাংশ অথবা কাঠাপ্রতি ৫ লাখ টাকা, ‘খ’ শ্রেণির জন্য ৮ শতাংশ বা ২ লাখ টাকা, ‘গ’ শ্রেণির জন্য মূল্যের ৮ শতাংশ অথবা কাঠাপ্রতি ৫ লাখ টাকা, ‘ঘ’ শ্রেণির জন্য মূল্যের ৮ শতাংশ অথবা কাঠাপ্রতি ২ লাখ টাকা এবং ‘ঙ’ শ্রেণির জন্য ৮ শতাংশ অথবা কাঠাপ্রতি দেড় লাখ টাকার মধ্যে যেটি বেশি সেই হারে উৎসে আয়কর দিতে হবে।

ঢাকা উত্তর-পশ্চিম বিমানবন্দর, মুগদা, রূপনগর, ভাষানটেক, বাড্ডা থানা, পল্লবী থানা, ভাটারা, শাহজাহানপুর, মিরপুর মডেল থানা, দারুস সালাম, দক্ষিণখান, উত্তরখান, তুরাগ, শাহ আলী, সবুজবাগ, কদমতলী, কামরাঙ্গীরচর, হাজারীবাগ, ডেমরা ও আদাবর থানা, গাজীপুর জেলার জয়দেবপুর ও কালীগঞ্জ থানার সব মৌজা, নারায়ণগঞ্জ জেলার সদর, রূপগঞ্জ ও সোনারগাঁ থানার সব মৌজার ‘ক’ শ্রেণির জমির ক্ষেত্রে দলিল মূল্যের ৮ শতাংশ অথবা কাঠাপ্রতি ৪ লাখ টাকা, ‘খ’ শ্রেণির জন্য ৮ শতাংশ বা দেড় লাখ টাকা, ‘গ’ শ্রেণির জন্য মূল্যের ৮ শতাংশ অথবা কাঠাপ্রতি ৪ লাখ টাকা, ‘ঘ’ শ্রেণির জন্য মূল্যের ৮ শতাংশ অথবা কাঠাপ্রতি দেড় লাখ টাকা এবং ‘ঙ’ শ্রেণির জন্য ৮ শতাংশ অথবা কাঠাপ্রতি এক লাখ টাকার মধ্যে যেটি বেশি সেই হারে উৎসে আয়কর দিতে হবে।

চট্টগ্রাম জেলার খুলশী, পাঁচলাইশ, পাহাড়তলী, হালিশহর ও কোতোয়ালি থানার সব মৌজা, নারায়ণগঞ্জ জেলার ফতুল্লা, সিদ্ধিরগঞ্জ, বন্দর থানার সব মৌজা, গাজীপুর জেলার সদর, বাসন, কোনাবাড়ি, গাছা, টঙ্গী পূর্ব, টঙ্গী পশ্চিম থানার সব মৌজার ‘ক’ শ্রেণির জমির ক্ষেত্রে দলিল মূল্যের ৬ শতাংশ অথবা কাঠাপ্রতি ৩ লাখ টাকা, ‘খ’ শ্রেণির জন্য ৬ শতাংশ বা এক লাখ টাকা, ‘গ’ শ্রেণির জন্য মূল্যের ৬ শতাংশ অথবা কাঠাপ্রতি ৩ লাখ টাকা, ‘ঘ’ শ্রেণির জন্য মূল্যের ৬ শতাংশ অথবা কাঠাপ্রতি এক লাখ টাকা এবং ‘ঙ’ শ্রেণির জন্য ৬ শতাংশ অথবা কাঠাপ্রতি ৮০ হাজার টাকার মধ্যে যেটি বেশি সেই হারে উৎসে আয়কর দিতে হবে।

ঢাকা জেলার দোহার, নবাবগঞ্জ, কেরানীগঞ্জ, সাভার, ধামরাই উপজেলার সব মৌজা, চট্টগ্রামের আকবর শাহ, ইপিজেড, কর্ণফুলী, চকবাজার, চান্দগাঁও, ডবলমুরিং, পতেঙ্গা, পাঁচলাইশ, বন্দর, বাকলিয়া, বায়েজিদ বোস্তামি ও সদরঘাট থানার সব মৌজা এবং নারায়ণগঞ্জ জেলার আড়াইহাজার থানার সব মৌজার ‘ক’ শ্রেণির জমির ক্ষেত্রে দলিল মূল্যের ৬ শতাংশ অথবা কাঠাপ্রতি ২ লাখ টাকা, ‘খ’ শ্রেণির জন্য ৬ শতাংশ বা ৮০ হাজার টাকা, ‘গ’ শ্রেণির জন্য মূল্যের ৬ শতাংশ অথবা কাঠাপ্রতি ২ লাখ টাকা, ‘ঘ’ শ্রেণির জন্য মূল্যের ৬ শতাংশ অথবা কাঠাপ্রতি ৮০ হাজার টাকা এবং ‘ঙ’ শ্রেণির জন্য ৬ শতাংশ অথবা কাঠাপ্রতি ৫০ হাজার টাকার মধ্যে যেটি বেশি সেই হারে উৎসে আয়কর দিতে হবে।

এ ছাড়া ঢাকা দক্ষিণ, ঢাকা উত্তর, চট্টগ্রাম, নারায়ণগঞ্জ ও গাজীপুর সিটি করপোরেশন ব্যতীত অন্য সিটি করপোরেশন এলাকা ও অন্য উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ এবং জেলা সদরে অবস্থিত সব পৌরসভার অন্তর্গত সব মৌজার ক্ষেত্রে দলিল মূল্যের ৬ শতাংশ, জেলা শহরের বাইরের পৌরসভার ক্ষেত্রে ৪ শতাংশ এবং পৌরসভা ব্যতীত অন্য সব মৌজার জন্য ২ শতাংশ উৎসে কর ধার্য করা হয়েছে।

দলিল নিবন্ধন আইন, স্ট্যাম্প আইন, আয়কর আইন, অর্থ আইন এবং রাজস্ব বিধি ও প্রবিধানের আলোকে নিবন্ধিত হয়। সব নথির একই রেজিস্ট্রি ফি নেই। সরকার সমসাময়িক বিবেচনায় সময়ে সময়ে রেজিস্ট্রি ফি নির্ধারণ করে থাকে। ভ্যাট এবং উইথহোল্ডিং ট্যাক্স সর্বদা জমি বিক্রেতা দ্বারা প্রদান করা হবে। আয়কর আইন অনুযায়ী, এই দুই ধরনের করের পরিমাণ নির্ভর করবে বিক্রেতার আয়ের ওপর। এই কর বিক্রেতার নামে সরকারি কোষাগারে জমা দিতে হয়। উইথহোল্ডিং ট্যাক্স এবং ভ্যাট ছাড়া অন্য সব কর জমির ক্রেতাকে দিতে হবে।

About bisso Jit

Check Also

অন্তর্বর্তী সরকারও কি ১/১১ সরকারের পথে হাঁটছেন?

২০০৭ সালের এক অস্থির রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে ড. ফখরুদ্দীন আহমদের নেতৃত্বে সেনাসমর্থিত এক-এগারো সরকার ক্ষমতায় আসে। …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *