ছেলেদের সাথে আরেকটি ছেলের খারাপ কাজ এমন ঘটনা নতুন নয়। এর আগেও বহুবার গণমাধ্যমে এমন ঘটনা প্রকাশিত হয়েছে। এবার একই ঘটনায় পুলিশের কাছে আটক হয়েছেন একজন কাওমী মাদ্রাসার শিক্ষক। যে ঘটনায় সারা এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।
ঘটনা সুত্রে জানা যায়, ক্লাস রুটিন ও পরীক্ষার রুটিন ছাড়াও ভিন্ন রুটিন চালু করেছেন রাঙ্গুনিয়ার একজন কওমি মাদ্রাসা শিক্ষক মোহাম্মদ নাছির উদ্দিন (নাছির হুজুর)। কোন ছাত্রকে কোন রাতে ব/ লাৎকা;র করা হবে তা এই শিক্ষকই রুটিন হিসেবে ঠিক করেছিলেন।
উপজেলার স্বনির্ভর রাঙ্গুনিয়া ইউনিয়নের শাহ আহমদিয়া আজিজুল উলুম মাদ্রাসার এই শিক্ষকের ছোট ছোট শিশুদের প্রতি প্রবল নেশা। এই ইচ্ছা পূরণের জন্য তিনি প্রতিদিন রাতে নতুন শিশুদের ব্যবহার করছেন।
মঙ্গলবার (২০ অক্টোবর) চট্টগ্রাম জেলা পুলিশের রাঙ্গুনিয়া সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) মো. আনোয়ার হোসেন তার ফেসবুকে দেয়া স্ট্যাটাসে এ তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি লিখেছেন, ‘আপনি যদি নাশিরের বিরুদ্ধে অভিযোগগুলি শোনেন তবে আপনি এই বাজে কথাটিকে হাস্যকর মনে করবেন। মাদ্রাসা হোস্টেলের দায়িত্বে থাকার আশঙ্কায় তিনি নিয়মিত অনেক শিশু শিক্ষার্থীকে বিছানায় নিয়ে যান। ঘটনার প্রাথমিক তদন্তে যা বেরিয়ে আসবে তা দেখে যে কেউ চমকে যাবেন।
তিনি মূলত দশ বছরের কম বয়সী ছেলেদের ধ/ র্ষণের জন্য টার্গেট করেন। যদি একটি শিশু তার ডাকে সাড়া না দেয়, তাহলে তাকে বাধ্য করার জন্য তাকে বিনা কারণে মারধর করা হয়। যেহেতু সেখানে বেশিরভাগ শিশুই এতিম/দরিদ্র পরিবারের, শেষ পর্যন্ত হুজুরের প্রস্তাবে হ্যাঁ বলা ছাড়া তার আর কোন উপায় ছিল না। নাসিরের সন্তানের আসক্তি এতটাই বেড়ে যায় যে তার স্ত্রী তাকে তাদের তিন বছরের সন্তানের কাছে রেখে চলে যায়।
নির্যাতনের শিকার শিশুদের প্রতি সহানুভূতিশীল হওয়ার পাশাপাশি নাসির অত্যন্ত শৃঙ্খলাবদ্ধও। তিনি বিশৃঙ্খলা একেবারেই অপছন্দ করেন। তাই তিনি একটি রুটিন তৈরি করেছেন, যখনই একটি শিশু মাস্টারের সেবায় হাজির হবে। গল্পের অ/ ত্যাচারী সিংহের মতো, যে বনের পশুদের সাথে চুক্তি করেছিল যে প্রতিদিন যদি একটি প্রাণী তার কাছে খাবারের জন্য আসে তবে সে আর কোনো অ/ ত্যাচার করবে না। এভাবে শিক্ষকতার আড়ালে তার নির্লিপ্ত বিকৃত যৌনজীবন ভালোই চলছিল। মারধর ও হুমকির ভয়ে শিক্ষার্থীরাও নীরবে কষ্ট পাচ্ছিল।
সোমবার (১৯ অক্টোবর) সন্ধ্যায় ঝামেলা শুরু হয়। অভিভাবকদের কাছ থেকে প্রাথমিক অভিযোগ পাওয়ার পর, বিস্তারিত তদন্তে ধ/ র্ষক নাসিরের গোপন, বিকৃত যৌ/ নজীবনের অবিশ্বাস্য প্রমাণ পাওয়া যায়। এরপর আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দায়ের করে মধ্যরাতে অভিযান চালিয়ে ভন্ড হুজুর মোহাম্মদ নাছির উদ্দিনকে গ্রেফতার করা হয়।
কিন্তু গ্রেফতারের পর তিনি সম্পূর্ণভাবে তার মত পরিবর্তন করেন। তিনি বারবার পুলিশের কাছে দাবি করেছেন যে তিনি জোর করে কাউকে বিছানায় নিয়ে যাননি, তবে শিক্ষার্থীরা স্বেচ্ছায় তাকে সঙ্গ দিতে এসেছে। তবে গরিব ঘরের অসহায় ছেলেদের দিনের পর দিন কী হয়েছে তা বলেননি নরপুশু নাশির।
মঙ্গলবার (২০ অক্টোবর) সকালে আদালতে পাঠানো হলে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়ে নাছির তার বিরুদ্ধে আনা দুর্নীতির অভিযোগ স্বীকার করেন। এছাড়া ধ/ র্ষণের শিকার চার শিশুও আদালতে হাজির হয়ে বর্বরতার বর্ণনা দেন। তাদের উপর
ইনশাআল্লাহ তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হবে। অভিভাবকদের প্রতি অনুরোধ, আপনার সন্তান ছেলে হোক বা মেয়ে, নিরাপত্তার কথা মাথায় রাখুন। শিক্ষক হোক, আত্মীয় হোক বা প্রতিবেশী হোক, অনুগ্রহ করে আপনার সন্তানকে দুর্বলতার শিকার হতে দেবেন না।
মাদরাসা এবং স্কুলের বোডিং এ অনেকে লেখাপড়ার জন্য দীর্ঘদিন অবস্থান করে। তবে সে সকল ছাত্রদের সাথে এরকমের অনৈতিক কাজ কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছে না এলাকাবাসী। বিশেষজ্ঞদের মতে বোডিং এমন ঘটনা বেশি লক্ষ্য করা যায়। তারা এও বলেছেন যদি নিজেরা সতর্ক না হয় তাহলে কোন ভাবে এমন ঘটনা রুখে দাঁড়ানো সম্ভব নয়। এ ব্যাপারে সরকারের সহায়তা চেয়ে তারা বলেন, এমন ঘটনা আর যাতে না হয় সে জন্য কঠোর আইন তৈরি করা হোক এবং এসকল অপরাধীদের সমাজের সামনে এনে দৃষ্টান্ত শাস্তি প্রদান করা হোক ।